• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২৫শে বৈশাখ ১৪৩২ রাত ০২:৫৯:৫৪ (09-May-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২৫শে বৈশাখ ১৪৩২ রাত ০২:৫৯:৫৪ (09-May-2025)
  • - ৩৩° সে:

তথ্য ও প্রযুক্তি

ইনোভেশন কনক্লেভের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ এআই সামিট ও হ্যাকাথন

৯ মে ২০২৫ রাত ১২:৫৭:১০

ইনোভেশন কনক্লেভের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ এআই সামিট ও হ্যাকাথন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের আয়োজনে ৮ মে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ এআই সামিট। আকিজ রিসোর্স ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির পৃষ্ঠপোষকতা এবং ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই আয়োজনটি বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের একটি ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ।

এই সম্মেলনটি একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ, টেক ও এআই বিশেষজ্ঞ,  নীতিনির্ধারক ও উদ্ভাবকদের একত্রিত করে। বিশেষজ্ঞ আলোচকেরা এআই প্রযুক্তির ব্যবহার, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অভিজ্ঞতা, উদ্ভাবন এবং এআই প্রযুক্তির জোরালো সম্ভাবনা নিয়ে পারস্পরিক ও এককভাবে আলোচনা করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন খাতের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা, এবং বাংলাদেশে এআই ট্যালেন্ট তৈরির একটি শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তোলার সম্ভাব্য সুযোগ নিয়েও এই সামিটে আলোচনা হয়।

এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হলো একটি সমন্বিত জাতীয় এআই কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সহায়তা করা— যার মধ্যে রয়েছে এআই-এর সম্ভাবনা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, সরকার, বেসরকারি খাত ও একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা, দক্ষ এআই পেশাজীবীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নীতিগত দিকনির্দেশনা তৈরির পথ তৈরি করা।

সামিটের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের ডিন মোহাম্মদ মুজিবুল হক। এরপর উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম এবং বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন আর শুধু প্রযুক্তির বিষয় নয়—এটি আমাদের জীবনের প্রতিটি খাতকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। শিল্পকারখানা থেকে শুরু করে কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শিক্ষা, প্রশাসন থেকে দৈনন্দিন জীবন—সবখানেই এআই এনে দিচ্ছে দ্রুত সমাধান, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও অগ্রগতির অশেষ সম্ভাবনা। তবে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি আমাদের বড় একটি দায়িত্বও রয়েছে— এর সচেতন ব্যবহারসহ , সবার অংশগ্রহণের দিকটিও আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আজকের এই সম্মেলন কেবল একটি আলোচনা নয়—এটি ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরির একটি সম্মিলিত প্রয়াস। সামিটের পাশাপাশি আমরা  হ্যাকাথন আয়োজনেও সক্ষম হয়েছি। এই আয়োজনে দেশের তরুণ উদ্ভাবকেরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ কিছু খাতের জন্য এআই ভিত্তিক সমাধান তৈরীতে বুদ্ধিদীপ্ত কাজ করেছে।”

প্রধান অতিথি হিসেবে আয়োজনটির উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুধু একটি প্রযুক্তি নয়—এটি সময়ের সবচেয়ে বড় রূপান্তরমূলক শক্তি। আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি এক বৈশ্বিক পরিবর্তনের সন্ধিক্ষণে, যেখানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—আমরা কি কেবল প্রযুক্তির অনুসারী হব, নাকি এর পথপ্রদর্শক? এই সামিট আমাদের সেই ভাবনার দিগন্ত খুলে দিয়েছে। বাংলাদেশ এখন শুধু এআই গ্রহণ করতে চায় না, নেতৃত্ব দিতেও প্রস্তুত। সরকার, শিল্প, শিক্ষাব্যবস্থা এবং স্টার্টআপদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এমন একটি পথ তৈরি করতে চাই, যেখানে প্রযুক্তি হবে সমান সুযোগের ভিত্তি। দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন—এই তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ হতে পারে বৈশ্বিক এআই অগ্রযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর।”

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী। তিনি বলেন, “এই প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা একত্রিত হয়ে কেবল জ্ঞান বিনিময় করেননি—তারা আমাদের সামনে খুলে দিয়েছেন এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার। এই আলোচনা আমাদের বুঝতে শিখিয়েছে, এআই একদিকে যেমন বিশাল সুযোগ এনে দিচ্ছে, অন্যদিকে তেমন কিছু গভীর চ্যালেঞ্জও সামনে আনছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি হচ্ছে—এই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা নির্ভর করছে আমাদের আজকের সিদ্ধান্তের ওপর। এআই এখন আর শুধু ভবিষ্যতের বিষয় নয়, এটি এখন আমাদের জীবনের অংশ। এখনই আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়—

আমরা কি এআই-কে ব্যবহার করব সবার জন্য, নাকি এটাকে হতে দেব বৈষম্যের মাধ্যম? আমাদের কাজই ঠিক করে দেবে, প্রযুক্তির এই অপার সম্ভাবনার সুষ্ঠ ব্যবহারে কিভাবে জনজীবনে কল্যান বয়ে আনতে পারে।”

৪টি কি-নোট সেশন, ২টি প্যানেল আলোচনা, ৫টি ইনসাইট সেশন, ২টি কেস স্টাডি ও ১টি ফায়ারসাইড চ্যাট নিয়ে বাংলাদেশ এআই সামিট সাজানো হয়। পাশাপাশি ৫টি ব্রেকআউট সেশনে বিশেষজ্ঞরা শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, ফিনটেক ও শিল্পখাতে এআই অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক আলোচনা করেন।

আয়োজনটির কি নোট আলোচনায় উঠে এসেছে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গঠনে এআই-এর ভূমিকা, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এআই-এর অগ্রগতি এবং বাংলাদেশের সম্ভাবনা,  পরিবর্তিত এআই পরিস্থিতি মোকাবিলায় উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর করণীয় এবং কৃষি, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নের মতো খাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্ভাবনের শক্তিকে কাজে লাগানোর মতো প্রাসঙিক বিষয়াবলি।

এসব আলোচনায় নেতৃত্ব দেন মাইক্রোসফটের (বাংলাদেশ, নেপাল, অ্যান্ড ভুটান) ম্যানেজিং ডিরেক্টর এমডি ইউসুফ ফারুক, প্রফেসর খন্দকার এ. মামুন, কামাল কান্ত, মেহনাজ তাবাসসুম এবং সাইফ আহমেদ।

প্যানেল আলোচনায় বক্তারা জাতীয় উন্নয়ন ও নৈতিক নীতি প্রণয়ন এবং আর্থিক সেবার পরিধি বৃদ্ধিতে এআই এর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। অন্যান্য আলোচনায় প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠে  এআই-এর বর্তমান বাস্তবতা, কৃষি রূপান্তর, কমিউনিটি ক্ষমতায়ন, ব্যবসা উদ্ভাবন, এবং নৈতিক প্রযুক্তি ডিজাইনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার বিষয়গুলো। এছাড়াও শিক্ষাখাতে এআই এর মাধ্যমে সহজলভ্য শিক্ষার সুযোগ তৈরিসহ এআই-এর কারণে উদ্ভূত নৈতিক চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে গোপনীয়তা ও ক্ষমতার ভারসাম্যের মতো বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার সমাপনী অধিবেশনে সামাজিক উন্নয়ন ও বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকেন্দ্রীকরণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

সামিটে বক্তা হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, ফাহিম মাশরুর, রাহাত আহমেদ, ইয়াসির আজমান, মাহমুদ হোসেন,  মুহাম্মদ আব্দুল মতিন ইমন, মোহাম্মদ ওলি আহাদ, লুসিয়ানো ফ্লোরিডি, এম মনজুর মাহমুদ, ওসমান এরশাদ ফয়েজ, সাব্বির আহমেদ, খালিদ হোসাইন, শামস জামান, কৃষ ব্যানার্জি, সাদিক সাইয়েদ, শাহির চৌধুরী, ফ্রেডেরিক স্কল এবং অন্যান্যরা।

এই সামিটে একই সাথে বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের আরেকটি যুগান্তকারী উদ্যোগ এআই হ্যাকাথনের বিজয়ীদের সম্মাননাও প্রদান করা হয়।  সিটি ম্যানেজমেন্ট, ম্যানুফ্যাকচারিং, এডুকেশন, এগ্রিকালচার, ফিনটেক এবং হেলথকেয়ার, এই ৬টি খাতে ৬টি উদ্ভাবনী এআই সমাধানকে এই সম্মাননাটি প্রদান করা হয়েছে। এই সময় ৬টি খাতের প্রতিটির বিজয়ী দলকে ১ লক্ষ টাকার সম্মাননা প্রদান করা হয়।

মেশিন মাইন্ডসেট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে হ্যাকাথন বিজয়ী হয়েছে। কিউআরএআরজি  মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) থেকে হেলথকেয়ার সেক্টরে, রানটাইম টেররস ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি থেকে ফিনটেক সেক্টরে, কোড ফার্মারস ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি সেক্টরে, টিম গ্লাইডার্স বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে সিটি প্রবলেম সেক্টরে, এবং বুরাক রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) থেকে শিক্ষা সেক্টরে পুরস্কার জিতেছে।

বাংলাদেশে নগর এবং খাতভিত্তিক সমস্যাগুলোর সমাধানে এআই-চালিত প্রযুক্তি তৈরি করার উদ্দেশ্য নিয়ে ১০ মার্চ এআই হ্যাকাথনের যাত্রা শুরু হয় । এই প্রতিযোগিতায়  ৭০টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৭৭টি দল অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে থেকে ৩১টি টিমকে ১৬ এপ্রিল শর্টলিস্ট করা হয়। এই টিমগুলো ১৭ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত তাদের প্রোটোটাইপ নিয়ে কাজ করে। পরবর্তীতে ৬ ও ৭ মে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত দুই দিনের বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীরা ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টদের থেকে মেন্টরশিপ গ্রহণ করে  এবং চূড়ান্ত প্রদর্শনীতে তাদের  সমাধান উপস্থাপন করে। অভিজ্ঞ জুরি বোর্ডের কঠোর মূল্যায়নের মাধ্যমে বিজয়ী দলগুলো নির্বাচন করা হয়।

বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ এআই সামিট এবং এআই হ্যাকাথন আকিজ রিসোর্স ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির পৃষ্ঠপোষকতা এবং ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আয়োজনটির স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার  ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট, রিভ চ্যাট, ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি বাংলাদেশ পিলসি; মার্কেটিং সোসাইটি অব বাংলাদেশ, ন্যামকন, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভারটাইজিং অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ। অফিসিয়াল ক্যারিয়ার পার্টনার টার্কিস এয়ারলাইনস। রিফ্রেশমেন্ট পার্টনার প্রাণ  এবং পিআর পার্টনার ব্যাকপেজ পিআর। সামিট ও হ্যাকাথন দুইটি বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ









ঘোড়াঘাটে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
৮ মে ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:২৩:১৬