বরিশাল প্রতিনিধি: সম্প্রতি বরিশালে প্রায় ১০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ প্রদান করা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আবেদনকারীদের রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। গত ৩০ মে শুক্রবার লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ একাধিক পরীক্ষার্থী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে ১ জুন এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও করেছেন।
লিখিত নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতি, ঘুস গ্রহণ, নিয়ম বহির্ভূত সুযোগ-সুবিধা প্রদান, পরীক্ষার হলে মোবাইল ব্যবহার ও অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগ করেন আবেদনকারীরা।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, স্বাস্থ্য সহকারী পরীক্ষার আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর থেকেই নানা বিষয়ে সন্দেহ হচ্ছিল তাদের। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর তাদের এই সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। কেননা, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেছে নানা অনিয়ম ও ভুলে ভরা।
তাদের অভিযোগ, বরিশালের সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহায়তায় লিখিত পরীক্ষায় প্রকাশ্যে নকলসহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে। তারা এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন যেন পরীক্ষাটি পুনরায় সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযোগে পরীক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর ও ২০২৫ সালের ৮ এপ্রিল জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বরিশাল সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে ‘স্বাস্থ্য সহকারী‘ পদে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন।
গত ৩০ মে শুক্রবার বরিশালের স্কুল ও কলেজে নিয়োগ পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যারা ঘুসের বিনিময়ে কর্তৃপক্ষের একটি অংশকে ম্যানেজ করেছিল তারা একজন অন্যজনের সহযোগিতায় পরীক্ষায় প্রকাশ্যে নকল করেছেন। বরিশাল কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রশ্নের উত্তর দেখে লিখেছেন অনেকে। এসময় সাধারণ পরীক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে তাদের হল থেকে বের করে দেয়া, লাঞ্ছিত করার হুমকি দিলে সবাই তাৎক্ষণিক চুপ থাকতে বাধ্য হয়। পরীক্ষা গ্রহণের একদিন অতিবাহিত হওয়ার পর ই ফলাফল প্রকাশিত হওয়ায় জনমনে সন্দেহ আরও বেড়ে যায়।
অভিযোগকারীদের মধ্যে একজন পরীক্ষার্থী শাহাদাত হোসাইন বলেন, ‘আমার এবার চাকরির বয়স শেষ। খুব আশায় ছিলাম, এ সরকারের আমলে নিরপেক্ষ পরীক্ষা হবে। কিন্তু এত দুর্নীতি আর নকল হয়েছে হলে, তা চিন্তা করার মতো না। আমরা প্রধান উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাসহ স্বাস্থ্যের ডিজির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যেন পরীক্ষাটি নতুন করে নেন তারা।’
পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ও দুর্নীতির বিষয়ে বরিশালের সিভিন সিভিল সার্জন ডা. এস.এম. মনজুর-এ-এলাহী বলেন, ‘পরীক্ষা সম্পূর্ণ ফ্রেস পদ্ধতিতে এবং নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার সাথে নেয়া হয়েছে। পরীক্ষায় অনিয়ম, দুর্নীতি বা ঘুস গ্রহণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।’
একই সুরে সুর মিলিয়েছেন বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডাক্তার শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল। তিনি জানান, ‘বরিশালের আমাকে যারা চিনেন জানেন, তারা সবাই জানেন আমি কোনো প্রকার অনিয়ম কিংবা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available