• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২০শে আষাঢ় ১৪৩২ দুপুর ০২:০৪:০৭ (04-Jul-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২০শে আষাঢ় ১৪৩২ দুপুর ০২:০৪:০৭ (04-Jul-2025)
  • - ৩৩° সে:

অপরাধ

পঞ্চগড়ে ৬০২টি মাতৃত্বকালীন ভাতার একাউন্ট ‘হ্যাক’, আর্থিক সহায়তা বঞ্চিত গর্ভবতীরা

৩ জুলাই ২০২৫ সকাল ০৯:১৪:৪৮

পঞ্চগড়ে ৬০২টি মাতৃত্বকালীন ভাতার একাউন্ট ‘হ্যাক’, আর্থিক সহায়তা বঞ্চিত গর্ভবতীরা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: সরকারি সহযোগিতা ছিল আশীর্বাদস্বরূপ। গর্ভবতী ও প্রসূতি নারীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা যেন তাদের জীবনে কিছুটা স্বস্তি আনে, এই উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছিল মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ। কিন্তু সেই অর্থ পৌঁছায়নি অনেকের কাছে। বরং কারো কারো একাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে গেছে টাকা। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে যেন ‘দালাল সিন্ডিকেট’ এক অভিনব প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছে শত শত নারীকে।

পঞ্চগড় জেলায় মোট ৬০২ জন মাতৃত্বকালীন ভাতা সুবিধাভোগী নারীর মোবাইল ব্যাংকিং (নগদ) একাউন্ট ‘হ্যাক’ হয়ে গেছে। এর ফলে তারা সরকার নির্ধারিত আর্থিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার নারী উপকারভোগীরা, এ উপজেলায় ভাতা পাননি ৫৭৭ জন। এছাড়া বোদা উপজেলায় ২২ জন এবং দেবীগঞ্জ উপজেলায় ৩ জন নারী এমন ভুক্তভোগীর তালিকায় রয়েছেন।

সদরের কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গৃহবধূ রিফাত জাহান নিশি বলেন, ‘গত রোজার ঈদের আগেই শেষবার টাকা পাইছি। এরপরে আর কিছুই আসে না। মেম্বারকে বললে বলেন, আসবে টাকা। কিন্তু মাস পার হয়ে গেলেও কিছু আসছে না।’

একই ইউনিয়নের আফরোজা বেগম বলেন, ‘আমি মাত্র তিন কিস্তির টাকা পেয়েছি। তারপর হঠাৎ বন্ধ। ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখি, আমার নাম ঠিক আছে, কিন্তু নগদ একাউন্ট নম্বর বদলে গেছে। কে কীভাবে এটা করলো বুঝি না।’

অনেকে দোকানে গিয়ে ভাতা তোলার চেষ্টা করে দেখেছেন একাউন্টে কিছুই নেই। পরে উপজেলা বা ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, ভাতা তাদের নামে গেলেও টাকা গেছে অন্য নম্বরে।

জেলার নারী অধিকারকর্মী লায়লা আনজুমান্দবানু মুক্তি বলেন, ‘একজন দরিদ্র গর্ভবতী নারীর ভাতা টাকা কৌশলে অন্য একাউন্টে নেওয়া, এটা কেবল প্রতারণা নয়, এটা মানবিক অপরাধও বটে। রাষ্ট্রীয় অর্থে হস্তক্ষেপ এবং গর্ভবতী নারীদের এমন শোষণ চরম অমানবিক।’

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, দ্রুত বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও বাড়বে।

জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ.কে.এম. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘সদরের কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নে ঘটনাটি প্রথম ধরা পড়ে। দেখা যায়, উপকারভোগীদের নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সঠিক থাকলেও নগদ নম্বর ছিল অন্য কারো। এভাবে ৬০২ জন নারীর ভাতার টাকা অন্য নাম্বারে গেছে।’

তিনি আরও জানান, ‘বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। উপকারভোগীদের নতুন করে যাচাই-বাছাই চলছে। প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন ৮ জুলাইয়ের মধ্যে হ্যাক হওয়া সকল একাউন্টের সঠিক তথ্য পুনরায় জমা দেওয়ার জন্য। এরপর সংশোধিত মোবাইল নম্বরে টাকা প্রেরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

উপ-পরিচালক বলেন, “অনেক উপকারভোগী নিজেরাই জানেন না, তারা একাউন্ট হ্যাকের শিকার হয়েছেন কি না। অধিকাংশই প্রযুক্তি বিষয়ে অজ্ঞ। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যক্তি দালালের মতো ভূমিকা নিয়ে ভিন্ন নাম্বার বসিয়েছে এবং সেই ভাতা লোপাট করেছে।’

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ



৩৫ ভাষায় শোনা যাবে মক্কার জুমার খুতবা
৪ জুলাই ২০২৫ দুপুর ১২:১৩:৫৬