মানিকগঞ্জে সাবেক মন্ত্রীর ‘লাঠিয়াল সাম্রাজ্য’: অঢেল অবৈধ সম্পদের পাহাড়!
স্টাফ রিপোর্টার মানিকগঞ্জ: ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে এক ভয়ংকর ‘লাঠিয়াল বাহিনী’। ওই বাহিনী গত ১৬ বছর ধরে মানিকগঞ্জে চালিয়েছে সন্ত্রাস, দখলবাজি ও লুটপাটের রাজত্ব। প্রশাসনের ছত্রছায়ায় তারা গড়ে তোলে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের পাহাড়।জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল গত ১৬ বছর ধরে দখল বাণিজ্যের নেতৃত্ব দেন। তার সঙ্গে ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক আফসার উদ্দিন সরকার যিনি মন্ত্রীর কালো টাকা সাদা করার মূল দায়িত্বে ছিলেন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাতীয় পর্যায়ের ভোট ডাকাতিতে নেতৃত্ব দেন ইসরাফিল হোসেন। বালু ব্যবসা, ঠিকাদারি ও সরকারি চাকরির নিয়োগ বাণিজ্যে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে মালিক হয়েছেন বিলাসবহুল বাড়ি, জমি ও গাড়ির।পরিবহনখাতে চাঁদাবাজির সাম্রাজ্য গড়েন কালা জাহিদ ও বাবুল সরকার। মন্ত্রীর ছত্রছায়ায় তারা মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে চাঁদার ভাগ পৌঁছে দিত মন্ত্রী পরিবারের হাতে। কালা জাহিদ ভোট কেন্দ্র দখলের অন্যতম কারিগর, আর বাবুল সরকার মন্ত্রীর স্ত্রীর মাধ্যমে আবার সক্রিয় হয়ে ‘কর্নেল মালেক টাওয়ার’ গড়ার কারিগর হন।জেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি তুষার ছিলেন মন্ত্রীর সবচেয়ে কাছের ‘স্ট্র্যাটেজিস্ট’। তার পরিকল্পনায় মানিকগঞ্জের ৩টি বালুমহাল থেকে ৬০ পার্সেন্ট মুনাফা নিত মন্ত্রীর পরিবার, বাকি পেত লাঠিয়ালরা। হাসপাতালের খাবার সরবরাহের নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনিও।জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সিফাত কৌরাইশি সুমন ও যুবলীগ নেতা ইরাদ কৌরাইশি ইমন তৈরি করেন কিশোর গ্যাং। ভোট কেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণ, সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলা, নানা অপরাধে জড়িত এরা দু’ভাই চলতো মন্ত্রীপুত্র রাহাত মালেক শুভ্রর নির্দেশে।ছাত্র আন্দোলনের নেতা রমজান মাহমুদ বলেন: ‘ওই মন্ত্রীপন্থী বাহিনীর প্রত্যেকে ক্যাডার সন্ত্রাস ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।’পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুন জানিয়েছেন, কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকিদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলবে।