রাঙ্গুনিয়ায় বনবিভাগ-গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, ফাঁকা গুলি বর্ষণ, গ্রেফতার ২
রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে বনবিভাগের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বনবিভাগের সদস্যরা দশ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ করে। এতে ছয় গ্রামবাসী ও দুই বনকর্মীসহ অন্তত আটজন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করে পরে আদালতে পাঠিয়েছে।ঘটনাটি ঘটে ৯ ডিসেম্বর সোমবার উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের খুরুশিয়া গ্রামের ভোলা টিলা এলাকায়। অভিযানে দুটি বসতঘর উচ্ছেদ করতে গেলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনার দুদিন পরও এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।আহত গ্রামবাসীরা হলেন,আহমদ নবী (৬৫), তাঁর স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০), ইউছুফ নবীর স্ত্রী কোহিনুর আক্তার (৪০), ইয়াকুব নবী (৫০), তাঁর স্ত্রী আয়েশা (৪২) ও মেয়ে নিশু আক্তার (২৫)।আহত বনকর্মীরা হলেন, শহিদুল ইসলাম (৩৭) ও নয়ন দাশ (৪৪)।কোহিনুর আক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।এ ছাড়া সহকারী বন সংরক্ষক দেলোয়ার হোসেনের গায়ে লাঠির আঘাত লাগে। খুরুশিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানের বুকে ইটের আঘাত লাগে। নারিশ্চা বিট কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম মামুন ও বনকর্মী মোজাম্মেলও আহত হন।পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সহকারী বন সংরক্ষক দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে বনবিভাগ ও পুলিশের প্রায় ৩৫ সদস্যের একটি দল উচ্ছেদ অভিযানে যায়। শুরুতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে উচ্ছেদ কাজ শুরু করলে ভূমিহীন পরিবারগুলো বাধা দেয়। একপর্যায়ে বনবিভাগের সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।স্থানীয়রা জানান, তাঁদের পরিবারগুলো শত বছর ধরে ভোলা টিলায় বসবাস করছে। নদীভাঙনের কারণে পূর্বপুরুষরা এখানে এসে ঘরবসতি গড়ে তোলে। এলাকায় মসজিদ, মন্দির, মাদরাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। তাদের অভিযোগ, দুটি বাড়ি উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত প্রভাব খাটানো হয়েছে।উচ্ছেদ হওয়া ঘর দুটি ২০ সদস্যের পরিবার নিয়ে বসবাস করত। এখন তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।উচ্ছেদে বনবিভাগের কিছু কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা চেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।খুরুশিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, “এই দুই ঘর উচ্ছেদের জন্য এলাকাবাসীরই স্বজনরা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।”অনৈতিক সুবিধার বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, বনবিভাগ তাঁকে উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে জানিয়েছিল। তিনি বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।