রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চারটি ইউনিয়নের লাখো মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হাজী সৈয়দ আলী সড়কের শিলক বুহ্যচক্রহাট এলাকার দুইশত ফুট অংশ দেবে গেছে। কর্ণফুলী নদীর তীব্র ভাঙনে ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সড়কসহ আশপাশের ৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বহু ঘরবাড়ি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার।
৩০ জুলাই বুধবার বিকালে স্থানীয়রা লাল পতাকা টাঙিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে শিলক—কোদালা সড়ক যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে যা দেখা গেছে: সাম্প্রতিক টানা বৃষ্টিতে শিলক বুহ্যচক্রহাট বাজারের পূর্ব পাশে, পোস্ট মাস্টার সিদুল বাড়ির কাছে, সড়কের দুইশত ফুট অংশ দেবে যায়। নদীপাড়ে ব্লক না থাকায় সেখানে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে তৈরি হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ ফাঁদ। তবু প্রতিদিন ওই অংশ দিয়েই চলছে যানবাহন, স্কুল—কলেজগামী শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। কাপ্তাই হ্রদ থেকে অতিরিক্ত পানি ছাড়া হলে রাতারাতি সড়ক ধসে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও নদীপারের বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলোও হুমকির মুখে, যেগুলো পড়ে গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিপাকে পড়বেন হাজারো গ্রাহক।
কেন ঘটছে এই বিপদ: স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নদীপাড়ে ব্লক স্থাপন করা হলেও মাঝখানের দুইশত মিটার অংশে কোনো প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আর এখানেই দেখা দিয়েছে ভাঙন। বছরের পর বছর ধরে আশঙ্কার কথা জানালেও কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি।
ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্বেগ: স্থানীয় বাসিন্দা লিয়াকত আলী বলেন, এই সড়কই দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার শিলক, কোদালা ও সরফভাটা ইউনিয়নের মানুষের প্রধান চলাচলের পথ। চন্দ্রঘোনার ফেরি বন্ধ থাকলে রাজস্থলী বা বান্দরবানের যোগাযোগের একমাত্র পথ এটাই।"
শিলক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোকাররম হোসেন চৌধুরী বলেন, সড়কের আশপাশেই আছে ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিলক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাদ্রাসা, শতাধিক পরিবার। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সবকিছু নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
বুহ্যচক্রহাট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হাসান চৌধুরী বলেন, দুইশত ফুটের মধ্যে ইতিমধ্যেই দুই-তৃতীয়াংশ ধসে গেছে। তাই লাল পতাকা দিয়ে ভারী যান চলাচল বন্ধ করেছি।
প্রশাসনের উদ্যোগ: শিলক ৮ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. নুরুন্নবী জানান, এটি এলজিইডির সড়ক, আর নদী অংশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের। দুই দপ্তরে বহুবার ধরনা দিয়েছি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বালির বস্তা ও টিনের বেড়া দিয়েও রক্ষা করা যায়নি।"
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান জানান, বিষয়টি জানার পর পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তাৎক্ষণিকভাবে সংস্কারের অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রকৌশলীরা সরেজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, জরুরি ভিত্তিতে এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হবে। বর্ষা শেষে স্থায়ীভাবে ব্লক স্থাপন করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available