নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের সময় পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রের খোঁজ দিলে সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কার দেওয়া বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
১০ আগস্ট রোববার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিংকালে এমনটা জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রিজাইডিং অফিসারের সুরক্ষায় এবার নির্বাচনে হাতিয়ারসহ একজন আনসার সদস্য থাকবেন। আর প্রতিটি কেন্দ্রে এবার হাতিয়ারসহ তিনজন আনসার সদস্য থাকবেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে আনসার সদস্যরা। অনেক সময় প্রিজাইডিং অফিসারদের ওপরও হামলার ঘটনা দেখা যায়, এজন্য আমরা হাতিয়ারসহ উনার জন্য একজন গার্ড ব্যবস্থা করছি।
নির্বাচনে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, বডি ক্যাম কেনা হচ্ছে। কোন কেন্দ্রে কোন ধরনের ঘটনা ঘটছে, সেটি জেলার সাংবাদিকরাও দেখতে পাবেন। নির্বাচনে কোনো অরাজকতা হবে না। এমন নির্বাচন করে যেতে চাচ্ছি, যেন চলে যাওয়ার পর মানুষ প্রশংসা করে।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই নয়, যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন, তারাও কেমন নির্বাচন চাচ্ছেন- সেটিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, জনগণ কীভাবে ভোট চাচ্ছেন, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে অবস্থায় দেশ পেয়েছে, তেমন পরিস্থিতি কখনও আসেনি। তবে সে অবস্থায় পরিবর্তন এসেছে। হয়তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে আসেনি, তবে একটি স্ট্যান্ডার্ডে আসা গেছে।
সম্প্রতি রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকা থেকে বিপুল দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশীয় অস্ত্র যারা বানাচ্ছে, তাদের সতর্ক হতে হবে। তারাও জানে এগুলোর ব্যবহার কারা করে। যারা অপরাধীদের কাছে এগুলো দিচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
৫ আগস্টের পর প্রায় ৭শ’ অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, আনুমানিক ৭শ’র বেশি অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি সেসবের খোঁজ দিতে পারলে পুরস্কার দেয়া হবে। দু’চারদিনের মধ্যে এ বিষয়ক সার্কুলার হবে।
গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা ও শেরপুরে অসুস্থ স্ত্রীকে জীবিত অবস্থায় কবর দেয়ার মতো ঘটনাগুলোর প্রসঙ্গ টেনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাতি হিসেবে আমরা অসহিষ্ণু হয়ে গেছি। সমাজে খারাপ ঘটনা ঘটলে আগে লোকজন প্রতিহত করতে ঝাঁপিয়ে পড়তো। এখন সবাই ভিডিও করায় ব্যস্ত থাকে। ধর্মেও আছে অন্যায় প্রতিহত করা ঈমানি দায়িত্ব। এখন জনসম্মুখে ঘটনা ঘটলে কেউ প্রতিহত করতে আসে না। তাছাড়া সব জায়গায় সবসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিতও থাকে না। আর সব অপরাধীকে আগে ধরাও সম্ভব হয় না।
জনগণকে অন্যায়-অপরাধ প্রতিহত করতে সচেতন করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পাবলিক চার্টার একটি আইন আছে, এ আইন অনুযায়ী জনগণেরও এমন ঘটনা প্রতিকার করার কথা। কিন্তু এই আইনটি আস্তে আস্তে আমরা ভুলে যাচ্ছি। অন্যায়, অপরাধ প্রতিহত করতে জনগণকে সচেতন করতে হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, গাজীপুরের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা সমাজে ঘটুক, কেউ সেটা চিন্তাও করতে পারে না। জড়িতদের অধিকাংশকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তবে যে জীবন চলে গেছে, সেটার কোনো ক্ষতিপূরণ হয় না। গাজীপুরের ঘটনায় অপরাধীরা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়, সেজন্য যা ব্যবস্থা নেয়ার নেয়া হবে। যত দ্রুত সম্ভব চার্জশিট দেয়া হবে।
এদিন গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২৫-২৮ আগস্ট বাংলাদেশে আসছেন বিএসএফ প্রধান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available