আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সাথে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে বলেছেন, কোন বিলম্ব ছাড়াই, পনেরই মে'র মধ্যেই এটি শুরু হওয়া উচিত।
১০ মে শনিবার গভীর রাতে ক্রেমলিন থেকে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন বলেছেন, ‘আমরা সিরিয়াস আলোচনা চাই... সংঘাতের মূল কারণ উপড়ে ফেলতে এবং একটি দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই শান্তির দিকে এগিয়ে যাওয়া শুরু করতে চাই।’
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁসহ ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেন সফর করে রাশিয়াকে ৩০ দিনের শর্তহীন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার আহবান জানানোর পর পুতিন এমন প্রস্তাব দিলেন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বিষয়টি নিয়ে মস্কো চিন্তা করবে বলে জানিয়েছিলেন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, 'কোনো ধরনের চাপ দেওয়া হবে নিতান্তই অর্থহীন'।
ওদিকে পুতিন তার বক্তব্যে বলেছেন, তিনি তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে আলোচনা হওয়া উচিত বলে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সেটিকে এখনো উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন নতুন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারে।
এ বিষয়ে রোববার তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ানের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন।
পুতিনের এ প্রস্তাবের বিষয়ে কিয়েভ এখনো কোন মন্তব্য করেনি।
এর আগে শনিবার ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের রাজধানীতে যান এবং সোমবার থেকেই এক মাসের যুদ্ধবিরতির জন্য মস্কোর প্রতি আহবান জানান।
ইউরোপীয় নেতাদের 'সদিচ্ছার জোটের' এক সভার পর ওই আহবান জানানো হয়। ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও পোল্যান্ডের নেতাদের পাশে এ সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও উপস্থিত ছিলেন।
তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ফোনে আলোচনার পর তাদের ঘোষণা দেন। মি. ট্রাম্প শর্তহীন যুদ্ধবিরতির বিষয়ে উদ্যোগ নেন। ইউরোপীয় নেতারা তাদের প্রস্তাব না মানলে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞার কথাও জানিয়েছেন রাশিয়াকে।
জবাবে ক্রেমলিন জানায় তারা প্রস্তাবটি বিবেচনা করছে, কিন্তু কোনো চাপের প্রতিক্রিয়ায় নয়।
সভার পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবাই এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একত্রিত হয়েছিলাম পুতিনকে আহবান জানাতে। তিনি যদি শান্তির বিষয়ে সিরিয়াস হোন, তাহলে সেটি দেখানোর সুযোগ এসেছে।’
ইউরোপীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আজ আমরা কীভাবে সত্যিকার ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা যায়, সেদিকে দৃষ্টি দিবো।’
এর কয়েক ঘণ্টা পরই পুতিন তার বক্তব্য দেন। ভিডিওতে দেখা যায়, ক্রেমলিনে একটি হলে সাংবাদিকরা জড়ো হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী নতুন অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া, পরিখা তৈরি কিংবা নতুন কমান্ড পোস্ট স্থাপনের পর আরও সশস্ত্র সংঘাতের দিকে যাওয়ার পরিবর্তে একটি দীর্ঘমেয়াদী, টেকসই শান্তির জন্য এটা আমাদের প্রথম পদক্ষেপ।’
পুতিন একই সাথে ইউক্রেনকে মস্কোর দিক থেকে দেওয়া তিনটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের জবাব দিতে ব্যর্থতার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। এগুলো হলো জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা ৩০ দিন স্থগিত রাখা, ইস্টার যুদ্ধবিরতি এবং গত মাসে পুতিনের যুদ্ধবিরতির নির্দেশ।
ইউক্রেন এর আগে বলেছে, এ সময়গুলোতেও রাশিয়ার হামলা অব্যাহত ছিলো। রাশিয়াও ইউক্রেনের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ করেছে।
পুতিন বলেন, ‘এ সব কিছু সত্ত্বেও আমরা আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দিচ্ছি কিয়েভ কর্তৃপক্ষকে, সরাসরি আলোচনা শুরু করুন এবং শর্তহীনভাবে।’
এর আগে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে অল্প সময়ের জন্য সরাসরি আলোচনা হয়েছিলো তিন বছর আগে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসন শুরুর পর। সূত্র: বিবিসি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available