• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ২৭শে আশ্বিন ১৪৩১ সকাল ১০:২৫:০৯ (12-Oct-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ২৭শে আশ্বিন ১৪৩১ সকাল ১০:২৫:০৯ (12-Oct-2024)
  • - ৩৩° সে:

খুলনায় চলছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি, প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত ভাস্কররা

বাবুল আকতার, খুলনা ব্যুরো: আর কিছুদিন পরই সনাতন ধর্মবালন্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই উৎসবকে সামনে রেখে খুলনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমার কারিগররা। তাদের অভিজ্ঞ হাতের নিপুণতায় কাদামাটি দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে মা দুর্গাকে। এবার খুলনা মহানগর ও ৯টি উপজেলায় ৯৯১টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে গতবারের চেয়ে এবার ৫৪টি কম মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দেশের আইন-শৃংলার পরিস্থিতির এই প্রেক্ষাপটের কারণে পুজার কার্যক্রম সীমিত করেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। এদিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে উৎসব মুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনে খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।জেলা প্রশাসক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, খুলনা জেলার ৯৯১টি পূজামণ্ডপের মধ্যে মহানগরে ১০১টি এবং ৯টি উপজেলায় ৮৯০ মণ্ডপে এবার দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে মহানগরের খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা, লবনচরা, হরিণটানা, খালিশপুর, দৌলতপুর, খানজাহান আলী ও আড়ংঘাটা থানা এলাকায় ১০১টি। উপজেলা এলাকায় বটিয়াঘাটায় ১১৩টি, ডুমুরিয়ায় ২১৪টি তেরখাদায় ১০৭টি, পাইকগাছায় ১৫৫টি পূজাণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হবে। এছাড়া দাকোপে ৮৪টি, দিঘলিয়ায় ৬৩টি, ফুলতলায় ৩৪টি, রূপসায় ৭৪টি এবং কয়রা উপজেলায় ৪৬টি পূজাণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে গত বছরের তুলনায় কয়রা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া ও তেরখাদা উপজেলায় মণ্ডপে পুজার আয়োজনের সংখ্যা অনেক কমেছে। দুর্গা দেবীর এই শুভ আগমনে নিপুণ হাতে প্রতিমায় দো-মাটির কাজে এখন ব্যস্ত খুলনার ভাস্কররা। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে শারদীয় দুর্গাপুজার নানা প্রস্তুতি। প্রাথমিক পর্যায়ে মণ্ডপগুলোতে দুর্গা প্রতিমার খড় ও মাটির কাজ শুরু হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে মূর্তিতে রং-তুলির আঁচড়ের কাজ চলবে। দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও তৈরি করা হচ্ছে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, প্যাঁচা, হাঁস, সর্পসহ প্রায় ১২টি প্রতিমা। নগরীর শিববাড়ি মন্দির, ধর্মসভা, শীতলাবাড়ি, বড়বাজার, পুজো খোলাসহ একাধিক পূজা মন্দির ঘুরে দেখা যায়, মন্দিরগুলোতে প্রতিমা শিল্পীদের কর্ম-ব্যস্ততা তুঙ্গে। অধিকাংশ মন্দিরে প্রতিমা নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। প্রতিমা শুকানোর পর রঙ-তুলিতে দেবী দূর্গাকে রাঙিয়ে তোলার কাজ করবে।কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নে ১২টি, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নে ১২টি, বাগালী ইউনিয়নে ৮টি, মহারাজপুর ইউনিয়নে ৩টি, কয়রা সদর ইউনিয়নে ৬টি, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নে ৩টি ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নে ৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সেই জন্য কারিগররা কাদামাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। নগরীর ধর্মসভা মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজে সাতক্ষীরার আশাশুনি থেকে আসা চন্দ্রশেখর মন্ডল বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর  পূজা মণ্ডপের সংখ্যা কম। যে কারণে প্রতিমা তৈরির কাজ অনেক কমে গেছে। তিনি বলেন, গত বছর ৬ থেকে ৭টি মণ্ডপে প্রতিমার কাজ করেছি। এবার মাত্র চারটি প্রতিমা তৈরির কাজ পেয়েছি। সর্বশেষ ৮ দিন আগে এখানকার মাটির কাজ শুরু করেছি। মাটি শুকিয়ে গেলে রঙের কাজ শুরু করবো। তিনি আরও বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে অধিকাংশ পূজামন্ডপের বাজেট কমেছে, আগে যে বাজেটে পূজা হতো কমিটি এবার তা অনেকটাই কমিয়েছে।শীতলাবাড়ি মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক  বিজয় কুমার ঘোষ জানান, ধর্ম যার যার .উৎসব সবার। তাই সনাতন ধর্মবালন্বী হিন্দু সম্প্রদয়ের মানুষ প্রতিবছরের মত এবারও যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা পালন করতে পারে।  সেই জন্য বর্তমান সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন পূজা উদযাপন কমিটির এই নেতা। এদিকে শারদীয় দুর্গোৎসবে আইন শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে কঠোর অবস্থানে থাকবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা এবারও গুরুত্ব দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করবে। এ উপলক্ষ্যে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে কেএমপি সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার । পুলিশ কমিশনার বলেন, দুর্গাপূজা প্রস্তুতিকাল এবং চলাকালীন ও প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষ্যে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ নগরীর প্রতিটা পূজা মণ্ডপ পরির্দশন করেছেন।  প্রতিটা পূজা মণ্ডপে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব সেচ্ছাসেবক দ্বারা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনি পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সংবাদ তাৎক্ষণিকভাবে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে অথবা সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জকে জানাতে অনুরোধ করেন তিনি। পুলিশ কমিশনার আরও বলেন ‘আমরা সেই বাংলাদেশের প্রত্যাশা করি, যেখানে সকল ধর্মের মানুষ নির্বিঘ্নে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারে’। সভায় খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল হালদার; সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু; খুলনা মহানগরীর সবগুলো থানা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারীগণ এবং খুলনা মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় জানানো হয় যে, স্বরাষ্ট্র এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিদের্শনা মতে সকল পূজামণ্ডপে আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে। এর সাথে সেনা, নৌ, কোস্টগার্ড, পুলিশসহ যৌথবাহিনী পূজা শুরুর পূর্ব হতে পূজার দিনগুলোতে টহল দেবে। পূজামণ্ডপে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানো হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব বা মিথ্যা তথ্য ছড়ালে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজান ও নামাজের সময় বাদ্যযন্ত্র বন্ধ থাকবে। ডিসি অফিস, ইউএনও এবং পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টা চালু রেখে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হবে। 

জেলার ইতিহাস


দর্শনীয় স্থান