• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ১১ই বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০২:১০:১৮ (25-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ১১ই বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০২:১০:১৮ (25-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:

সারাবাংলা

পাহাড়ে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসছে বৈসাবি উৎসব

৬ এপ্রিল ২০২৩ দুপুর ১২:৪৬:০৯

পাহাড়ে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসছে বৈসাবি উৎসব

বিপ্লব তালুকদার, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: আনন্দের বার্তা নিয়ে বছর ঘুরে পাহাড়ে আবারো এসেছে বৈসাবি উৎসব। তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান বর্ষবিদায় এবং বর্ষবরণে উদযাপন করা হয় বৈসাবি উৎসব। এই উৎসবে আনন্দে জেগে উঠে পাহাড়ে বসবাসরত মানুষ। সবুজ পাহাড়ে বসে সব সম্প্রদায়ের মিলনমেলা। ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের মাঝে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু, মারমাদের সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই এবং চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু। এই তিনটি উৎসবের প্রথম অক্ষরগুলো দিয়ে বলা হয় বৈসাবি উৎসব।

প্রাণের উচ্ছ্বাসে সবার মন মাতিয়ে মনের রঙে আর আনন্দের যুক্ত মাত্রায় পল্লীতে পল্লীতে আত্মহারা হয়ে উঠে নানা বয়সের মানুষ। অরণ্যেঘেরা সবুজ পাহাড়ে বর্ণিল ঐতিহ্যবাহী পোশাক, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিতে মানুষগুলো পালন করে বৃহত্তম এই উৎসব।

পাহাড়ে বৈসাবির আমেজকে তিন দিনব্যাপী এই উৎসবের প্রথম দিনকে চাকমারা বলে থাকেন ‘ফুল বিঝু’, দ্বিতীয় দিনকে ‘মূল বিঝু’ এবং তৃতীয় দিনকে ‘নুয়াবঝর’ বা ‘গোজ্যা পোজ্যা দিন’। আর ত্রিপুরারা প্রথম দিনকে ‘হারিকুইসুক’, দ্বিতীয় দিনকে ‘বুইসুকমা’ এবং তৃতীয় দিনকে ‘বিসিকাতাল’ নামে বলে থাকেন।

পাহাড়িরা নানা আয়োজনে উদযাপন করে তাদের সবচেয়ে বড় এই সামাজিক উৎসব। বৈসাবি উপলক্ষে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ বৈসাবি উদযাপন কমিটির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শোভাযাত্রাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। অনুষ্ঠান মালায় রয়েছে সকালে মিলিত হয়ে বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন ও ঐহিত্যবাহী রঙিন পোশাকে বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হবে।

বৈসুক : ত্রিপুরাদের ধর্মীয় এবং সামাজিক উৎসবের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় উৎসব বুইসুক বা বৈসুক। চৈত্রের শেষের দুই দিন ও নববর্ষের প্রথমদিন উদযাপন করা হয় এই উৎসব। চৈত্রের শেষ দুই দিনের প্রথম দিনকে ত্রিপুরারা ‘হারি বুইসুক’ এবং শেষ দিনকে ‘বুইসুকমা’ বলে থাকে। আর নববর্ষের প্রথম দিনকে তারা বলে ‘বিসিকাতাল’।

উৎসবের প্রথম দিন ত্রিপুরা ছেলে-মেয়েরা ফুল তোলে। ফুল দিয়ে ঘর সাজায়। কাপড় ধুয়ে পরিষ্কার করে। ঝুড়িতে ধান নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে মোরগ-মুরগিকে ছিটিয়ে দেয়। গৃহপালিত সব প্রাণি ছেড়ে দেওয়া হয় খুব ভোরে। পরিচ্ছন্ন কাপড় পরে গ্রামে ঘুরে বেড়ায় ছেলে-মেয়েরা। ছেলে-মেয়েদের বিচিত্র্য পিঠা আর বড়দের মদ ও অন্যান্য পানীয় পান করানো হয়। বৈসুক শুরুর দিন থেকে ‘গরয়া’ নৃত্য দল গ্রামের প্রতি ঘরের উঠানে নৃত্য পরিবেশন করে।

পাহাড়ে পাহাড়ে বৈসাবির আমেজ প্রত্যেক ঘরের উঠোনে ‘গরয়া’ নৃত্য শেষে শিল্পীদের মুরগির বাচ্চা, চাল প্রভৃতি দেওয়া হয়। এসব পেয়ে নৃত্যশিল্পীরা গৃহস্থকে আশীর্বাদ করেন। নৃত্য শেষে শিল্পীরা উপঢৌকন হিসেবে পাওয়া সামগ্রী দিয়ে গরয়া দেবতার পূজা করে। কোনো শিল্পী যদি একবার এই নৃত্যে অংশ নেন, তবে তাকে তিন বছর পর পর অংশ নিতে হয়। নয়তো তার অমঙ্গল এমনকি মৃত্যুও হয় বলে প্রচলিত ধারণা আছে। এই লোকনৃত্যে ১৬ জন থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ জন পর্যন্ত অংশ নিতে পারেন। এ নৃত্য দেখতে সারাদেশের শত শত সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পী পার্বত্য চট্টগ্রামে ভিড় করে।

সাংগ্রাই : বৈসাবি উৎসবের ‘সা’ অক্ষরটি অন্যতম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মারমাদের ‘সাংগ্রাই’ উৎসব থেকে নেওয়া। মারমাদের অন্যতম সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই। বছরের শেষ দুই দিন এবং নববর্ষের প্রথম দিন এ উৎসব উদযাপন করা হয়। সাংগ্রাই উৎসব উদযাপনের সময় মারমা তরুণ-তরুণীরা পিঠা বানাতে চালের গুঁড়া তৈরি করেন। এই সময় ‘জলখেলা’ হয়। সাংগ্রাই উৎসব এবং জলখেলা এখন যেন একে অন্যে সমার্থক হয়ে গেছে। এই খেলায় তরুণ-তরুণীরা একে অন্যে দিকে পানি ছুড়ে ভিজিয়ে দেন। এ ছাড়া মারমারা বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে ধর্মীয় বাণী শোনেন। চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে এই উৎসব হয়। সেজন্য সংক্রান্তি শব্দ থেকেই সাংগ্রাই শব্দটি এসেছে বলে ধারণা করা হয়।

পাহাড়ে পাহাড়ে বৈসাবির আমেজ : (বিঝু) পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে চাকমারা সংখ্যায় বেশি। এই উৎসবে সাড়া পড়ে যায় সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে। উৎসবের প্রথম দিনকে চাকমারা বলে ‘ফুলবিঝু’। এই দিন বিঝুর ফুল তোলা হয় এবং ফুল দিয়ে ঘর সাজানো হয়। পরে সে ফুল দিন শেষে ভাসিয়ে দেওয়া হয় নদীতে। বিঝুর সময় ছোট ছেলেমেয়েরা পরিচ্ছন্ন কাপড় পরে দল বেঁধে বাড়ি বাড়ি বেড়াতে যায়। তারা সবাই বয়স্কদের সম্ভাষণ করেন এবং ঘরের হাঁস-মুরগিকে ধান, চাল ছিটিয়ে খেতে দেওয়া হয়।

এই সময় ঘরে ঘরে রান্না হয় ‘পাজোন’। এটি চাকমাদের বিখ্যাত খাবার। হরেক রকম সবজি দিয়ে রান্না করা হয়। এই উৎসবে সবার প্রিয় খাবার এটি। ছেলেমেয়েরা ঘিলা খেলা, গুদু (হা-ডু-ডু) খেলায় মেতে ওঠে। তারা আকাশ প্রদীপ জ্বালায় এবং বাজি ফুটিয়ে আনন্দ করে। বয়স্করা মদ ‘জগরা’ বা ‘কাঞ্জি’ পান করেন। বিঝু উৎসবের সময় কোনো প্রাণী হত্যা করা হয় না। তবে নববর্ষের দিন মজাদার সব খাবারের আয়োজন থাকে। এই দিন ভালো কিছু খেলে সারা বছরই ভালো খাবার সম্ভাবনা থাকে বলে বিশ্বাস করেন তারা।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ



আমতলীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
২৪ এপ্রিল ২০২৪ রাত ০৮:২৮:৫৮


হিটস্ট্রোকে চরফ্যাশনে যুবকের মৃত্যু
২৪ এপ্রিল ২০২৪ রাত ০৮:১৭:৪৭



মাচায় তরমুজ চাষে স্বাবলম্বী পাবনার কৃষকরা
২৪ এপ্রিল ২০২৪ সন্ধ্যা ০৭:৫১:২৫


ধামরাইয়ে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ আদায়
২৪ এপ্রিল ২০২৪ সন্ধ্যা ০৭:২৪:০২