গলাচিপায় স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত, পরদিন স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক:পটুয়াখালীর গলাচিপায় স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনার পরে স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তুলারাম গ্রামে মিজান মিয়ার ঘেরের পাড়ে একটি কাউপলা গাছের ডালের সাথে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় মরদেহটি পাওয়া যায়।এসময় তার মুখমণ্ডলে রক্তাক্ত দাগ ও বাম হাতের একটি আঙুলের নখ ভাঙা ছিল। নিহতের নাম আলামিন গাজী (৪৫)। তিনি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার কালেখারবেড় গ্রামের মিজান গাজীর পুত্র। কাজের সূত্রে তিনি গলাচিপার পানপট্টি এসে বসবাস শুরু করেন।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার বছর আগে আলামিন গলাচিপার পানপট্টির স্থানীয় বাসিন্দা আলম মিয়ার ছেলে নিক্সনের গরুর খামারে কাজ করতে আসেন। সেখানে কাজ করা অবস্থায় তার পরিচয় হয় পানপট্টি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জলিল মিস্ত্রীর (বিশ্বাস) মেয়ে নাজমা বেগমের (৪৮) সাথে। সে বাঁশতলা এলাকায় বসবাস করতেন ও মুরগির ফার্ম পরিচালনা করতেন।সেখান থেকে আলামিনের সাথে পরিচয় থেকে প্রেম, পরে দুই মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। নাজমার আগেও দুটি বিয়ে হয়েছিল। তাদের সে নিজেই ডিভোর্স দেয়। প্রথম স্বামীর ঘরে তার এক ছেলে সজল (২২) ও এক মেয়ে তুলি (১৮) রয়েছে। ছেলে সজল মায়ের নতুন স্বামী আলামিনের জন্য একটি অটোরিকশা কিনে দেন, যা চালিয়েই সংসার চলছিল তাদের।স্থানীয়রা আরও জানায়, গত সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আলামিন স্ত্রী নাজমাকে বেড়ানোর কথা বলে অটোরিকশা নিয়ে বাঁশতলা এলাকায় যায়। কাজী বাড়ির সামনের রাস্তায় গেলে সেখানে নাজমার পেটে ছুরিকাঘাত করে তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত নাজমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।অপরদিকে ঘটনার পর থেকে আলামিন নিখোঁজ ছিলেন। তার চালানো অটোরিকশা পানপট্টি বোয়ালিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরদিন সকালে শামিম মৃধা বাড়ির পাশে মিজান মিয়ার ঘেরপাড়ে কাউপলা গাছের সাথে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হলে তারা মরদেহ উদ্ধার করে।গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদুর রহমান জানান, ধারণা করা হচ্ছে সোমবার সন্ধ্যায় পারিবারিক কলহে স্ত্রীর পেটে ছুরিকাঘাত করে আলামিন। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিলো। পরে মঙ্গলবার সকালে গাছের সাথে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আলামিনের পরিবার খবর দেয়া হয়েছে তারা খুলনা থেকে আসতেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হবে।