জাবি সংবাদদাতা: পচন ধরলে গন্ধ লুকিয়ে রাখা যায় না, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসনও পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সিনেট সদস্য ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দীন।
১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্ত্বরে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’ আয়োজিত নিপীড়ন বিরোধী সংহতি সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনায় উত্তপ্ত ক্যাম্পাস। এরই মধ্যে বের হয়ে আসছে মাদকের মত জঘন্য ঘটনাও। এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাই ক্ষুব্ধ।
এমন ঘটনা তৈরি হয়েছে পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোর বিচার না হওয়ার কারণে, এমনটি জানিয়ে ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দীন বলেন, বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্বিদ্যালয়ের চিত্র এমন হতে পারে না। প্রশাসনের ব্যর্থতা আরও ভালোবাবে প্রমাণিত হয়েছে, মাদক ও যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলোর মাধ্যমে। সুশীল সমাজের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। আমরা যদি এসব ঘটানর বিচারের মাধ্যমে আমাদের অবস্থা প্রমাণ করতে পারি, তবেই কেবল বিশ্ববিদয়ালের ভাবমূর্তি পুনরায় উদ্ধার হবে। প্রশাসন যে আই আই ওয়াশ করছে, প্রতিবাদে তা ভেসে যাবে। পঁচন ধরলে গন্ধ লুকিয়ে রাখা যায় না, জবি প্রশাসনও পারেনি। পারনে নি মাদকের মত জঘন্য বিষয়টিও চাপা দিয়ে রাখতে।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ডে গোটা দেশবাসীর সামনে আমরা লজ্জিত। মনঞ্জুরি কমিশন, র্যাবসহ সবাই বলেছে, এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। আমাদের সহকর্মীর বিচারই হয় না! স্ট্রকচার্ড কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরও বিচার আটকে আছে উপাচার্যের হাতে। আর এসব ঘটনাই ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজে সাহস জোগায়।
তিনি আরও বলেন, সাবেক শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জায়গা করে দিতে হবে। গণরুমে পড়ার কোন পরিবেশ থাকে না। বিশেষ করে ছাত্ররা বেশি সংকটে পড়ে, তাদের পড়াশোনার পরিবেশ ভালো না থাকার কারণে তাদের রেজাল্টও ভালো হয় না।
সমাবেশে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিমসহ আরও অনেক সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, সমাবেশেটি ৫ টি দাবি নিয়ে হয়েছিল, সেগুলো হলো- ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে, নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিষ্পত্তি করাসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্টের অপরাধ তদন্ত করতে হবে এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে হবে এবং মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে, জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণাপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available