• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ১৫ই শ্রাবণ ১৪৩২ বিকাল ০৪:২৬:৩০ (30-Jul-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বুধবার ১৫ই শ্রাবণ ১৪৩২ বিকাল ০৪:২৬:৩০ (30-Jul-2025)
  • - ৩৩° সে:

শিবালয়ে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে দেয়াল নির্মাণ, অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার রুপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রুপসা ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের মধ্যকার জমিতে উঁচু দেয়াল নির্মাণকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সরকারি খাস জমিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের মাঝ অংশে জোরপূর্বক স্থায়ী দেয়াল নির্মাণ করছে ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, যার ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।সরেজমিন দেখা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঘেঁষে খেলার মাঠের মধ্যকার জমিতে ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেয়াল নির্মাণ করছেন। বিদ্যালয়টির পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণে ছাত্রছাত্রীদেরকে গাদাগাদি করে শারিরীক কুচকাওয়াজ করতে হচ্ছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ২৪ নং রুপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বর্তমানে প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ডভুক্ত জমির পরিমাণ ৩০ শতাংশ, যার পুরো অংশের খাজনা পরিশোধ করা হয়েছে। দুই প্রতিষ্ঠানের শেষ সীমানাকৃত অতিরিক্ত ২০ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে মাঠ ও খেলার জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।অন্যদিকে, ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৩ সালে। তাদের পক্ষ থেকে এর আগেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে গেট ও পাঠাগার নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে আবারও তারা একটি উঁচু দেয়াল নির্মাণ করছে।এ বিষয়ে রুপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুতফুন্নাহার জানান, আমাদের রেকর্ডভুক্ত জমি ৩০ শতাংশ হলেও মোট ৫০ শতাংশ জায়গা আমরা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ব্যবহার করছি। সেই জায়গার মাঝে দেয়াল নির্মাণ করে আমাদের খেলার মাঠ এবং সমাবেশের জায়গা সংকুচিত করে দেওয়া হয়েছে। মাসিক সমন্বয় সভায় আমি ইউএনও স্যারকে বলেছিলাম, এই দেয়াল নির্মাণের ব্যাপারে। তিনি বলেছিলেন, দুই স্কুলের মাঝখানে কোন বেড়া বা দেয়াল থাকবে না। এরপরও রাতের আঁধারে কীভাবে, কেন হল? তা আমার জানা নেই। আমি এই বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুপারিশকৃত আবেদনে বর্তমান ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি, কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি।তিনি আরও বলেন, আমাদের ৩৫০ জন শিক্ষার্থী এখন মাত্র ১৫-২০ ফুট জায়গায় কুচকাওয়াজ ও খেলাধুলা করতে বাধ্য হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। ২০২০ সালে ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা গেট নির্মাণে চাপ সৃষ্টি করেছিল বলেও তিনি অভিযোগ করেন।বিদ্যালয়ের জমিদাতা পরিবারের সদস্য এবং প্রাক্তন সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন ইউনুছ বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবহৃত জমিতে প্রভাব খাটিয়ে দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। যে অংশে দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে তা পুরোপুরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবহৃত জমি। প্রশাসন বিষয়টি জানলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যা দুঃখজনক। তাহলে কেমনে, কীভাবে, প্রশাসন থাকতেও এভাবে দেয়াল নির্মাণ হয়।প্রাইমারী স্কুলের ছাত্রী মেঘারুন্নেসা, তানহা, সুমাইয়াসহ একাধিক ছাত্রছাত্রী জানান, এই দেয়াল যদি না থাকতো, তাহলে আমরা ভালোভাবে খেলাধুলা করতে পারতাম। খুব খারাপ লাগছে। এ ব্যাপারে চতুর্থ শ্রেণির সুপ্তি বলেন, এই দেয়াল করার কারণে আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। খেলাধুলা ও এসেম্বলি করতে পারবো না। চিপাচিপি হয়ে গেছে।স্থানীয় অভিভাবক, এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিশুদের খেলার জায়গা কেড়ে নিয়ে দেয়াল তোলা হলো, তা মানা যায় না। এটি উন্নয়ন নয়, বরং শিশুদের অধিকার খর্ব করা।। শিক্ষার্থীদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশের পথে এটি বড় বাধা। দুই স্কুলের আঙ্গিনার মাঝে এমন হটকারী সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হয়নি। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবে আশা করি।ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফি উদ্দিন মহি জানান, ভূমি অফিস ও তৎকালীন ইউএনও তিন-চার বছর আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেই মোতাবেক, উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেয়াল নির্মাণ করছে। বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতেই এটি করা হচ্ছে।তবে, বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি বা সরকারি খাস জমিতে দেয়াল নির্মাণ করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে, তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়টি আগেই নিষ্পত্তি হয়েছে। পূর্ববর্তী ইউএনও ও ভূমি অফিস সমাধান দিয়েছে। তারা তাদের নিজস্ব জমিতে দেয়াল নির্মাণ করছেন। সরকারি খাস জমি উচ্চ বিদ্যালয়ের আঙ্গিনার ভিতরে রয়েছে। এখানে আমাদের কোনো কিছু করার নেই।এই সংকট নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে নিরপেক্ষভাবে সীমানা নির্ধারণ, জমির বৈধ মালিকানা যাচাই এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের যৌথ স্বার্থ বিবেচনায় কার্যকর সমাধান নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

জেলার ইতিহাস


দর্শনীয় স্থান