আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে একটি ধর্মীয় ফতোয়া জারি করেছেন ইরানের শীর্ষ শিয়া ধর্মীয় নেতা আলাতুল্লাহ নাসের মাকারেম শিরাজি।
৩০ জুন সোমবার নিউ ইয়র্ক সানের বরাত দিয়ে ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ফতোয়ায় ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুকে ‘আল্লাহর শত্রু’ আখ্যা দিয়ে মুসলিম বিশ্বকে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
আয়াতুল্লাহ নাসের মাকারেম শিরাজি তার ফতোয়ায় বলেন, ‘যেকোনো ব্যক্তি বা শাসক বিশ্বব্যাপী ইসলামী নেতা বা শীর্ষ ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে হুমকি দেয়, তাকে ‘যুদ্ধবাজ’ বা ‘মোহারেব’ হিসেবে বিবেচিত হবে।’
ইসলামী আইনে ‘মোহারেব’ শব্দটি এমন ব্যক্তির জন্য ব্যবহৃত হয়, যে আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ইরানি আইন অনুযায়ী, যারা সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তাদের শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড, শূলবিদ্ধকরণ, অঙ্গচ্ছেদ অথবা নির্বাসন।
ফতোয়ায় আরও বলা হয়, ‘এই শত্রুদের সঙ্গে মুসলিম বা কোনো ইসলামী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা বা সমর্থন অবৈধ এবং নিষিদ্ধ। সকল মুসলমানের উচিত এই শত্রুদের কথাবার্তা ও কাজের জন্য তাদেরকে অনুতপ্ত করা।’
যুদ্ধবিরতির পর এক সাক্ষাৎকারে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ জানান, ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাতের সময় দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল ইসরাইলের, তবে সেই সুযোগ তারা পাননি।
ইসরাইলি টেলিভিশন চ্যানেল ১৩-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে কাৎজ আরও বলেন, আমরা খামেনিকে নির্মূল করতে চেয়েছিলাম, যদি আমরা তাকে দেখতে পেতাম, তাহলে আমরা তাকে শেষ করে দিতাম।
এছাড়া দুই দেশের সংঘাতের সময় ১৭ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও খামেনিকে হত্যার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা ভালোভাবেই জানি তথাকথিত 'সর্বোচ্চ নেতা' কোথায় লুকিয়ে আছেন। তিনি একটি সহজ লক্ষ্য, তবে আপাতত নিরাপদ রয়েছেন, আমরা এখনই তাকে হত্যা করছি না। অন্তত এখনই নয়।’
১৩ জুন থেকে ১২ দিনব্যাপী এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয় ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে। ইরানে বোমা হামলা চালিয়ে দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করে ইসরাইল। জবাবে তেহরান ইসরাইলের শহরগুলোতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
এক পর্যায়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরাইলের হামলার সঙ্গে যোগ দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তেহরান পাল্টা জবাবে কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলাও চালায়। এরপর ২৪ জুন কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতে সম্মত হয় ইরান ও ইসরাইল।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available