নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্রিকেট ট্যুরিজম ঘিরে যেন এ দেশের পর্যটন খাতকে আরও উন্নত করা যায়, সেটিই মূল লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্টস এডভাইজার কমিটির উপদেষ্টা ক্রীড়া সংগঠক মো. শাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট। দেশে একাধিক আইসিসি বৈশ্বিক আসর হওয়ায় এ খাতে আরও বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন এবং কর্মসংস্থান দুটোই সম্ভব। এটাকেই মূল চিন্তায় নিয়ে ক্রিকেট ও অন্যান্য ক্রীড়াকে নিয়ে কিভাবে বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে আরও গতিশীল করা যায় সেটা নিয়ে বিস্তৃতভাবে কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের যে সব অঞ্চল বিদেশি পর্যটক বান্ধব সেসব জায়গায় বিশেষ করে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনা এসব বিভাগীয় শহরগুলোতে সামনের দিনে যেসব খেলা হবে, সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোকে ট্যুর প্ল্যানের অংশ হিসেবে সংযোগ করানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এতে করে অভ্যন্তরীণ আয়ের উৎস যেভাবে বাড়বে, বিদেশি পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জীবনাচার ক্রিকেট ট্যুরিজমের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা আরো সহজ হবে। এতে খেলার সঙ্গে এ দেশের ঐতিহ্য এবং অতীত নিয়েও জানতে পারবে পুরো দুনিয়া।
বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কাছে নিজের পরিকল্পনা সাজিয়ে পরিবেশন করার কথা জানিয়ে শাখাওয়াত বলেন, সামনে ক্রিকেট ট্যুরিজম ঘিরে যাতে এ দেশের পর্যটন খাত আরও উন্নত হয় সেটিই আমার মূল লক্ষ্য।
বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টার পাশাপাশি তিনি ইউনিক হোটেল এন্ড রিসোর্টসের প্রধান নির্বাহী এবং ভোলা জেলার ক্রীড়া সংগঠক।
গত বৃহস্পতিবার বিসিবি পরিচালকদের সভায় তিনজনকে এডভাইজার কমিটিতে মনোনীত করেন। তাদের মধ্যে শাখাওয়াত হোসেন মনোনীত হয়েছেন। অপর দুইজন হলেন- সৈয়দ আবিদ হোসেন সামী ও ব্যারিষ্টার শাইখ মাহাদী। এদের মধ্য থেকে পর্যটন খাত বিশেষজ্ঞ শাখাওয়াত হোসেনেক ক্রিকেট পর্যটন উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন দেশের পর্যটন উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেছেন। এই অঙ্গনে জাতীয় ও আন্তজার্তিক পর্যায়ে পুরষ্কার পেয়েছেন।
শুরু থেকেই তিনি ক্রিকেটের সঙ্গে ছিলেন। নিয়মিত খেলাটার সঙ্গে আছেন। কর্পোরেট বড় দুটি ক্রিকেট আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা হিসেবে মো. শাখাওয়াত হোসেন গত কয়েক বছর যে সফলতা দেখিয়েছেন, তা নজর কাড়বে যে কারো। সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতির উপদেষ্টা হওয়ার পরিচয়ের আগেই হোটেল ও পর্যটন ব্যবসার সাফল্য তাকে বসিয়েছে অনেক উঁচু আসনে।
ভোলায় জন্ম নেয়া এই কর্পোরেট ব্যক্তিত্বের আছে নিজস্ব ক্ষেত্রেও দারুণ সাফল্য। শাখাওয়াত হোসেন এ দেশের পর্যটন খাত ও হোটেল নিয়ে শুধু কাজই করেন না, তিনি এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন এককভাবেই। যে কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্য দুটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর কাছ থেকে এ বিষয়ে জ্ঞানার্জন করছেন শতশত শিক্ষার্থী। দেশের মূল জিডিপি থেকে প্রায় চার ভাগ (৩.৯৮) শতাংশ যে আয় আসে সেটি আরো বাড়িয়ে নেয়ার জন্য তিনি চেষ্টা করছেন নতুন নতুন উদ্ভাবনী সব ধারণা ব্যবহারের মধ্য দিয়ে।
বিশ্বে বিভিন্ন প্রান্তে বড় বড় ক্রীড়া ইভেন্ট যেমন অলিম্পিক, ফুটবল বিশ্বকাপ কিংবা ঘরের পাশে ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় দেখা যায় সেখানে অঞ্চল ভেদে ওই ক্রীড়াযজ্ঞকে ঘিরে চলে ব্যাপক পরিবর্তন। যা জীবনমানে রেখে যায় দীর্ঘমেয়াদে উন্নতির ছাপ। সে কারণেই আধুনিক হোটেল ম্যানেজমেন্টে স্পোর্টস ট্যুরিজম দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
নিজের জন্মস্থানেও ক্রিকেটের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন বেশ বড় একটা সময়। এ সঙ্গে যোগ হয়েছে সফলভাবে দুটি বিহা (বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন) টুর্নামেন্ট। সদ্য সমাপ্ত আসরে ৫১টি হোটেল থেকে প্রধান ২০টি হোটেল অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও বাংলাদেশ হাউসকিপার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে স্বতন্ত্র আরও একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নিয়মিত আয়োজন করে আসছেন এই গুণী কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব।
আগামী দিনে তার হাত ধরে পর্যটন ও বাংলাদেশের ক্রিকেট আরো একটা ধাপ উঁচুতে পৌঁছে যাবে, এ আশা করতেই পারে সংশ্লিষ্টরা। শাখাওয়াত হোসেনের চাওয়া একটাই, নতুনভাবে বাংলাদেশের ইতিবাচক ছবি পুরো বিশ্বের কাছে ছড়িয়ে দেয়া। যেখানে ক্রিকেট ট্যুরিজম শব্দটাও জায়গা করে নেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।
শাখাওয়াত হোসেন হসপিটালিটি ও পর্যটন শিল্পে ২০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। যার মধ্যে ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনায় ডক্টর অফ ফিলোসফি (পিএইচডি) করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স অফ ফিলোসফি (এমফিল) এবং এমবিএ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একজন উজ্জ্বল প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে স্বীকৃত।
তিনি বাংলাদেশের আতিথেয়তা ও পর্যটন শিল্পের একজন স্বনামধন্য পেশাদার ব্যক্তিত্ব। তার কর্মজীবনে বাংলাদেশের বিভিন্ন নামীদামী হোটেলে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। সর্বোপরি, তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার শক্তিশালী নেতৃত্বের দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। প্রতিযোগীদের শক্তি, অর্থনৈতিক প্রবণতা, সরবরাহ এবং চাহিদা সহ সামগ্রিক বাজার সম্পর্কে তার সুদৃঢ় জ্ঞান রয়েছে।
তিনি ওয়েস্টিন ঢাকাকে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় হোটেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে অপরিসীম অবদান রেখেছেন এবং এখন তিনি ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস পিএলসিকে সাফল্যের উচ্চ স্তরে নিয়ে যাওয়ার যাত্রা শুরু করেছেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের একজন অ্যাডজাংক্ট ফ্যাকাল্টি।
শাখাওয়াত হোসেন একমাত্র বাংলাদেশি হসপিটালিটি ব্যক্তিত্ব যিনি একজন শিল্প বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক। যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পিএইচডি করছেন এবং একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে স্বীকৃত। বাংলাদেশের একমাত্র হোটেল ব্যবসায়ী যিনি তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একেবারে প্রাথমিক স্তরে এবং এখন একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির অধীনে ৩টি কার্যকরী এবং ৩টি আসন্ন আন্তর্জাতিক হোটেল দেখাশোনা করেন।
দীর্ঘ কর্মজীবনে শাখাওয়াত হোসেন অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে- সাউথ এশিয়ান ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ড (SATA) ২০২৪-এ দক্ষিণ এশিয়ার পর্যটন মুখ। ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ কর্তৃক TITA-তে বাংলাদেশের আতিথেয়তা পেশাদার (২০২৪)। হোটেল ইন্ডাস্ট্রি আর্কিটেকচার, ইন্টেরিয়রস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনফারেন্স ২০২৪-এ "বাংলাদেশের সেরা হোটেলিয়ার"বিজনেস আমেরিকা কর্তৃক ২০২৩-এ আন্তর্জাতিক ব্যবসা শ্রেষ্ঠত্ব পুরস্কারে বর্ষসেরা সেরা আতিথেয়তা ব্যবসায় পেশাদার। লিডার্স ফোরাম বিডি কর্তৃক ২০২২-এ লিডারশিপ এক্সিলেন্স সামিট-এ আতিথেয়তা এবং পর্যটন নেতৃত্ব পুরস্কার। সাপ্তাহিক অর্থকণ্ঠ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা সেরা আতিথেয়তা ব্যবসায় পেশাদার ফেডারেশন অফ হসপিটালিটি, কর্তৃক আয়োজিত ৭ম আন্তর্জাতিক ব্যবসা জিনিয়াস বাংলাদেশ - ২০২২-এর আইকন অফ দ্য হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড ২০২২ ট্যুরিজম অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট (FoHTEM)। এশিয়ান কারি অ্যাওয়ার্ড ২০২১-এ বিজয়ী - এশিয়ান ক্যাটারিং ফেডারেশন, যুক্তরাজ্য কর্তৃক প্রদত্ত একটি একচেটিয়া আন্তর্জাতিক সম্মাননা।
এছাড়াও তিনি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত, যার মধ্যে রয়েছে- সদস্য, পর্যটন মাস্টারপ্ল্যান মূল্যায়ন কমিটি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় (MOCAT), গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (BIHA) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন স্থায়ী কমিটি। প্রধান উপদেষ্টা, শেফস ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ (CFB)। পরিচালক, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্প দক্ষতা কাউন্সিল (ISC), বাংলাদেশ। সদস্য, ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (DCCI) বাংলাদেশ। তিনি বাংলাদেশ ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি সিলেবাস কমিটির মেম্বার। পরিচালক, ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম নেটওয়ার্ক (WTN) ঢাকা চ্যাপ্টার। সহকর্মী সদস্য, বাংলাদেশ সোসাইটি ফর হিউম্যান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট (BSHRM)। অবৈতনিক পরামর্শদাতা, ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ। কারিকুলাম কমিটির সদস্য, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ। কারিকুলাম কমিটির সদস্য, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কারিকুলাম কমিটির সদস্য, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available