বাকি না দেয়ায় দোকানীকে মেরে রক্তাক্ত করলো কিশোর গ্যাং লিডার
জহিরুল ইসলাম টিটু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের বামনীতে বাকি না দেয়ায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমাত আলি (৫৫) নামে এক দোকানীকে মেরে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে তানিম (২০) নামে এক কিশোর গ্যাং লিডারের বিরুদ্ধে। ৮ জুলাই শনিবার বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলাধীন বামনী ইউনিয়নের হেকিম স্কুলের সামনে এঘটনা ঘটে।স্থানীয়রা জানায়, শনিবার বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলাধীন বামনী ইউনিয়নের হেকিম স্কুলের সামনে প্রতিদিনের ন্যায় তানিম (২০) তার কিশোর গ্যাং সদস্য নিশান (১৮) ও রাফিসহ (১৯) কয়েকজনকে নিয়ে আমাত আলি (৫৫) দোকানে চা-সিগারেট খায়। পরে তারা টাকা না দিয়ে চলে যাওয়ার সময় আমাত আলি তাকে বলে আগেও তোমার নিকট অনেক টাকা বকেয়া পড়ে আছে। আমি গরীব মানুষ, তোমাকে এভাবে আর বাকি দিতে পারবো না। এতে তানিম ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানের সকল মালামাল তছনছ করে দেয়। এরপর দৌড়ে বাড়ি গিয়ে ক্রিজ (দেশীয় অস্ত্র) এনে দফায় দফায় এলোপাতাড়ি দোকান কোপাতে থাকে । দোকানী ফিরাতে গেলে কিশোর গ্যাং তার শরীরেও আঘাত করে। ফলে দোকানী দোকানের ভিতর রক্তাক্ত অবস্থায় লুটে পড়ে। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তানিম ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ।স্থানীয়রা আরও জানায়, তানিম বামনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেনের ভাই মরহুম আলমগীর হোসেনের ছেলে। তার এই অপকর্মের সময় চেয়ারম্যানের ছেলে মিরনসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন প্রত্যক্ষদর্শী থাকলেও কেউই প্রতিবাদ করেনি। সকলেই নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল।প্রত্যক্ষদর্শী মো. মফিজ মিয়া জানান, তানিম এতোটাই হিংস্র আচরণ করছিল যে, আমরা ভয়ে সবাই চুপ হয়ে যাই। তার হাতে ছিল দাড়ালো অস্ত্র। তাই, আমরা কেউই মুখ খুলে প্রতিবাদ করার সাহস পাইনি।প্রত্যক্ষদর্শী নজরুল কাজী জানান, উপস্থিত সকলের সাথে আমিও সেখানে ছিলাম। তবে, তার চাচাতো ভাই মিরন (অর্থাৎ তাফাজ্জল চেয়ারম্যানের ছেলে) কোনও কথা না বলায় আমরা সবাই চুপ হয়ে যাই।অপর প্রত্যক্ষদর্শী মহসিন জানায়, আমি শেষ পর্যায়ে এসে সম্পূর্ণ দোকান ওলট-পালট অবস্থায় দেখি। দোকানীকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই।বামনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন জানান, তানিম কিশোর গ্যাং লিডার। সে অত্যান্ত হিংস্র প্রকৃতির এবং মাদকাসক্ত। ইতোপূর্বে কয়েকবার রায়পুর থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি। পরে পুলিশ তাকে কয়েকবার গ্রেফতারও করে। কিন্তু পুলিশ তাকে নিয়মিত মামলায় না দিয়ে সন্দেহজনকভাবে আটক দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে। সে জামিনে বেড় হয়ে পূণরায় এলাকায় এসে আবার অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। তার মূল মদদদাতা তার নানা সিএনজি (রাব্বি পরিবহনের) ব্যবসায়ী বেলায়েত হোসেন। তার প্রশ্রয়েই তানিম এসব অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।বিষয়টি নিয়ে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া জানান, ঘটনার পর পরই সেখানে পুলিশ প্রেরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তখন থেকেই অভিযুক্ত তানিমকে ধরার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।