• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ৪ঠা আষাঢ় ১৪৩২ সন্ধ্যা ০৬:৫১:৪৩ (18-Jun-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বুধবার ৪ঠা আষাঢ় ১৪৩২ সন্ধ্যা ০৬:৫১:৪৩ (18-Jun-2025)
  • - ৩৩° সে:

সারাবাংলা

চোখে দেখেন না, মেডিকেল বোর্ডে অযোগ্য তারপরও তিনি সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার

১৮ জুন ২০২৫ সকাল ১১:৫৭:৩৭

চোখে দেখেন না, মেডিকেল বোর্ডে অযোগ্য তারপরও তিনি সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: নিজে চোখে দেখেন না। মুমূর্ষু রোগী নিয়ে বার বার পড়েন সড়ক দুর্ঘটনায়। ক্ষতি সাধন করেছেন রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এঘটনায় ১৩ বার শোকজ ও কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। তারপরও মেডিকেল বোর্ডে অযোগ্য ঘোষিত সেই ড্রাইভার সরকারি হাসপাতালের গাড়ি চালক হিসেবে কর্মরত আছেন।

ভাগ্যবান এই অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারের নাম বকুল মিয়া। তিনি ঝিনাইদহ, কালীগঞ্জ ও শৈলকুপার সরকারি হাসপাতালে ড্রাইভার পদে চাকরি করলেও দায়িত্ব পালন করেন তার ছেলে মিল্টন ও মিলন।

এ নিয়ে ড্রাইভার বকুল মিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষী সাব্যস্ত হলেও তার কোনো শাস্তি হয়নি। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুন তার দপ্তরের ২০/২৩ নং স্মারকে ড্রাইভার বকুল মিয়ার বিরুদ্ধে নিজে অ্যাম্বুলেন্স না চালিয়ে বহিরাগতদের দিয়ে চালানোর অভিযোগ এনে চিঠি দেন।

২০২১ সালে শৈলকুপা হগাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটি আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের নিয়ে কুষ্টিয়ার গিয়ে আটক হয়। গাড়িটি ড্রাইভার বকুল মিয়ার ছেলে মিল্টন নিয়ে যায়। ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর অ্যাম্বুলেন্সটি কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ফেরৎ পাঠায়।

২০২৪ সালে কালীগঞ্জ হাসপাতালে বদলী করা হলে ড্রাইভার বকুল মিয়া কর্তৃপক্ষের ছুটি ছাড়াই বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতেন। ওই বছরের ৫ মার্চ ১৭৯ নং স্মারকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর হোসেন তাকে শোকজ করেন। কিন্তু তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।

২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল ড্রাইভার বকুল মিয়াকে কালীগঞ্জ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য যশোর পাঠালে তিনি ঝিনাইদহে এসে রাত্রিযাপন করেন। পরবর্তীতে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর হোসেন কারণ জিজ্ঞসা করলে ড্রাইভার বকুল অসাদাচারণ করে রুম থেকে বেরিয়ে যান। এ ঘটনায় ৩২০, ৩১০, ২৩ ও ৭৮১ ও ৬৯৪ নং স্মারকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও প্রদান করা হলেও তিনি চরম ঔদ্ধত্য দেখান। এরপর তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে বদলী করা হয়।

ঝিনাইদহ আড়াই’শ বেড হাসপাতালে ২০২৪ সালের ১০ জুন বদলী হয়ে এসে নিজে না চালিয়ে বহিরাগতদের দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালাতে থাকেন। বিষয়টি জানতে পেরে ওই বছরের ২৩ জুন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম খুলনা বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক বরাবর অবগতি করে পত্র পাঠান। এরপরও ড্রাইভার বকুল নিজে গাড়ি না চালিয়ে বহিরাগতদের দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালাচ্ছেন।

ঝিনাইদহ আড়াই’শ শয্যা হাসপাতালের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স কালীগঞ্জ উপজেলার দুলাল মুন্দিয়া নামক স্থানে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এ ঘটনায় ড্রাইভার বকুল মিয়ার বিরুদ্ধে তিন সদস্য বিশষ্টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে ওই কমিটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ড্রাইভার বকুল মিয়াকে অযোগ্য ঘোষণা করে ৩১ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. গুলশান আরা লিমা, ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডা. মো. নাঈম সিদ্দিকী ও মেডিকেল অফিসার ডা. রাজিব চক্রবর্তী ওই তদন্ত প্রতিবেদনে সাক্ষর করেন।

এ বিষয়ে ড্রাইভার বকুল মিয়া বহিরাগতদের দিয়ে গাড়ি চালানোর কথা স্বীকার করে জানান, তিনি অসুস্থ থাকায় মাঝেমধ্যে তার ছেলে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢাকায় যান।    

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. কামরুজ্জামান জানান, অভিযোগ থাকায় তাকে শৈলকুপায় বদলী করা হয়েছে। এরপরও তিনি যদি নিজে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভিং না করেন তবে তার বিরুদ্ধে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ