আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে তলানিতে নেমেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। ঘটনার পর থেকে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দুদেশ। তার ওপর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই বাড়ছে উত্তেজনা। এরই মধ্যে কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) কয়েক দফা গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে। সীমান্তে যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় নিজের তিন বাহিনীকে অভিযানের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ অবস্থায় আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সহকারে যুদ্ধ প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তানি সেনারাও।
১ মে বৃহস্পতিবার কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছাকাছি পূর্ণাঙ্গ সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই মহড়ায় সরাসরি আধুনিক অস্ত্র চালনার প্রদর্শনী অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং শত্রুর যেকোনো আগ্রাসনের তীব্র জবাব দেয়ার জন্য এটি ডিজাইন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সূত্র। বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও সৈন্যরা উচ্চ স্তরের অপারেশনাল দক্ষতা প্রদর্শন করেন এ মহড়ায়।
এর আগে, বুধবার ভারতীয় সেনাদের গুলিবর্ষণের জবাবে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) পেরিয়ে কিয়ানি এবং মন্ডল সেক্টরে একটি ভারতীয় চেকপোস্ট ধ্বংস করে দেয় পাকিস্তানি সেনারা।
পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের দাবি, ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের চকপুত্র পোস্টসহ প্রতিপক্ষ বাহিনীর অবস্থানগুলোকে লক্ষ্য করে প্রতিশোধমূলক এ হামলা চালানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।
এ ছাড়া সিন্ধু নদের পানি ইস্যুতে কড়া বার্তা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। স্পষ্ট ভাষায় তিনি ঘোষণা দেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান। সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের জেরে ভারতকে হুমকি দেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা ও দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোও। তিনি বলেন, সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।
পাকিস্তান প্রয়োজনে পারমাণবিক হামলার জন্যও প্রস্তুত আছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ ও রেলমন্ত্রী মোহাম্মদ হানিফ আব্বাসি।
অন্যদিকে পেহেলগাম হামলায় জড়িত ও মদতদাতাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি সন্ত্রাসী ও তাদের মদতদাতাদের খুঁজে বের করব এবং এমন শাস্তি দেব, যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না। সময় এসেছে সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থল সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার। ১৪০ কোটি মানুষের দৃঢ় সংকল্প সন্ত্রাসের মদতদাতাদের চূর্ণ করে দেবে। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available