• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ সকাল ০৬:১০:২০ (20-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • সোমবার ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ সকাল ০৬:১০:২০ (20-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

মতামত

প্রতিষ্ঠার ১০ বছর সময়কাল: দেশীয় বিমানসংস্থার জন্য ‘অশনি’ না ‘শুভ’ সংকেত!

৮ মে ২০২৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৭:০৯

প্রতিষ্ঠার ১০ বছর সময়কাল: দেশীয় বিমানসংস্থার জন্য ‘অশনি’ না ‘শুভ’ সংকেত!

মো. কামরুল ইসলাম: দশ বছর খুব কি বেশী সময় এভিয়েশনের কিংবা এয়ারলাইন্সের ইতিহাস বলার জন্য? কিন্তু বাংলাদেশ এভিয়েশনের জন্য ১০ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা মাইলফলক হয়ে আছে। এই সময়টা সাফল্যের সঙ্গে অতিক্রম করতে পেরেছে কয়টি এয়ারলাইন্স? যার ফলাফল খুঁজতেই বাংলাদেশ এভিয়েশনের ছোট্ট অধ্যায়ের পাতা উল্টালেই খুব বেশী সুখকর স্মৃতি খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্মৃতির পাতায় মোড়ানো বাংলাদেশ এভিয়েশনের ইতিহাসে দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর ১০ বছর সময়কাল কি ‘অশনি না শুভ সংকেত’ তা বোঝার চেষ্টা করেছি।

বাংলাদেশ এভিয়েশনে উত্থান আর পতনের মধ্য দিয়েই অগ্রসর হওয়ার গল্প লুকিয়ে আছে। এক ঘন্টার আন্তর্জাতিক ফ্লাইট করে এসে ২ থেকে ৩ ঘণ্টার অপেক্ষা লাগেজের জন্য, নয়টার প্লেন কয়টায় যাবে যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা, এয়ারক্রাফট এসি নাকি নন-এসি, ফ্লাইট আদৌ যাবে তো ইত্যাদি ইত্যাদি, যা হরহামেশা শুনা যেত যাত্রীদের কাছ থেকে। সেই সব বাক্যগুলো আজ ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। আর সেই বাক্যগুলোকে ইতিহাসের পাতায় স্থান দিতে সহায়তা করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

আজ বাংলাদেশ এভিয়েশনের প্রায় ৫২ বছরের গল্প, যেখানে সুখকর গল্পের স্থান খুবই সামান্য। প্রাইভেট এয়ারলাইন্সের ইতিহাস তো আরও নাজুক। জিএমজি, ইউনাইটেড, রিজেন্ট, বেস্ট এয়ারের মতো প্রায় ৮ থেকে ৯টি এয়ারলাইন্স বন্ধ হওয়ার মিছিলে যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে মাত্র তিনটি বেসরকারি বিমানসংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও এয়ারঅ্যাস্ট্রা জাতীয় বিমানসংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে বাংলাদেশে আকাশ পরিবহন ব্যবসায় জড়িয়ে আছে।

১০ বছর সময়কাল বাংলাদেশের বেসরকারি বিমানসংস্থার জন্য অনেকটা চ্যালেঞ্জিং বছর। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ১০ বছর অতিক্রমকালীন সময়ে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। জিএমজি এয়ারলাইন্স ১০ বছর পর ব্যবসায় নিম্নমূখী প্রবণতা দেখা গেছে, যা ১৪ বছরের সময় একেবারেই বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বর্তমানে নভোএয়ার ১১ বছরের অধিক সময়কাল অতিক্রম করছে।

পরিকল্পনা আর বাস্তবায়নকে সাথে নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু করার পর থেকেই ব্যবসা থেকে সেবাকেই প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে ইউএস-বাংলা। ইতোমধ্যে যাত্রীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ১৭ জুলাই ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে ১০ বছর সময় অতিক্রম করছে। যাত্রা শুরুর পর থেকে দেশের মানুষকে আকাশ পথে সেবা দেয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলো। সেই প্রতিজ্ঞাকে বাস্তবে রূপ দিতেই ইউএস-বাংলা প্রতিনিয়ত কাজ করছে। লক্ষ্য একটাই সেবার মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকরা বিশ্বের যেসকল গন্তব্যে অবস্থান করছে, দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছে, সেই সকল রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সেবা দেয়ার মানসে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রতিমূহুর্তে বিমানবহরে নতুন নতুন উড়োজাহাজ যোগ করছে, যোগ করছে দেশের নাগরিকদের কাছে আকর্ষণীয় সকল গন্তব্য।

বেশ কিছু রুট পরিচালনার জন্য ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সকে বাংলাদেশ এভিয়েশন সব সময়ই মনে রাখবে। বিশেষ করে ভারতের চেন্নাই, চীনের গুয়াংজু, মালদ্বীপের রাজধানী মালে রুটগুলো অন্যতম। যেখানে জাতীয় বিমানসংস্থাও পরিকল্পনা সাজাতে পারেনি, সেখানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাস্তব রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে। ইউএস-বাংলাকে অনুসরণ করে অন্য এয়ারলাইন্সগুলো সেইসব রুটে ফ্লাইট শুরু করেছে। কিন্তু মালেতে দেশীয় একমাত্র ইউএস-বাংলাই ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এছাড়া কলকাতা, দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি, মাস্কাট, দোহা, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, ব্যাংকক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ১৫ মিলিয়ন প্রবাসী বাংলাদেশীরা অবস্থান করছে, যার মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ প্রবাসী তথা রেমিট্যান্স যোদ্ধারা বাস করছে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, ওমান, কাতার, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালদ্বীপ। উল্লেখিত প্রতিটি দেশেই ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। সম্প্রতি সৌদি আরবের জেদ্দায় ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে।

২টি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলার বহরে বর্তমানে রয়েছে ৪৩৬ আসন বিশিষ্ট দুইটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০, নয়টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, দশটি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ ও তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট। এখানে উল্লেখ্য সংখ্যার বিচারে দেশের সরববৃহৎ এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ রুটে সর্বপ্রথম ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফট দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

দেশের এভিয়েশনের অগ্রযাত্রায়, বেকার সমস্যা দূরীকরণে, অর্থনীতির চালিকা শক্তিতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছে।

প্রতিষ্ঠার ১০ বছর সময়কাল যেন বাংলাদেশ এভিয়েশনে বেসরকারি বিমানসংস্থাগুলো নিকট অশনি সংকেত না হয়ে শুভ সংকেত রূপে স্থায়ী হয়, তা সকলের কাম্য।

লেখক: মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ), ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ