বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া আমিনা হাসপাতালে এক হৃদয়বিদারক ও বিরল ঘটনার জন্ম হয়েছে। ৩০ মে শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে চার পা, চার হাত এবং দুই মাথা নিয়ে জোড়া লাগানো জমজ কন্যা শিশুর জন্ম দেন বাগাতিপাড়া উপজেলার চন্দ্রখৈল গ্রামের গৃহবধূ জরুফা খাতুন (২৪)। তবে জন্মের সময় দু’শিশুই মৃত ছিল।
প্রসূতির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে জরুফা খাতুন প্রসব ব্যথা নিয়ে বনপাড়া আমিনা হাসপাতালে ভর্তি হন। আলট্রাসনোগ্রাফি করার পর চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হন গর্ভে জমজ সন্তান রয়েছে। পরদিন স্বাভাবিকভাবেই জন্ম নেয় এই ব্যতিক্রমী শিশুদ্বয়।
দেখা যায়, দুই শিশুর মাথা থেকে বুক ও পেট পর্যন্ত জোড়া লাগানো ছিলো। চারটি পা স্বতন্ত্র থাকলেও চার হাত ছিলো পরস্পর জড়ানো, যেন গর্ভাবস্থায়ও একে অপরকে জড়িয়ে রেখেছিল। তাদের জন্মের সময় ওজন ছিলো খুবই কম এবং শরীরে অপরিপক্বতার লক্ষণ ছিল স্পষ্ট।
মা জরুফা খাতুন বলেন, ‘আমার গর্ভকালে ৭ মাস ২৮ দিনেই প্রসব বেদনা শুরু হয়। আলট্রাসনোগ্রাফিতে জমজ দেখালেও এমন জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম হবে, তা কল্পনাও করিনি। মনে হচ্ছে জন্মের কিছু সময় আগেই তারা মারা গেছে।’
জানা গেছে, এটি তাদের দ্বিতীয় সন্তান। প্রথম সন্তান, একটি কন্যা, বর্তমানে সাত বছর বয়সী।
আমিনা হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও চিকিৎসক ডা. আনছারুল হক বলেন, ‘এ ধরনের জোড়া লাগানো শিশুর জন্ম আমরা বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখে থাকি। অনেক ক্ষেত্রে জীবিত জন্ম নিলে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে আলাদা করার চেষ্টা করা হয়। তবে এই শিশুরা ইম্যাচিউরড ছিল এবং মৃত অবস্থায় জন্ম নিয়েছে বলে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ ছিল না।’
এ ধরনের জোড়া শিশুর জন্ম চিকিৎসা বিজ্ঞানে ‘কনজয়েনড টুইনস’ নামে পরিচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভধারণের প্রথম দিকে বিভাজনে জটিলতা দেখা দিলে এমনটি ঘটতে পারে। বিশ্বে প্রতি ৫০,০০০ জন্মে গড়ে একবার এমন ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হয়।
এই বিরল ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা হাসপাতালে ছুটে এসে শিশুটিকে এক নজর দেখার চেষ্টা করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available