• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ২৯শে বৈশাখ ১৪৩২ সকাল ০৭:৫৯:৪৪ (12-May-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • সোমবার ২৯শে বৈশাখ ১৪৩২ সকাল ০৭:৫৯:৪৪ (12-May-2025)
  • - ৩৩° সে:

সারাবাংলা

নোয়াখালীতে চিকিৎসক ও সহায়ক কর্মী সংকটে ভোগান্তিতে রোগীরা

১১ মে ২০২৫ দুপুর ১২:২৮:২৮

নোয়াখালীতে চিকিৎসক ও সহায়ক কর্মী সংকটে ভোগান্তিতে রোগীরা

নোয়াখালী প্রতিনিধি: ‎নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় দুই যুগেও ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট কাটছে না। এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যার কারণে চিকিৎসা সেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ রোগী আউটডোরে সেবা নিতে আসেন এবং ৮০-৯০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন। তবে চিকিৎসক ও সেবাকর্মী সংকটে রোগীদের সেবা প্রদান কঠিন হয়ে পড়েছে সেবাকর্মীদের পক্ষে।‎

‎এছাড়া ইমারজেন্সি বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৫০ জনেরও বেশি রোগী সেবা পেতে আসলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় তারা অসহনীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া চালক না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স সেবাও পায় না রোগীরা! জেনারেটরের তেলের বরাদ্দ না থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর চলে না! এই গরমে চরম কষ্টের মধ্যে থাকতে হয় রোগীদের।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ৫৭টি পদ শূন্য রয়েছে। ১৪ জন চিকিৎসক প্রয়োজন, অথচ মাত্র ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

‎এখানে ২য়, ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদেও শূন্যতা রয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কর্মী, আয়া, মালী/সুইপার পদ শূন্য থাকায় হাসপাতালের পরিবেশ নোংরা হয়ে পড়েছে। এতে হাসপাতালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে এমনই দৃশ্য দেখা গেছে।‎

‎স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রয়েছে আধুনিক ভবন। কিন্তু আধুনিক যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক ও জনবল সংকট নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে খুড়িয়ে-খুড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ২০০৬ সালে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করা হয়।‎

‎পরবর্তীতে রোগীদের দুর্ভোগ কমাতে ২০১৭ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে উন্নীতকরণ করা হলেও সেবার মান এখনো সন্তোষজনক নয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী রোগীদের।‎

‎হাসপাতালের রোগী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে এ হাসপাতালের কার্যক্রম। নোয়াখালীর অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর মতোই এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুরুষ রোগী থেকে নারী রোগীর সংখ্যা তুলনা মূলক বেশি। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন অনেক মুমূর্ষু রোগী। অনেকে সিট না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে আছেন। ‎রোগীদের অভিযোগ, রোগ নির্ণয়ের আধুনিক যন্ত্রপাতি তেমন না থাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বাইরের ক্লিনিকে তাদেরকে যেতে হচ্ছে।‎

এখানে ডাক্তার প্রয়োজন ১৪ জন। আছেন মাত্র ৩ জন। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদসহ আরও কয়েকটি পদ সৃষ্টিই হয়নি। নেই স্টোর কিপার, অ্যাম্বুলেন্স আছে কিন্তু ড্রাইভার নেই, ফার্মাসিস্ট নেই, নেই কোনো পরিচ্ছন্নতা কর্মী কিংবা সুইপার, অফিস সহায়ক প্রয়োজন ৩ জন,আছে মাত্র ১ জন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মঞ্জুরীকৃত পদের সংখ্যা মোট ৬০টি, কর্মরত পদে রয়েছেন ৪৪ জন, শূন্য পদের সংখ্যা ১৬টি, আরও দরকার ৫৭ জন।

‎চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের মো. নজির আহমদ (৪৫) বলেন, জ্বর, পেটে ব্যথা ও বুকে ব্যথা নিয়ে অনেকদিন ধরে ভুগছি। এখানে আসার পর ডাক্তার কয়েকটি টেস্ট দিল। সেই টেস্টের প্রায় সবগুলোই বাইরে থেকে করে নিয়ে আসতে হবে। যদি বাইরে থেকেই করে নিয়ে আসতে হয় তাহলে এখানে এসে কী লাভ হলো?‎

‎বাটইয়া ইউনিয়নের জেসমিন আক্তার (৩৫) বলেন, আমার এক বছরের মেয়েকে ভর্তি করিয়েছি। বেড না পাওয়ায় বারান্দার মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। অপরিষ্কার মেঝেতে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে। অনেকগুলো ওষুধ লিখে দিয়েছে ডাক্তার। লিখে দেওয়া সেই ওষুধগুলো হাসপাতাল না পেয়ে বেশি দামে বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।

‎এখানে এক্সরে মেশিন, ইসিজি, অপারেশন থিয়েটারসহ সব ধরনের আংশিক ব্যবস্থা থাকলেও টেকনিশিয়ান ও দক্ষ জনবলের অভাবে এগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ‎তাই সাধারণ কিছু চেকআপও বাইরে থেকে করে নিয়ে আসতে হচ্ছে। শৌচাগারগুলো ব্যবহার অনুপযোগী।

‎আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফজলুল হক বাকের বলেন, চিকিৎসকসহ জনবল সংকটের চলছে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিয়মিত কার্যক্রম। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন শত শত রোগী। রোগী অনুপাতে চিকিৎসক ও জনবল স্বল্পতা রয়েছে। বর্তমানে অন্যতম সমস্যা হলো সুইপার/মালি সংকট, যার কারণে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারে সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যাগুলো সমাধান হলে স্বাস্থ্য সেবার মান আরো ভালো হবে।‎

‎কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার দেবনাথ বলেন, লোকবল সংকটেও আন্তরিকতার সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে চিকিৎসক ও জনবল সংকটের মধ্য দিয়েই পরিচালিত হচ্ছে। ‎ভালো সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কর্তৃপক্ষের ও চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে। জনবলের চাহিদাসহ আরও বেশ কিছু সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করি, সাময়িক সমস্যাগুলো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হবে এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত হবে।‎

নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি  জানান, এখানে ১ম, ২য়, ৩য় ও ‎চতুর্থ শ্রেণির পদেও শূন্যতা রয়েছে। পুরো নোয়াখালীতে ৬০ শতাংশ জনবল সংকট রয়েছে। অনেক জায়গা লোকবল সংকটের কারণে পযার্প্ত সেবা হচ্ছে না রোগীরা। কবিরহাটে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি, সরকারের নতুন নিয়োগে কবিরহাটসহ অন্যান্য উপজেলাও জনবল শূন্যতা পূরণ হবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ





কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত ৩
১১ মে ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:২৯:৪৬