সরিষাবাড়ীতে টিসিবির ট্রাকে দীর্ঘ লাইন, পণ্য না পাওয়ায় ক্ষোভ
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি: জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে স্বল্পমূল্যের পণ্য কিনতে টিসিবির ট্রাকের পেছনে নিম্ন আয়ের মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। পণ্যের তুলনায় ভোক্তার সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেককে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। প্রতিটি ট্রাকে ৫০০ জনের জন্য প্যাকেজ থাকলেও অধিকাংশ স্থানেই হাজারের বেশি মানুষ উপস্থিত হন।উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরিষাবাড়ীতে ১২ হাজার ৪০৫ জন টিসিবি কার্ডধারী উপকারভোগী রয়েছেন। পাশাপাশি ১৮টি ডিলারের মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০০টি করে প্যাকেজ বিক্রি করা হয়। সব মিলিয়ে ২১ হাজার ৪০৫ জন মানুষ টিসিবি পণ্য পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে সরবরাহ চাহিদার তুলনায় বহুগুণ কম।উপজেলার জগন্নাথগঞ্জ ঘাট এলাকায় দেখা যায়, টিসিবির ট্রাক আসার সঙ্গে সঙ্গেই শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন, আর কয়েক মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে সব পণ্য।৭০ বছরের জমিরন বেওয়া চোখ ভেজা কণ্ঠে বলেন, ‘অনেক কষ্টে লাইনে দাঁড়াইলাম। ট্রাকের সামনে গিয়াও মাল দিলো না। হাত-পা ধইরা বললাম, তাও দিলো না। গরিবের আর দেখবার কেউ নাই।’আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কাজ বাদ দিয়ে এতক্ষণ লাইনে দাঁড়াইয়া থাকলাম, কিন্তু মাল পাইলাম না। হুড়োহুড়ি আর ভিড়ে বয়স্ক বা দুর্বল মানুষের তো ট্রাক পর্যন্ত যেতে কষ্ট হয়। ট্রাকের কাছে পৌঁছাইলে ততক্ষণে বলে মাল নাই।’স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘ট্রাকে ৫০০ জনের পণ্য থাকার কথা থাকলেও অনেক সময় ২৫০–৩০০ প্যাকেজ আনা হয়। ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই বিতরণ শেষ বলে ঘোষণা দেয়। বাকি পণ্য বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে সন্দেহ।’টিসিবি ডিলার রেদওয়ান আহমেদ সুমন বলেন, ‘সরবরাহ খুবই কম। অল্প পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে আমাদেরকেই জনরোষের মুখে পড়তে হচ্ছে। চাহিদা বেশি হওয়ায় ট্রাক দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই পণ্য শেষ হয়ে যায়। বরাদ্দ বাড়ালে আরও বেশি মানুষ উপকৃত হবে।’উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোহছেন উদ্দিন বলেন, ‘টিসিবি কার্ডধারীদের পাশাপাশি যাতে সাধারণ মানুষও স্বল্পমূল্যে পণ্য পান, সে লক্ষ্যে ১৮ ডিলারের মাধ্যমে প্রতি ট্রাকে ৫০০টি করে প্যাকেজ বিতরণ করা হচ্ছে।’