নিউজ ডেস্ক: স্ত্রীকে ‘পরকীয়া থেকে ফেরাতে না পেরে’ ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় ঝালকাঠি ছাত্রলীগের সহসভাপতি আলী ইমাম খান অনুকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। ১৫ মে সোমবার ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানা যায়।
এতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানানো যাচ্ছে যে, আলী ইমাম খান অনুকে (সহসভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঝালকাঠি জেলা শাখা) তার কৃতকর্মের কারণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।
জানা গেছে, আলী ইমাম খান অনু (৩০) শহরের ইছানীল (৭নং ওয়ার্ড) এলাকার দিদার হোসেন খানের ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগ সহসভাপতি। আর নিহত সায়মা পারভিন (২০) এ বছর ঝালকাঠি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তার বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার নৈকাঠি এলাকায়, বাবার নাম শাহাদাত তালুকদার।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর আলী ইমাম খান অনু একই এলাকার সায়মা পারভীনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের তিন মাসেই সায়মা পারভীন তার এক নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সায়মা পারভীনের আচরণ সন্দেহজনক হলে স্বামী আলী ইমাম অনু তার ফেসবুক মেসেঞ্জার চেক করেন। সেখানে অন্য এক যুবকের সঙ্গে তার স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি ও কথোপকথন দেখতে পান।
এনিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হলে একপর্যায়ে সায়মা পারভীন তার বাবার বাড়ি চলে যান। সায়মা পারভীন তার স্বামী আলী ইমাম অনুকে বেশি বাড়াবাড়ি করলে নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করার হুমকি দেন। এতে অনু ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার করার পরিকল্পনা করেন। সোমবার ঝালকাঠি সদরের ইকোপার্ক-সংলগ্ন এলাকায় তাকে পেয়ে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে নিজের ফেসবুক আইডিতে একাধিক পোস্ট দিয়ে পুরো বিষয়টি শেয়ার করেন। ঘাতক আলী ইমাম অনু বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
নিহত সায়মার বাবা শাহাদাত হোসেন তালুকদার বলেন, আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহিতুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর অনু নিজেই থানায় এসে আত্মসমর্পন করেন। তাকে নিয়ে পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। সুরতহাল রিপোর্টে মরদেহের পেটে দুটি ও বুকে একটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনু নিজেই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জানিয়েছে, পরকীয়ার কারণে তিনি একাই স্ত্রীকে হত্যা করেছেন। তবে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় নিহতের ব্যাগ তল্লাশি করে একটি নতুন চাকুও উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2023, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available