কোম্পানীগঞ্জে সিগারেট নেশায় যুবককে হত্যা, দেড় বছর পর আসামি গ্রেফতার
নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে দেড় বছর আগের এক ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।১৪ জুন শনিবার দুপুরের দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিমল কর্মকার। গ্রেফতার নুরুল আলম রনি (২৭) উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের রংমালা বাজার এলাকার সফিকুল আলম বাহারের ছেলে।এর আগে, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আসামি দোষ স্বীকার করে স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের শিকার মো. শরীফ (২৫) উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল আজিজ মুন্সিবাড়ির জাফর আহম্মেদ ওরফে মিয়া মিস্ত্রির ছেলে। ওই যুবক শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিল। স্থানীয় রংমালা বাজারের মানুষের থেকে টাকা পয়সা নিয়ে চলত। একই বাজারে আসামি রনির সাথে একসঙ্গে চলাফেরা করত ভিকটিম। তারা একসাথে বসে সিগারেট নেশা করত।পুলিশ জানায়, ২০২৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে শরীফের কাছে একটি সিগারেট চায় রনি। রনিকে সিগারেট না দেওয়ায় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। ওই সময় রনির কাছে টাকা না থাকায় তিনি সিগারেট কিনতে পারেনি। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়ে টাকা এনে রংমালা বাজারের হিন্দু পাড়ার হরির দোকান থেকে সিগারেট কিনে। একপর্যায়ে রনি তাদের বাড়ির পুকুরের ঘাটলায় গিয়ে সিগারেট নেশা শুরু করে। এর মধ্যে রনিকে দেখে ঘাটলার কাছে যায় শরীফ। যাওয়ার পরে আবার তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। সেখান থেকে রনি ভিকটিমকে শরীফকে রংমালা দারুল উলুম মাদরাসার পিছনে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে শরীফ অজ্ঞান হয়ে পড়লে রনি তাকে লতাপাতা দিয়ে ঢেকে রেখে চলে আসে। ৭দিন পর মরদেহ পচে দুর্গন্ধ ছড়ালে স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে কোম্পানিগঞ্জ থানা পুলিশ ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ আরও জানায়, ঘটনার পর রনি আর বাড়িতে যায়নি। ওই দিন সারারাত পুকুর ঘাটে বসে ছিল। পরের দিন চট্টগ্রাম চলে যায়। সেখানে ফুটপাতে ভিকটিমের মুঠোফোন এক ব্যক্তির কাছে ৩ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করে দেয়। পুলিশ মোবাইলে সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে। এ ঘটনায় প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়। এরপর ময়না তদন্তের প্রতিবেদন এলে ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিমল কর্মকার ও উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মহসিন মোবাইলের সূত্র ধরে হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামিকে গ্রেপ্তার করে। কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিমল কর্মকার আরও বলেন, মোবাইলের সূত্র ধরে দীর্ঘ অনুসন্ধানে এই হত্যাকাণ্ড রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এরপর আদালত থেকে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।