বাকৃবি প্রতিনিধি: চাকরির ক্ষেত্রে কম্বাইন্ড ডিগ্রিকে অবশ্যই প্রাধান্য দেওয়া হবে। দেশের প্রয়োজনেই ভেটেরিনারি মেডিসিন ও অ্যানিমেল সায়েন্সকে এক হতে হবে। এখানে গোড়ামি করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফারিদা আখতার।
২৯ জুন রোববার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) অ্যানিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ আয়োজিত ‘ডিনস অ্যাওয়ার্ড ও ওরিয়েন্টেশন ২০২৪’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ মাধ্যমে প্রচারের পর বিষয়টি নজরে আসে অ্যানিমেল হাজব্রেন্ড্রির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, উপদেষ্টার কাছ থেকে এমন বক্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ, প্রাণীসম্পদ উন্নয়নের পিছনে অ্যানিমেল হাজব্রেন্ড্রির গ্রাজুয়েটদের রয়েছে অক্লান্ত শ্রম। দীর্ঘদিন ধরে ভেটেরিনারি মেডিসিন ও অ্যানিমেল সায়েন্স আলাদাভাবে প্রাণীসম্পদ উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। এখন হঠাৎ করেই নতুন একটি ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া বৈষম্যের সামিল।
৩ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ উপদেষ্টা ফারিদা আখতারের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পশুপালন অনুষদের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ। পশুপালন অনুষদের ডিন অফিসের গ্যালারিতে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনিমেল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাশেম, অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান, পশুপুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-মামুন। এছাড়াও অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পশুপালন অনুষদ ছাত্র সমিতির পক্ষে জামিল হোসেন।
অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘একজন উপদেষ্টা, যিনি রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি, তার বক্তব্যে এমন বৈষম্যমূলক মনোভাব গ্রহণযোগ্য নয়। বক্তব্য দেওয়ার আগে তথ্য-প্রমাণ ও বাস্তবতা বিবেচনায় নেওয়া উচিত।’
অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই দুটি আলাদা প্রয়োজনকে সামনে রেখে ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদ চালু করা হয়। একটির মূল লক্ষ্য চিকিৎসা, অন্যটির মূল লক্ষ্য উৎপাদন। এই দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাশেম বলেন, ‘খামারে প্রাণী অসুস্থ হলে চিকিৎসা প্রয়োজন, কিন্তু সেই প্রাণী সুস্থ রাখার পেছনে বিজ্ঞানভিত্তিক উৎপাদন পদ্ধতির অবদান সবচেয়ে বেশি। এজন্য চিকিৎসা ও উৎপাদন উভয় ক্ষেত্রের শিক্ষার্থীদের সমান গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো একপক্ষকে বাদ দেওয়া মানে সমন্বিত উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা।’
উল্লেখ্য, পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ১০টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করে পশুপালন অনুষদে এসে শেষ হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available