• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১ ভোর ০৪:০৬:২৩ (12-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১ ভোর ০৪:০৬:২৩ (12-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

বেইলি রোডে নিহত নারী সাংবাদিকের মরদেহ পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মায়ের আবেদন

৩ মার্চ ২০২৪ সকাল ১১:২০:২০

বেইলি রোডে নিহত নারী সাংবাদিকের মরদেহ পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মায়ের আবেদন

খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত নারী সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী তথা বৃষ্টি খাতুনের মা বিউটি বেগম প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার মেয়ের মরদেহ হস্তান্তরের দাবি করেছেন।

কুষ্টিয়ার খোকসার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বনগ্রাম পশ্চিম পাড়ায় বৃষ্টির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এখনো শোকের মাতম চলছে। বৃষ্টির দুইবোন, মা ও এলাকাবাসী বৃষ্টির মরদেহের প্রতীক্ষায় রয়েছেন তীর্থের কাকের মতো। এদিকে ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া মরদেহ হস্তান্তর না হওয়ার সংবাদে শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বৃষ্টির মা ও দুই বোন।

বৃষ্টির মা বিউটি বেগম বলেন, বৃষ্টিকে তিনি গর্ভে ধারণ করেছেন। বৃষ্টি, ঝর্ণা ও বর্ষা তিন সন্তানের মধ্যে বৃষ্টি বড়। বৃষ্টি বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত এবং ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে এসএসসি পর্যন্ত বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। এরপর ঢাকা ইউনিভার্সিটিসহ কয়েকটি ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে পরবর্তীতে ইডেন মহিলা কলেজে ভর্তি হয়। জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম নিবন্ধন, প্রবেশপত্র সব বের করে সামনে দিলে দেখা যায় প্রতিটিতে বৃষ্টি খাতুন, পিতা সবুজ শেখ ও মাতা বিউটি বেগম লেখা আছে। বৃষ্টি খাতুনের ৭ম শ্রেণিতে পড়াকালে তার নিজহাতে ডায়েরিতে লেখা  জীবনবৃত্তান্ত উল্লেখ রয়েছে সেটি বের করে দেখান।

তিনি জানান, ২৯ ফেব্রুয়ারি মোবাইলে বৃষ্টির সাথে তার শেষ কথা হয় সকাল ১১টার দিকে। বৃষ্টি জানায় মিটিং শেষ করেছে এবং তার আরও কিছু কাজ বাকী আছে, বাসায় ফিরে কথা বলবে। এর পর তার ফোন আর আসেনি। পরের দিন তার ননদের ছেলে রেজোয়ান মোবাইল ফোনে বৃষ্টির খোঁজ নিতে বলে এবং তিনি খোঁজ নিয়ে বৃষ্টির মৃত্যুর খবর পান। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বৃষ্টির মরদেহ হস্তান্তরের দাবি জানান।

বৃষ্টির খালাতো বোন জানান, বৃষ্টিকে ফোন দিলে জানায়, আপু, আমি ব্যাস্ত আছি। নাম পরিবর্তন করে ফেসবুক চালানো বা ধর্ম পরিবর্তনের বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। তবে ৪ মাস আগে বৃষ্টি বাড়িতে আসলে নামাজ পড়াসহ সবকিছু স্বাভাবিক ছিলো।

বৃষ্টির বান্ধবী শারমিন আক্তার জানান, তিনি বৃষ্টির সাথে ১০ বছর পড়ালেখা করেছেন। ইতিপূর্বে নামাজ রোজা উভয়ই একসাথে করেছেন। বৃষ্টির ধর্ম পরিবর্তনের কোনো খবর তিনিও জানেন না।

বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল মজিদ জানান, বৃষ্টি এই গ্রামেরই মেয়ে এবং মুসলিম পরিবারেই তার জন্ম। সে হিন্দু হয়েছে বা নাম পরিবর্তন করেছে এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। তবে তিনি ধারণা করছেন, পেশাগত কাজের ক্ষেত্রে বৃষ্টি নাম পরিবর্তন করতে পারেন। চার মাস আগে তার সাথে বৃষ্টির দেখা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।

মেট্রোরেলে কর্মরত বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ মোবাইল ফোনে জানান, ডিএনএ পরীক্ষার পর তার মেয়ের মরদেহ দেওয়া হবে এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে রমনা থানা থেকে ক্লিয়ারেন্স দিলে হয়তো বৃষ্টির মরদেহ নিয়ে খোকসা গ্রামের বাড়ি যেতে পারবেন।

খোকসা থানার ওসি আন-নূর যায়েদ জানান, ডিএনএ পরীক্ষার পর বৃষ্টির মরদেহ তার পরিবারের কাছে দেওয়া হবে এমন সংবাদ পেয়েছেন। তিনি সরেজমিন গিয়ে বৃষ্টির বাড়িতে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

জানা যায়, ফেসবুক প্রোফাইল ও সাংবাদিকতায় অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামধারী অনলাইন পোর্টাল দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সাবেক সাংবাদিক ঢাকা বেইলি রোডে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর পর মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় পরিচয়সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়। তারা বাবা সবুজ শেখ মেয়ের মরদেহ গ্রহণ করতে গেলে ঢাকার রমনা কালিমন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা অভিশ্রুতি শাস্ত্রীকে হিন্দু দাবি করেন এবং মরদেহ তার মুসলিম পিতার কাছে প্রদানে বাধা সৃষ্টি করেন।

ঢাকার রমনা কালীমন্দিরের সভাপতির পক্ষ থেকে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং জেলা প্রশাসক বরাবর করা আবেদনে নিহত অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, তার সমাধানে ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর প্রমাণিত হলে মরদেহ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা যায়। 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ