নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তারা প্রায় ১৫ মিনিট ফোনে কথা বলেন।
৩০ জুন সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় টেলিফোনে উভয়ে কথা বলেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আলোচনাটি ছিল উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং গঠনমূলক, যা দুই দেশের চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে প্রতিফলিত করে।
তাদের মধ্যে ঠিক কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে মার্কিন শুল্ক পুনর্বিবেচনা চেয়ে এ বছরের ৭ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চিঠিতে ৩ মাসের জন্য ৩৭ শতাংশ শুল্ক প্রস্তাব স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে বাংলাদেশ কী কী করতে চায় তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এ নোবেল জয়ী।
চিঠিতে ড. ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা আগামী প্রান্তিকের মধ্যে আমাদের পরিকল্পনা অনুসারে কাজ শেষ করব। এসব কর্মকাণ্ডের বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শক সভার জন্য দয়া করে প্রয়োজনীয় সময় দেবেন। তাই আমি আপনাকে অনুরোধ করতে চাই যে বাংলাদেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করুন। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, আপনি আমাদের অনুরোধ রাখবেন।’
চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য এজেন্ডায় বাংলাদেশ পুরোপুরি সহায়তা করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এ দেশে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুরো বিষয়টি দেখভাল করছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
আমাদের প্রধান কর্মপন্থা হলো তুলা, গম, ভুট্টা, সয়াবিনসহ যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য আমদানি বৃদ্ধি করা। যা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের আয় ও জীবনযাত্রায় ভূমিকা রাখবে। যুক্তরাষ্ট্রের তুলার বাজারের প্রবৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশে বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করছি, যা পুরোপুরি শুল্কমুক্ত সুবিধা।’
চিঠির ভাষ্য অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশই যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর সবচেয়ে কম হারে শুল্ক আরোপ করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য ও স্ক্র্যাপের ওপর শূন্য শুল্ক অব্যাহত রাখা হবে। গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর, চিকিৎসা সামগ্রীর মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কমানো নিয়ে কাজ হচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি পণ্যের নন-ট্যারিফ বাধা দূর করা হচ্ছে। শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সহজ করতে পণ্যের মান পরীক্ষা, লেবেলিং, সনদ ইত্যাদির বিষয়ে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের স্টারলিংকের বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানান প্রধান উপদেষ্টা। এমন উদ্যোগ বেসামরিক বিমান চলাচল, সামরিক খাতসহ অগ্রসর প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন যুগের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available