ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিষধর সাপের উপদ্রবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল এবং বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের পাশে পাতি কাল কেউটে, কালাচ বা দেশি কালাচ সাপ দেখা গেছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা। যা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন বলেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় সাপ দেখা যাচ্ছে। আবাসিক হল এলাকায় এমন ঘটনায় আমরা সঙ্কিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে এন্টি-ভেনম দেওয়ার ব্যাবস্থা না থাকা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগজনক। এমনকি কেউ যদি বিষাক্ত সাপে দংশিত হয় সঙ্গে সঙ্গে সাহায্য পাওয়ার উপায় নেই। আর কালাচ সাপ দংশন করলে সঙ্গে সঙ্গে বুঝা যায় না, চিকিৎসা না পেলে চার ঘন্টার মধ্যে মৃত্যুর সম্ভাবনাও থাকে। এটা খুব ভয়াবহ একটা ব্যাপার। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম বরেন, আমাদের মেডিকেল একটা প্রাইমারি সেন্টার। সর্পদংশিত কেউ এখানে আসলে আমরা তাকে স্যালাইন, ক্যানেলসহ সাপোর্টিব ট্রিটমেন্ট দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিব।
তিনি আরও বলেন, এখানে এন্টি-ভেনম প্রয়োগের সুযোগ নেই কারণ এটি দেওয়ার কিছু পরিবেশ আছে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া এটি দেওয়া সরকারিভাবে নিষেধ। একজনকে কামড় দিয়ে দিলেই এন্টি-ভেনম দেওয়া যাবে না, বিষাক্ত সাপের দংশন ছাড়া এটি দেওয়া হলে রুগী মারাও যেতে পারে। কার্ডিয়াক সাপোর্টসহ বিভিন্ন টেস্ট শেষে অ্যান্টিভেনম ইউজ করতে হয়।
সিরাজুল ইসলাম আরও জানান, ১০ বছর আগে থেকেই আমাদের কিছু অ্যান্টিভেনম আছে। যেগুলোর একটি বাদে বাকি ১০-১২টার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। যার মূল্য প্রায় ১৭ হাজার টাকা। এখানে এন্টি-ভেনম দেওয়ার স্কোপ নেই তাই আমরাও নতুন করে আর নিয়ে আসিনি। বিগত সময়ে আমরা যখন প্রশাসনকে এন্টি-ভেনমের কথা বলেছিলাম তখন সিদ্ধান্ত এসেছিল যে, জঙ্গল পরিষ্কার করলে সমাধান হবে। প্রশাসন যখন দেখেছে যে এখানে এন্টি-ভেনম দেওয়ার সুযোগ নেই তখন আর কন্টিনিউ করেনি।
এস্টেট অফিস প্রধান মো. আলাউদ্দিন বলেন, ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে আমরা সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি। গুচ্ছ পরীক্ষা উপলক্ষে একাডেমিক ভবনসহ সবগুলো ভবনের আশেপাশে আগাছা-জঙ্গল পরিষ্কার করা হয়েছে। পরিষ্কারের কাজ দ্রুত করার জন্য নতুন আরও কিছু মেশিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রশাসন সহায়তা করলে আমরা আগাছা নির্মুল করে ক্যাম্পাসকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারবো।
উইকিপিডিয়া সূত্রে, কালাচ সাপের দংশন বোঝার উপায়: ব্যথাহীন হওয়ায় কালাচ সাপ দংশন করলে অনেক সময় বোঝা কঠিন। তবে কিছু উপসর্গ রয়েছে। যেমন- দংশনের স্থান ব্যথাহীন বা সামান্য ফোলা, হাত-পা অবশ লাগা, চোখের পাতা ঝুলে পড়া, ঝাপসা দেখা, কথা বলতে ও গিলতে সমস্যা হওয়া, শ্বাসকষ্ট হওয়া। দংশনের ১-৪ ঘণ্টার মধ্যে এই উপসর্গ শুরু হয়। ৬ ঘন্টায় তা তীব্র আকার ধারণ করে।
করণীয়: দংশিত ব্যক্তি শান্ত ও দংশিত অঙ্গটি স্থির রাখতে হবে যাতে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে না পড়ে, চুষে বিষ বের করা যাবে না, রক্ত বাঁধা যাবে না (tourniquet ব্যবহার করা যাবে না) এবং সাপটি শনাক্ত করতে চিকিৎসককে সাহায্য করতে হবে। কালাচ সাপের বিষ স্নায়ুবিষ (neurotoxic) যা শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ করে দিতে পারে তাই দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available