নাজিরপুরে ভ্যান চালিয়ে বিএ পাশ করলেন হায়দার আলী
পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরের নাজিরপুরে ভ্যান চালিয়ে বিএ পাশ করলেন মো. হায়দার আলী (৪৫) নামের এক ব্যক্তি। তিনি পেশায় একজন ভ্যান চালক। হায়দার আলী উপজেলার সেখমাটিয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মৃত কাঞ্চন খানের ছেলে।তিনি ১৯৯৪ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। সংসারের অভাব অনটনের কারণে বাধ্য হয়ে শিক্ষাজীবনের ইতি টানতে হয় তার। পরবর্তীতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। পরিবারের দায়িত্ব, স্ত্রী-সন্তানদের প্রতি কর্তব্য পালন করার পরেও ২০১৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন এবং ২০২৪ সালে বিএ পাশ করেন।এবার তার স্বপ্ন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বয়সের চাপ কিংবা কোনো কিছুই বাঁধা হতে পারেনি তার শিক্ষা অর্জনের পথে। ভ্যান চালানোর পাশাপাশি লেখাপড়া শেখার অদম্য আগ্রহের কারণে রাতে পরিবারের সকলে ঘুমিয়ে পড়লে এবং মাঝেমধ্যে দিনের অবসরে পড়ালেখা চালিয়েছেন। ইংরেজিতে তার বেজায় দখল এবং আগ্রহ। ব্যক্তিগত জীবনে মো. হায়দার আলী চার সন্তানের জনক।তিনি জানান, ভ্যান চালিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩-৪শত টাকা আয় হয়। পৈতৃক সম্পত্তির মধ্যে তার একটি টিনের ঘর এবং মাত্র ৬ শতাংশ জমি আছে।হায়দার আলী দৃঢ়তার সাথে আরও বলেন, যত বছরই লাগুক আমি এম এ পাস করবই। এটা আমার স্বপ্ন, যদি সরকারি কোনো সহযোগিতা পাই তাহলে আমার পক্ষে এম এ পাশ করা সহজ হত। চাকরি প্রাপ্তির জন্য না, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার বাসনা থেকে এ শিক্ষা অর্জন করেছি। তারপরেও যদি একটি চাকরি পেতাম, পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে দিন কাটাতে পারতাম।শেখমাটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান চৌধুরী নান্নু বলেন, এখান থেকে বুঝা যায়, যদি মানুষের ইচ্ছা শক্তি ও পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকে, তবে সফলতার দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়। এটি আমাদের জন্য আনন্দদায়ক বিষয়ক। যদি কখনো তার প্রয়োজন হয় সহযোগিতার, তবে আমি তার পাশে দাঁড়াব। তার এ সাফল্যে দেখে অনেকেই শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে স্বপ্ন বাস্তবায়নে সক্ষম হবে।এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতিমা আজরিন তন্বী জানান, সমাজসেবায় একটি শিক্ষাবৃত্তি থাকে। যদি সে আবেদন করেন, তাহলে আমি চেষ্টা করে ব্যবস্থা করে দিতে পারব।