• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২০শে বৈশাখ ১৪৩১ বিকাল ০৩:১৯:০৭ (03-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২০শে বৈশাখ ১৪৩১ বিকাল ০৩:১৯:০৭ (03-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

নারী উদ্যোক্তা

বুঝে শুনে উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে: নাহিদ আক্তার

৭ ডিসেম্বর ২০২৩ রাত ০৮:০১:০৩

বুঝে শুনে উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে: নাহিদ আক্তার

সফল নারী উদ্যোক্তা নাহিদ আক্তার

নাহিদ আক্তার, একজন ফ্রিল্যান্স প্রোগ্রামার, প্রযুক্তিবিষয়ক লেখক, ইন্সট্রাকশনাল ডিজাইনার ও সফল নারী উদ্যোক্তা। শুরুটা করেছিলেন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে। বর্তমানে তিনি আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেস আপওয়ার্ক-এর টপ-রেটেড প্লাস ও এক্সপার্ট-ভেটেড ফ্রিল্যান্সার। মাইক্রসফট (Microsoft), থ্রিএম (3M), ইনসাইট সফটওয়্যার (Insight Software), ডোসেবো (Docebo)’র মত ফরটুন-৫০০ (Fortune-500) তালিকাভুক্ত অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করেছেন। উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন ডিজিটাল এজেন্সি মিরাকি ইনোভেশনস লিমিটেড (Meraki Innovations Ltd.), এর মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন/ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টস সার্ভিস প্রদান করা হয়। তাঁর সফল হয়ে ওঠার নানা গল্প নিয়ে এশিয়ান টিভি অনলাইনের সাথে কথা হয় এই নারী উদ্যোক্তার। আলাপচারিতায় ছিলেন নুরুল ইসলাম।

প্রশ্ন: কখন ও কীভাবে উদ্যোক্তা হওয়ার পথ চলা শুরু হলো?

নাহিদ আক্তার: ৫ বছর সফলতার সঙ্গে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার পর দেখতে পাই, আমি যতটুকু কাজ করতে পারি তার চেয়ে অনেক বেশি কাজ আসছে। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে,এবার পরবর্তী ধাপে যাওয়ার সময় হয়েছে। তবে ব্যবসায়িক কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় আমি প্রথমে একটু দ্বিধায় ছিলাম। বিশেষ করে, আমি জানতাম না, কোথা থেকে শুরু করবো। কীভাবে একটি কোম্পানি নিবন্ধন করতে হবে, কীভাবে লোক নিয়োগ করতে হবে এবং অন্যান্য সমস্ত আইনি দিক সম্পর্কেও ধারণা ছিল না। সৌভাগ্যবশত সেই সময় আমি উদ্যোক্তা হতে ইচ্ছুক ফ্রিল্যান্সারদের প্রশিক্ষণের জন্য সরকারের একটি উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে পারি। কোর্সটির অন্যান্য সদস্য ও প্রশিক্ষকদের সঙ্গে আমি যে নেটওয়ার্কটি তৈরি করেছি, তা আমাকে সমস্ত তথ্য এবং আত্মবিশ্বাস পেতে সাহায্য করেছে।

প্রশ্ন: এ পথ চলার গল্পটা বলুন।

নাহিদ আক্তার: প্রথমে আমি আমার ননদের সাথে জুটি বেঁধে একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি শুরু করেছি। নতুন কিছু শুরু করার সময় অনেক বাধা আসে। এই ক্ষেত্রেও আমি কিছু প্রাথমিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছি। বিশেষ করে, কোম্পানি গঠনে আমাকে সাহায্য করার জন্য সঠিক এজেন্সি নির্বাচন করা, অফিস স্থাপনের জন্য একটি উপযুক্ত জায়গা খুঁজে বের করা এবং ব্যবসা চালানোর সূক্ষ্ম বিষয় বোঝা। এমনকি ছোট ছোট অনেক বিষয়, যেমন কীভাবে বিভিন্ন কাজের মূল্য নির্ধারণ করতে হয়, কীভাবে ব্যবসায়িক চুক্তি প্রস্তুত করতে হয় এবং কীভাবে একটি কর্পোরেট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সেটআপ করতে হয়; সেগুলি শিখতে হয়েছে। সৌভাগ্যবশত আমার প্রফেশনাল নেটওয়ার্কে আমার অনেক বন্ধু, পরিবারের সদস্য আমাকে নির্দেশনা এবং পরামর্শ প্রদান করার জন্য ছিল। অন্য ফ্রিল্যান্সাররাও সহায়তা করেছিল, যারা ইতোমধ্যে ব্যবসা পরিচালনা করছিলো। সম্ভাব্য প্রতিযোগী হিসাবে দেখার পরিবর্তে তারা আমাকে আন্তরিকভাবে সাহায্য করেছেন, যা দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম। আশা করি, একদিন আমিও অন্য নতুন উদ্যোক্তাদের একইভাবে সহযোগিতা করতে পারবো।

সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অংশটি ছিল, আমার কোম্পানির জন্য সঠিক লোকদের খুঁজে বের করা। কারণ, আপনার টিম হলো ব্যবসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। সঠিক লোকদের খুঁজে বের করা হল, একটি সফল ব্যবসা গড়ে তোলার চাবিকাঠি। প্রতিনিয়ত আমি আমার ব্যবসা প্রসারিত করার চেষ্টা করছি, সে কারণে সঠিক জনবল খুঁজে বের করার চ্যালেঞ্জ আমাকে এখনও ফেস করতে হচ্ছে।

প্রশ্ন: কী কী প্রতিবন্ধকতা ছিলো সেখানে?

নাহিদ আক্তার: আমরা আমাদের শুরুর দিনগুলিতে না জেনে একটি স্ক্যামার এজেন্সির কাজ নিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা এ জন্য আমাদের মনোবল হারাইনি। আমরা এটাকে একটা শিক্ষা হিসেবে নিয়েছি এবং কাজ চালিয়ে গিয়েছি। পরে আমি আমার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে খুব দ্রুতই আমি সোশ্যাল মিডিয়াতে ক্লায়েন্ট, আমাদের ওয়েবসাইট, আমার আগের ক্লায়েন্ট, সেইসাথে বন্ধু এবং পরিবারের কাছ থেকে রেফারেলের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট পেতে শুরু করেছিলাম। ধীরে ধীরে আমরা আরও বড় এবং ভালো কোম্পানির সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।

একবার ব্যবসা চালু হয়ে গেলে, আপনি সেটাকে ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে নিতে চাইবেন। আরও বেশি পরিষেবা দিতে চাইবেন এবং নিজের সক্ষমতা বাড়াতে চাইবেন। বড় অফিস, আরও কর্মচারী এবং একটি সম্পূর্ণ টিম সেটআপ প্রয়োজন হবে। এসবের জন্য বড় ফান্ডের প্রয়োজন হয়, সেটা ম্যানেজ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রশ্ন: আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে বলুন।

নাহিদ আক্তার: এখন যেহেতু আমার কোম্পানি থেকে অনেক ক্লায়েন্টকে সেবা দেওয়ার সুযোগ হচ্ছে; তাই আমি চাই, আমার কোম্পানি আরও বড় হোক। আমি আমার ক্লায়েন্টদের আরও বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা দিতে চাই। আমি আরও বিভিন্ন দিক, বিশেষ করে ডেটা সায়েন্স এবং এআই-এর ক্ষেত্রে শাখা তৈরি করতে চাই।

শিক্ষা খাতে আমার ভালো অভিজ্ঞতা আছে, তাই আমি এই সেক্টরে আরও বেশি কিছু করতে চাই। আমি কোডিং করতে এবং কেডিং শেখাতে ভালোবাসি। Scratch, Javascript, Python এবং AI-এর উপর আমার অনলাইন কোর্সগুলি অন্যান্য দেশের স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। আমি বাংলাদেশে এটি চালু করতে চাই এবং সারাদেশে স্কুলগুলির সাথে কাজ করতে চাই, যাতে আমাদের শিশুরাও একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের দক্ষ করে তোলার সুযোগ পায়।

প্রশ্ন: নতুনদের উঠে আসার ব্যাপারে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেয়ার আছে বলে মনে করেন?

নাহিদ আক্তার: তরুণ প্রজন্মের নতুন নতুন ব্যবসায়িক ধারণাকে বাস্তবে পরিণত করতে উৎসাহিত করার জন্য রাষ্ট্রের সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি আরও তরুণ-তরুণীদের উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে তুলতে চাই, তাহলে আমাদের পাঠ্যক্রমে বিজনেস স্কিল (ব্যবসায়িক দক্ষতা) যোগ করতে হবে। স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর হ্যাকাথন (Hackathon) ও এক্সিলারেটর (Accelerator) অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে, যা প্রশংসনীয়। তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সংক্ষিপ্ত কোর্সগুলিও শুরু হয়েছে। কিছু দীর্ঘমেয়াদী কোর্সসহ এই জাতীয় আরও প্রোগ্রাম শুরু করা দরকার। মেন্টরশিপের সুযোগ থাকা প্রয়োজন, যেখানে আরও অভিজ্ঞ ব্যবসার মালিকরা নতুন স্টার্টআপ মালিকদের গাইড করতে পারেন। এটি নতুনদের দৈনন্দিন ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়তা করার একটি দুর্দান্ত উপায়ও হবে।

প্রশ্ন: তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য আপনার পরামর্শ।

নাহিদ আক্তার: তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি আমার পরামর্শ হলো- বুঝে শুনে উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কীভাবে ব্যবসা শুরু করতে হবে, চালাতে হবে এবং বাড়াতে হবে; সে সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক জ্ঞান অর্জন না করে সরাসরি ঝাঁপিয়ে পড়ার চেষ্টা করবেন না। এছাড়াও নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করা বন্ধ করবেন না। তাহলেই সফলতা আসবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ







এসএসসির ফল প্রকাশ আগামী ১২ মে
৩ মে ২০২৪ দুপুর ১২:৩০:৫৭