• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০১:০৬:৪৫ (07-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০১:০৬:৪৫ (07-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় ধসে মৃত্যুঝুঁকিতে ১০ হাজার পরিবার

১৩ আগস্ট ২০২৩ রাত ০৮:০৮:৫৭

রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় ধসে মৃত্যুঝুঁকিতে ১০ হাজার পরিবার

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় ধসের কারনে মৃত্যুঝুঁকিতে বসবাস করছে অন্তত ১০ হাজার পরিবার।  ইতিমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে পাহাড় ধসের ঘটনায় ২৭টি কাঁচা ঘর বিদ্ধস্ত হয়েছে। রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় ইতোমধ্যে উপজেলার অনেক ইউনিয়নের সাথেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। পাহাড় ধসের আশঙ্কায় আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার পোমরা, বেতাগী, পৌরসভার বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চল, চন্দ্রঘোনার বনগ্রাম, সরফভাটা, শিলক, পদুয়া, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, পারুয়া, হোছনাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন প্রায় ১০ হাজার পরিবার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু এতেও পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সরছেন না বসবাসকারীর।

পারুয়া ইউনিয়নের জঙ্গল পারুয়া এলাকায় পাহাড়ে ঘেষে বসবাসকারী আব্দুল কাদের জানান, পাহাড়ের পাশ থেকে আমাদের মেম্বার বিভিন্ন সময় মাইকিং করে সরে যেতে বলেছে। কিন্তু আমরা গরিব অসহায়, তাই ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়ে এখানেই থাকতে হচ্ছে। আমরা দিনমজুরের কাজ করি, তাই অন্যকোথাও গিয়ে যে ঘড় বানাবো সে সামর্থ আমাদের নেই।

চন্দ্রঘোনা বনগ্রাম কলাবাইজ্জা ঘোনা এলাকার বাসিন্দা নাছিমা আক্তার জানান, অনেকদিন থেকে আমরা পাহাড়ের নিচে ঘর করে থাকছি। এখানেই আমাদের সবকিছু, আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। পাহাড় ধসে দুর্ঘনটা ঘটতে পারে বলে তাকে জানানো হলে তিনি বলেন, মৃত্যু আসলে সব জায়গাতেই আসবে। সরকার যদি আমাদের অন্য কোথাও থাকার জায়গা করে দেয় তাহলে আমরা এখানথেকে চলে যেতে রাজি আছি। মাইকিং করে আমদের বাড়িঘড় ছাড়তে বললেও আমরা যাবো কোথায়? আমাদের তো যাওয়ার কোন জায়গা নেই!

রাজানগরের বগাবিলী এলাকায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী দিনমজুর আব্দুর রহমান জানান, আমি দিন মজুরের কাজ করি, দিন আনি দিন খাই। এখানে পাহাড়ের নিচে কোনমতে ঘর করে থাকছি। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও কি করবো? কোথায় যাব ? নতুন জায়গা কিনে ঘর বানানো বা ঘড় ভাড়া নেয়ার মত সামর্থ আমার নেই। সরকার যদি আমাদের মতো যারা আছে তাদের নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে তাহলে আমরা এ জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি আছি।

বেতাগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যন মো. শফিউল আলম জানান, আমি নিজে পাহাড়ে গিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝাচ্ছি। তাদের সরে আসতে অনুরোধ করছি, মাইকিং করছি। ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পাহাড়ের মানুষদের সচেতন করার কার্যক্রম চালাচ্ছি।

চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। এসব এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। এদের কেউ কেউ সরে গেলেও অধিকাংশই মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গনি ওসমানী জানান, রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন ইউয়িনে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে কাজ করছে প্রশাসন। দিন-রাত বিভিন্ন স্পটে গিয়ে ও ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে আসতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের সচেতন করতে মাইকিংসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যহত আছে। সরকারিভাবে উপজেলায় কোন আশ্রয়নকেন্দ্র না থাকায় আপাতত নিকটস্থ স্কুল-কলেজ ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৩ জুন উপজেলার ২২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এর পরেও পাহাড়ে বসবাসকারীদের কোনভাবেই সরানো যাচ্ছে না।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ