• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ২৩শে বৈশাখ ১৪৩২ রাত ০৮:০০:০৯ (06-May-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ২৩শে বৈশাখ ১৪৩২ রাত ০৮:০০:০৯ (06-May-2025)
  • - ৩৩° সে:

তথ্য ও প্রযুক্তি

বাড়ছে এআই’র অপব্যবহার, ঘটছে প্রাণহানির মত ঘটনা

৬ মে ২০২৫ বিকাল ০৪:৪২:১৯

বাড়ছে এআই’র অপব্যবহার, ঘটছে প্রাণহানির মত ঘটনা

শাফি উদ্দিন আহমদ: ‘প্রথমবার টকশোতে শেখ হাসিনা ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস’, সম্প্রতি এমন ক্যাপশনে সামাজিক মাধ্যমে বেশ কয়েকটি টকশোর ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে। এমন ক্যাপশন দেখে অনেকেই বিশ্বাস করে সেটি শেয়ারও করেছে। আর এভাবে ক্লিপগুলো সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে প্রবাসী জনপ্রিয় সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে কখনো স্ক্রিনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখানো হয়েছে। আবার আর একটি ভিডিওতে পতিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ড. ইউনূসকে দেখানো হয়েছে। তবে এসব অনুষ্ঠানে শুধু ড. ইউনূসকে একাই কথা বলতে দেখা গেছে। বাকি দুজন চুপ থেকেছেন। সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অতিথি করে একটি টকশো করেন খালেদ মহিউদ্দিন। সেই টকশোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)’র মাধ্যমে জুড়ে দেওয়া হয়েছে খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে।

গত ৬ এপ্রিল এআই প্রযুক্তির শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের সিদ্দিক আলীর মেয়ে সুলতানা পারভীন ওরফে সোহা (২৩)। তার স্বজনদের অভিযোগ, ১০ মাস আগে জাপান প্রবাসী আশরাফুল ইসলাম অনিকের সঙ্গে বিয়ে হয় সোহার। অনিকের বোনের স্বামী পর্তুগাল প্রবাসী  মোহাম্মদ নাহিন শেখ এ বিয়ে মেনে নেননি। তাই তিনি পরিকল্পিতভাবে এআই ব্যবহার করে সুলতানার ছবি দিয়ে  তৈরি করেন আপত্তিকর ভিডিও। সেই ভিডিও একটি ফেক আইডি থেকে ছড়িয়ে দেন তিনি। প্রথমে সুলতানাকে এবং পরে তার স্বামী অনিককেও পাঠানো হয় সেই ভিডিও। মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন সোহা। অবশ্য পরে জানা যায়, ভিডিওটি ভুয়া এবং এআই দিয়ে তৈরি।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দাবি করে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি বাস্তব নয়; এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি।

আবার অন্তর্র্বতী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসিফ নজরুলের সঙ্গে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের এ ছবিটি বাস্তব নয়। সালমান মুক্তাদির ও দিশা ইসলাম যুগলের ছবিতে আসিফ নজরুল ও বাঁধনের মুখমন্ডল প্রতিস্থাপন করে এআই-এর মাধ্যমে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

এভাবেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার ভালো কাজের পাশাপাশি নেতিবাচক কাজেও বাড়ছে দিন দিন। বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তি, অপতথ্য ও গুজব ছড়ানোর অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে ‘এআই’। প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় ব্যবহারকারীদের হাতে হাতে পৌঁছে গেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ফলে শুধু একটি স্মার্টফোন দিয়েই খুব নিখুঁতভাবে তৈরি করছে ফেক ছবি ও ভিডিও কনটেন্ট। আর এসব ভুয়া ছবি ও কনটেন্ট সহজেই বিশ্বাস করে সামাজিক মাধ্যমে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করছে প্রযুক্তি সম্পর্কে কম জানা ব্যবহারকারীরা। ফলে সামাজিক মাধ্যমে বাড়ছে অস্থিরতা।

প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, ২০১৮ সালে জেনারেটিভ এআইয়ের ব্যবহার শুরু হলেও গত ছয় মাসে এর ভয়াবহতা অনেক  বেড়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, প্রযুক্তির উন্নতির ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার অনেক বেড়েছে। ডিপফেক ভিডিও তৈরির সব টুলস হাতের নাগালে থাকায় এআইয়ের অপব্যবহার বহুলাংশে বেড়েছে।

এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা, যেখানে মেশিন বা সফটওয়্যারকে মানুষের মতো চিন্তা, শেখা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়। এটি ডেটা বিশ্লেষণ, প্যাটার্ন শনাক্তকরণ, ভাষা প্রক্রিয়াকরণ এবং সমস্যা সমাধানের মতো কাজে ব্যবহৃত হয়। এআই মূলত ডেটা থেকে শেখে। এআই দিয়ে   ডিপফেক ভিডিও তৈরি করে সামাজিকমাধ্যমে এমনভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা খালি চোখে দেখে বোঝার উপায় নেই  কোনটা আসল আর কোনটা নকল। সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউবে এমন কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যা বিচার বিশ্লেষণ না করেই সমানে শেয়ার করছেন ব্যবহারকারীরা। আর এসব কারণে সৃষ্ট দ্ব›দ্ব-সংঘাতে অনেক ক্ষেত্রে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।

ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের সিনিয়র ফ্যাক্টচেকার তানভীর মাহতাব আবীর বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডিপফেক প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের পরিমাণ বেড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২১ এপ্রিল পর্যন্ত রিউমর স্ক্যানার ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ১০১৩টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে ৪১টিই এআই দিয়ে তৈরি করা ভুয়া কনটেন্ট। এ ছাড়া ডিপফেক প্রযুক্তির ব্যবহার হয়েছে এমন কনটেন্ট শনাক্ত হয়েছে ১০টি।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ