• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ২২শে আষাঢ় ১৪৩২ ভোর ০৫:৪৬:০৫ (07-Jul-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • সোমবার ২২শে আষাঢ় ১৪৩২ ভোর ০৫:৪৬:০৫ (07-Jul-2025)
  • - ৩৩° সে:

হৃদয়বিদারক ট্র্যাজেডি : এক ভাইয়ের লাশ আনতে গিয়ে আরও দুই ভাইয়ের মৃত্যু

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা, যা গোটা উপজেলাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। সৌদি আরবে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত হন প্রবাসী মোহাম্মদ রুবেল (২৭)। তাঁর মরদেহ দেশে ফেরার পর সেই কফিন গ্রহণ করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান বড় ভাই মো. বাবুল (৩৭) এবং ফুপাতো ভাই ওসমান গণি (৩৫)।৫ জুলাই শনিবার বিকেল ৪টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দ গ্রামের বাতিসা এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভূজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান চৌধুরী শিপন।তিনি বলেন, এক ভাই বিদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেল, আর তার লাশ আনতে গিয়ে প্রাণ গেল আরও দুই ভাইয়ের, এ ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো এলাকার হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভূজপুর ইউনিয়নের তালুকদার পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ রুবেল পরিবারের দারিদ্র্য ঘোচাতে এবং একটি ভালো ভবিষ্যতের আশায় ২০২৪ সালে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। কিন্তু প্রবাসে তার দিনগুলো ছিল কষ্টে ভরা।একটি বার্গার খাওয়ার ঘটনায় মালিকের নির্মম নির্যাতনের শিকার হন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় মদিনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই তিনি মারা যান।তার মরদেহ দেশে ফেরাতে দীর্ঘ এক বছরের আইনি প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে এ বছর তা পাঠানো হয়। কিন্তু পরিবারের সেই শোক কাটার আগেই নেমে আসে আরও বড় দুঃসংবাদ।ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রুবেলের মরদেহ গ্রহণ করে অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি ফিরছিলেন বড় ভাই মো. বাবুল ও ফুপাতো ভাই ওসমান গণি। পথিমধ্যে কুমিল্লার বাতিসা এলাকায় একটি দুর্ঘটনায় তাদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তারা।নিহত বাবুল ভূজপুরের তালুকদার পাড়ার ফুল মিয়ার ছেলে এবং ওসমান গণি একই এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন তাদের সঙ্গে থাকা বশির সওদাগর।নিহত ওসমানের ফুফাতো ভাই মাসুদ তালুকদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সকালে রুবেলের লাশ রিসিভ করার পরও কথা হয়েছিল ভাইদের সাথে। বিকেলে হঠাৎ শুনি, দুর্ঘটনায় তারা আর বেঁচে নেই। লাশ এখনো মিয়া বাজার থানায় আছে। আমাদের আর কিছু বলার ভাষা নেই।দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি আরও এক মোটরসাইকেল আরোহী ও প্রাইভেটকারের একজন নিহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। তবে রুবেলের দুই স্বজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ একাধিক সূত্র।এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর পুরো তালুকদার পাড়া ও আশপাশের এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এক পরিবারের তিনজনের মৃত্যু যেন গোটা সমাজের বুকে রক্তাক্ত দাগ কেটে গেছে।