• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৭:৪৮:৪১ (27-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৭:৪৮:৪১ (27-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:

পঞ্চপল্লীর ঘটনায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে ডিসির পুরস্কার ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর: ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ডুমাইন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ মো. আসাদুজ্জামান তপন এবং মেম্বার অজিত কুমার বিশ্বাসের সম্পৃক্ততার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারে কেউ যদি সহায়তা করেন তাহলে তাদের উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।২৬ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার এ ঘোষণা দেন। এসময় তিনি জানান, এ ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কমিটির সময় আরও সাতদিন বাড়ানো হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে ডিসি কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন একজন স্বভাবগত অপরাধী। কোথায় কখন কীভাবে লুকিয়ে থাকতে হয় সেটি তিনি ভালো জানেন। তিনি আত্মগোপনে যাওয়ার আগে মোবাইলফোন রেখে গেছেন। এর আগে আমরা মাগুরায় তার অবস্থান শনাক্ত করি। কিন্তু যখন তাকে ধরার জন্য অভিযান চালানো হয় তখন যশোরে পালিয়ে যান। এরপর যশোরেও তাকে ধরতে অভিযান চালানো হলেও পাওয়া যায়নি।’ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপনকে এর আগে দুইবার বরখাস্ত করা হয়েছিল জানিয়ে ডিসি বলেন, ‘একবার ইউএনওর ওপরে হামলার ঘটনায় এবং আরেকবার টিসিবির কার্ড দুর্নীতির কারণে তাকে বহিসষ্কার করা হয়। দুইবারই উচ্চ আদালতে আপিল করে তিনি পদ ফিরে পান। এ কারণে তার মধ্যে একধরনের বেপরোয়া মনোভাব তৈরি হয়েছে। তিনি ভেবেছিলেন যত অপরাধই করুক না কেন তিনি পার পেয়ে যাবেন।’ঘটনার পর ধর্মমন্ত্রীর সফরের সময়ও চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপনকে মন্ত্রীর প্রোগ্রামে দেখা গেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তার দ্বৈত ভূমিকার কারণে তাকে সেভাবে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়নি। তবে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের উদ্দেশে বলেন, তারা যেন দ্রুত আত্মসমর্পণ করেন। তারা তাদের আইনগত সুবিধা নেন।’আসামিদের গ্রেফতারে সহযোগিতা করলে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে ফরিদপুরের ডিসি কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘এ ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের গ্রেফতারে সবার সহযোগিতা চাই। তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা সবার সহযোগিতা চাই। কেউ যদি অন্যান্য আসামিদের অবস্থানও জানাতে পারেন তাহলে তাদের উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।’পঞ্চপল্লীর ঘটনায় গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পরে ফরিদপুরের সাংবাদিকরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে এমন একটি নিউজও করেননি। প্রধানমন্ত্রীও ফরিদপুরের সাংবাদিকদের এ আচরণে তাদের প্রশংসা করেছেন। ঘটনার পর আমাদের সঙ্গে ওই রাতে ঘটনাস্থলেও থেকেছেন। তারা প্রত্যেকটি জায়গায় উপস্থিত থেকে পুরো বিষয়টি যথাযথভাবে উপস্থাপন করায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে বিষবাষ্প ছড়ানোর আশঙ্কা ছিল, সেই সুযোগ কেউ পাননি।’তবে কোনো কোনো মহল এ ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত করতে চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন জেলা প্রশাসক। তারা এটিকে ‘হিন্দুদের হাতে মুসলিম শ্রমিকদের হত্যা’ হিসেবে উপস্থাপন করছেন।তিনি বলেন, ‘এটি সঠিক নয়। অনেকে নানাভাবে সহায়তা করে তাদের সহানুভূতি কুড়ানোর জন্য ভিডিও করছেন। সেগুলো ছড়িয়ে দিয়ে ঘটনা ভিন্নভাবে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।’জেলা প্রশাসক বলেন, ইসলামি দলগুলোর মতো সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি আমাদেরও। একটি আন্দোলনের ডাক দিলে সেখানে নানাধরনের লোক ঢুকে যায়। অবরোধের সময়ও একটি মহল সেখানে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে চালানোর চেষ্টা করেছে।এসময় নিহতদের পরিবারকে ধর্মমন্ত্রী এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর পক্ষ থেকে নগদ আর্থিক সহায়তা করা ছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তার তথ্য তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক। এ ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা ও তাদের পরিবারকে জীবিকা নির্বাহের জন্য খাদ্যসামগ্রী প্রদান ও কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এ ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত) মো. আলী সিদ্দিকীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তবে ঘটনার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তদন্ত যথাসময়ে সম্পন্ন করা যায়নি। এজন্য তারা সময় চেয়েছেন। তাদের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির মেয়াদ আরও সাতদিন বাড়ানো হয়েছে।তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। কোনো বাড়িতে আক্রমণ করে পরিস্থিতি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা চলছে। এজন্য আসামিরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত এবং তদন্ত রিপোর্ট না দেওয়া পর্যন্ত মধুখালীতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন থাকবে।সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, ডিডিএলজির উপ-পরিচালক রওশন চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াসিন কবীর, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না তাসনিম উপস্থিত ছিলেন।

জেলার ইতিহাস


দর্শনীয় স্থান