পাহাড়ি পর্যটকদের সঙ্গী, শিশুদের মুলি বাঁশের লাঠি
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: তৃতীয় শ্রেণির জীবন ত্রিপুরা ও সরৎ ত্রিপুরা, পঞ্চম শ্রেণির আলোময় ত্রিপুরা মত অনেক পাহাড়ি শিশু ডাকছে, ‘বাঁশ নেন বাঁশ নেন, নইলে পড়ে যাবেন পাহাড়ে উঠতে পারবেন না, দাম মাত্র বিশ টাকা’।পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার সাজেক যাওয়ার পথে হাজাছড়া গ্রাম। আর সেখানেই এ হাজাছড়া ঝরনা। সাজেক যাওয়ার পথে হাজাছড়া এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে দেখা মেলে মুলি বাঁশের লাঠি বিক্রি করা শিশুগুলোর এবং শুধু মাত্র হাজাছড়া নয় এদের মতো আরও শিশু দেখতে পাবেন সাজেকে।তাদের কথায় সায় দিয়ে লাঠি কিনছেন পর্যটকরা, ৪-৭ ফুট দীর্ঘ এই বাঁশের লাঠিগুলো পর্যটকদের সঙ্গী হয়ে যাচ্ছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের হাজাছড়া ঝরনা এবং সাজেক পাহাড়ে। এ বাঁশের লাঠিগুলো তৈরি পাহাড়ি মুলি বাঁশ দিয়ে। দেখতেও খুবই সুন্দর। চিকন কিন্তু কঞ্চি ছাড়া এই বাঁশগুলো পাহাড়ে আসা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় ছাড়াও ছড়া অর্থাৎ পাহাড়ি পানি প্রবাহের পথে হাঁটার সঙ্গী। পা পিছলে পড়ে যাওয়া বা পানির গভীরতা মেপে যাওয়ার পথে সহায়ক এ বাঁশের লাঠি।পাহাড় থেকে বহু দিন আগের এ ঝরনা সাম্প্রতিককালে পর্যটকদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠে বলে জানান স্থানীয়রা। আর এখন প্রতিদিনই হাজার হাজার দর্শনার্থী সাজেক যাওয়ার পথে এখানে আসেন। সকালে বৃষ্টির পর ঝরনায় যাওয়ার পথ হয়ে উঠে পিচ্ছিল-কর্দমাক্ত। স্কুল ছুটির পর খুদে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা পর্যটকদের জন্য বিক্রি করে বাঁশের লাঠি। এতে করে তাদের সংসার ও চলে এর উপর নির্ভর করে । লাঠি বিক্রি করা জীবন ত্রিপুরা জানায়, সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে স্কুল ছুটির পর নিজেদের জমির বাঁশের লাঠি নিয়ে আসেন এখানে। বেলা সাড়ে ১০টায় এক ঘণ্টায় ৩০টির মতো বিক্রি হয়েছে এবং বিকেলে আরও বেশি হয়।লাঠি কিনে পর্যটকদের তা হাতে নিয়ে পাহাড়ের ঢালে ঢালে যেতে দেখা যায় ঝরনা পর্যন্ত। আরও প্রায় চল্লিশ হাত ওপর থেকে পড়া ঝরনার পানির ফোটা দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যাচ্ছে, যাতে গরমে প্রশান্তি পাচ্ছেন পর্যটকরা। স্বচ্ছ ঝরনার পানিতে গোসল করছেন তারা।ঝরনাকে ফ্রেমে বন্দি করতে সেলফি তুলতে ভুলছেন না দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা। আনন্দ-উল্লাসে পাহাড়ি জনপদ মুখর করে তুলছেন তারা।