নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত এখন শুধু আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয় নয়, বরং এর প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারেও। এই উত্তেজনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে চলেছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি নতুন অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
১৮ জুন বুধবার ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত। একই দিন বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেলপ্রতি ২৬ সেন্ট বা ০.৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৭৬.৭১ ডলারে। আর ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (WTI) দাম ৩৫ সেন্ট বা ০.৫ শতাংশ বেড়ে হয় ৭৫.১৯ ডলার। এর আগে মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ দাবি করেন। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আরও যুদ্ধবিমান মোতায়েনের ঘোষণা দেয়, যাতে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের প্রতিরক্ষা জোরদার করা যায়। সব মিলিয়ে এই ভূরাজনৈতিক চাপ বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ ও দামের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো হরমুজ প্রণালীতে তেল সরবরাহে বিঘ্নের আশঙ্কা। এই সমুদ্রপথ দিয়ে বিশ্বের মোট সমুদ্রবাহী তেলের এক-পঞ্চমাংশ পরিবাহিত হয়। ইরান ওপেকের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ, যা দৈনিক ৩.৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলন করে।
সংঘাতের ফলে যদি ইরানের উৎপাদন বা রপ্তানি বড় ধরনের বাধার মুখে পড়ে, তবে বাজারে তেলের দাম আরও বাড়তে পারে। যদিও ওপেক প্লাস দেশগুলোর অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতা দিয়ে তা কিছুটা মোকাবিলা করা সম্ভব বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে গত দুই সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি প্রায় ১০ ডলার বেড়েছে, যা সংকটের তীব্রতা বোঝায়।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারের নজর এখন শুধু তেলের দামে নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার দিকেও। যদি সংঘাত দ্রুত নিরসন না হয়, তবে তার প্রভাব আরও গভীরভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বব্যাপী পণ্যমূল্য, সরবরাহ শৃঙ্খলা এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে। এখন সময় দ্রুত কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজার—তেলের বাজার ও বিশ্বশান্তি দুটোই রক্ষা করতে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available