যেসব কারণে নষ্ট হাতে পারে স্মার্টফোন
প্রযুক্তি ডেস্ক: প্রকৃতি-পরিবেশ কিংবা দৈনন্দিন জীবনযাপনের ভিন্নতায় বাংলাদেশ একটি বৈচিত্র্যময় দেশ। এখানের গতিময় ও অনিশ্চিত জীবনযাত্রায় প্রতিদিনের অন্যতম অনুসঙ্গ স্মার্টফোনও থাকে নানা ঝুঁকিতে। সকালবেলায় তড়িঘড়ি করে ঘর থেকে বের হওয়া থেকে শুরু করে সন্ধ্যার ঝড়ো-বৃষ্টি; অথবা ব্যস্ত রাস্তা থেকে ঘরের কিচেন সবক্ষেত্রেই রয়েছে ফোনের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা। পছন্দের ডিভাইসটিকে সুরক্ষা দিতে বিশেষ বিশেষ উপায় অবলম্ব করতে হবে তা আমরা সবাই জানি। এখন চলুন জেনে আসা যাক কোন কোন উপায়ে, আমাদের স্মার্টফোন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দ্য গ্রেট ফল: স্লিপস, ড্রপস অ্যান্ড ক্র্যাকসস্মার্টফোনের ক্ষতি হবার ঝুঁকি শুরু হয় সকালে ঘুম থেকে উঠার পর হতেই। দুর্ঘটনাবশতঃ হাত থেকে পড়ে গেলে ফোনের ডিসপ্লেটাই সবার আগে নষ্ট হয় বা সৌন্দর্য হারায়, স্ক্রিন ভেঙে যায়। আবার এমনও হয়, আমরা হয়তো একটি গতিশীল বাস, সিএনজিতে করে আসা-যাওয়া করছি আর এক হাতে আছে ফোন। এমন সময়ে যানবাহনের গতির পরিবর্তন, হঠাৎ টার্ন এর কারণে ফোনটি হাত থেকে পড়ে যেতে পারে, সজোরে আঘাত লেগে পিছনের ভেঙে যেতে পারে মোবাইলটি। স্মার্টফোনটির আরো ক্ষতি হতে পারে- বাইক চালানোর সময় সেটি পড়ে গিয়ে, ঘামে ভেজা হাত থেকে পিচ্ছিল খেয়ে পড়ে গেলে, এমনকি রিকশায় ঝাঁকুনি খেয়ে হাত থেকে পড়ে গেলেও! এসব মুহূর্তে আমরা এতটাই আতঙ্কিত হয়ে যাই যেন, আমাদের হৃদস্পন্দন বন্ধ হবার জোগাড় হয়।বৃষ্টি কিংবা দুর্ঘটনাবশতঃ অন্যান্য পানি সমস্যাবৃষ্টি এই শহরের সবচেয়ে অনাকাঙিক্ষত চমক! হয়তো আপনি মনের আনন্দে ইনস্টাগ্রাম স্ক্রল করছেন তখনই হঠাৎ করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করল আগাম ঘোষণা ছাড়াই। আপনি কোথাও একটু শান্তিতে দাঁড়াতেও পারছেন না, বৃষ্টিতে ভিজছেন আপনি এবং আপনার ফোনটাও ওয়াটারপ্রুফ নয়। এছাড়া মুশকিল হতে পারে বাসায়ও। ঘরের কাজ করতে গিয়ে স্মার্টফোনটি পড়ে যেতে পারে পানির বালতিতে। গ্রামে হাত থেকে ফোন সরাসরি পুকুরে পড়ে যাবারও নজির আছে অনেক। শহরে দেখা যায়-রান্নার ব্যস্তায় বাজতে থাকে ফোন, একটু অমনোযোগী হলে সিঙ্কে গিয়ে পড়তে পারে ফোনটি, লাগতে পারে পানির ছিঁটে।এসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে ভোগান্তি যেটা হয়- ফোনটি এক-দুই দিন কাজ করলেও ধীরে ধীরে পুরোপুরো অকেজো হয়ে যায়।অবৈজ্ঞানিক ঝুঁকিপূর্ণ ‘দেশি সমাধান’ফোন পানিতে পড়ে গেলে- তৎক্ষণাৎ সেটি তুলে নিয়ে চালের ভিতরে রেখে শুকানোর একটি প্রবণতা প্রায়ই ব্যবহারকারীদের মধ্যে দেখা যায়। তারা মনে করেন- চালের দানা সব আর্দ্রতা শুঁষে নেবে। অনেকে সরাসরি সূর্য রশ্মিতে বারান্দায় ফোনটি শুকাতে দেন। কাউকে কাউকে আবার হেয়ার ড্রায়ার দিয়েও ফোনের সব পোর্টে গরম বাতাস দিতে দেখা যায়। এছাড়া, ফোনের ভাঙা স্ক্রিন মেরামত করতে অনেককে টুথপেস্ট ব্যবহার করতে দেখা যায়। পাশাপাশি ম্যাচ স্টিকস দিয়ে চার্জিং পোর্টস পরিষ্কার, অথবা ফোন সচল করতে হাতের তালুতে সজোরে আঘাত করার মতো কর্মকাণ্ডও অনেকে করে থাকেন। আবার কাউকে কাউকে ডিভাইসের চার্জিং বন্ধ হয়ে গেলে, চার্জিং পোর্টে বাতাস দিতে দেখা যায়। যদি প্রযুক্তিটি ৯০’ এর দশকের নিনটান্ডো কার্টিজ হয়ে থাকে তাহলে এ পদ্ধতি মাঝেমাঝে কাজ করতে পারে নতুবা পরিস্থিতি শুধুই খারাপ হয়।ধুলো, ঘাম ও তাপ; ফোনের ক্ষতির নীরব কারণআবার স্মার্টফোন এমন অনেক উপায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যা হুট করেই দৃশ্যমান নয়। যেমন, ধুলোমাখা রাস্তায় পথ চললে অথবা বাইকে চললে ফোনের চার্জিং পোর্ট ও হেডফোন জ্যাকে ধীরে ধীরে ধুলো জমতে পারে।গ্রীষ্মকালে শরীরে জমা হওয়া ঘামও ফোনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। হাতের ঘাম ধীরে ধীরে বাটনে জমা হয়ে বাটন নষ্ট করে ফেলে । এছাড়া- ফোন চার্জ হওয়া অফবস্থায় গাড়ির ড্যাশবোর্ডে কিংবা বালিশের নিচে তা ফেলে রাখলে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ডিভাইসের ব্যাটারি ও অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ দুর্বল হয়ে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হঠাৎ করে ফোনটি ধীর হয়ে যাওয়া, হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া কিংবা অন্যান্য ত্রুটি দেখা দেবার আগে ত্রুটিগুলো দেখাই যায় না।নষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্ত ফোন নিয়ে ভোগান্তিফোন ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা সারিয়ে না নিয়ে অনেক ইউজার তা ব্যবহারকার করতে থাকেন। ভেঙে যাওয়া স্ক্রিনে টেপ লাগানো হয়, চার্জিং ক্যাবল জড়ানো থাকে, পাওয়ার বাটন সবসময় অন রাখা হয় ইত্যাদি। বিষয়টা এমন নয় যে- গুরুত্ব না দিয়ে ঠিক করা হচ্ছে না। বরং সারিয়ে তুলতে টাকা, সময় ও ধৈর্য্য দিতে হয়। অনেকের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত ফোনটিই চালিয়ে যাওয়া সহজ, যতদিন চালানো যায় আরকি!ক্ষতি ঠেকাতে কী করছে স্মার্টফোনগুলো ওপরের সমস্যাগুলো ভিন্ন-ভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন প্রোটেকটিভ গ্যাজেট ব্যবহার করে মোকাবিলা করা যেতে পারে। এ জন্য ভালো একটি স্মার্টফোন ব্যবহারও হতে পারে উপযুক্ত সমাধান। এ জন্য স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোও ক্ষতিকর বিভিন্ন দিক যাচাই করে সেগুলোর জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। যাতে করে ব্যবহারকারীদের আরো বেশি ভালো অভিজ্ঞতা দেয়া সম্ভব হয়। বিভিন্ন সমস্যা মাথায় রেখে ফোনগুলোর ডিজাইন করা হচ্ছে। যেমন স্মার্টফোন ব্র্যান্ড অপো সম্প্রতি এ৫ প্রো নামে একটি স্মার্টফোন নিয়ে এসেছে। এই স্মার্টফোনটি অত্যাধুনিক উপায়ে ধুলো-বালি বা পানি থেকে সুরক্ষা দেয়ার পাশাপাশি অনেকগুলো ক্ষতির হাত থেকে গ্রাহককে মুক্তি দিতে পারে। হাত থেকে পড়ে যাওয়া, চাপ কিংবা তাপ যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ফোন থাকে নিরাপদ।