• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ২১শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ রাত ০২:০৫:২৭ (05-Jun-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ২১শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ রাত ০২:০৫:২৭ (05-Jun-2025)
  • - ৩৩° সে:

ফিচার

ঈদ উল আজহা নিয়ে ইবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

৩ জুন ২০২৫ সকাল ০৮:৪২:১৪

ঈদ উল আজহা নিয়ে ইবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

ইবি প্রতিনিধি: ঈদ উল আজহা, মুসলিম উম্মাহ'র অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব। কোরবানি, আত্মত্যাগ, সংহতি ও মানবিকতার শিক্ষা দেয় এই দিনটি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিতে ঈদ উল আজহা শুধু ধর্মীয় উৎসব বা আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং একটি বৃহত্তর মানবিক মূল্যবোধ গঠনের উপলক্ষ এবং একটি সামাজিক ও পারিবারিক আবেগের কেন্দ্রবিন্দু। ঈদে পারিবারিক বন্ধন, আত্মত্যাগের শিক্ষা এবং সমাজে সমতা প্রতিষ্ঠার সুযোগ তারা গভীরভাবে উপলব্ধি করে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চোখে এই ঈদের অর্থ, গুরুত্ব ও অভিজ্ঞতা কেমন এবং তাদের নানা অনুভব ও ভাবনা এশিয়ান টেলিভিশন অনলাইন পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী উর্মিলা তন্নি বলেন, ‘কোরবানির ঈদ, যা ঈদুল আজহা নামে পরিচিত, এটি কেবল পশু কোরবানির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং আত্মত্যাগ, আল্লাহর প্রতি আনুগত্য এবং মানবিকতার এক অসাধারণ শিক্ষা বহন করে। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এই ঈদ আমার চিন্তাভাবনা ও মানসিকতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।

প্রথমত, কোরবানির ঈদ আমাকে শেখায় ত্যাগের মহান আদর্শ। আমি উপলব্ধি করি, জীবনের প্রকৃত মূল্য শুধু নিজের জন্য বাঁচা নয়, বরং প্রয়োজন হলে বড় কোনো আদর্শের জন্য কিছু ত্যাগ করতে শেখাই হচ্ছে সত্যিকারের শিক্ষা।

ঈদুল আজহার সময় আমি দেখতে পাই পরিবার কীভাবে কোরবানির পশু কিনে, যত্ন নেয় এবং সযত্নে তা কোরবানি দেয়। এসব কাজে আমি নিজেও অংশ নিই, এতে দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। এসব শিক্ষা আমার পড়ালেখা ও ভবিষ্যৎ জীবনের পথচলায় কাজে লাগে।

এই ঈদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ভাগাভাগি। কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করে এক অংশ আত্মীয়-স্বজন, আরেক অংশ গরিব-দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এই প্রথা আমাকে সহানুভূতি ও সমবেদনার শিক্ষা দেয়। আমি বুঝতে পারি, সমাজে সবার পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। তাই আমি চেষ্টা করি দরিদ্র প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়াতে, ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে।

নৈতিকতা, মূল্যবোধ এবং সমাজসেবার শিক্ষা একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে সাহায্য করে। কোরবানির ঈদ সে শিক্ষারই একটি বাস্তব ও জীবন্ত উদাহরণ। শিক্ষার্থী হিসেবে কোরবানির ঈদ আমার কাছে শুধুই উৎসব নয়, এটি জীবনের গভীরতর পাঠ শেখার একটি সুযোগ। আত্মত্যাগ, সহানুভূতি, দায়িত্ববোধ ও মানবিকতার যে শিক্ষা এই ঈদ দেয়, তা আমাকে একজন ভালো মানুষ ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। আমি চাই এই ঈদের বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক সমাজের প্রতিটি স্তরে, প্রতিটি হৃদয়ে।’

ফিজিক্যাল এডোকেশন এন্ড স্পোর্টস সাইন্স বিভাগের আশ্রাফুল হক মনে করেন, ‘ঈদ! পরিবারের কাছে আরেকবার ফিরে যাওয়ার উৎসব। পড়াশোনা, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা, টিউশনের চিন্তা ছেড়ে বাড়ি ফেরার আয়োজন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করলেও ক্যাম্পাসের প্রিয়মুখগুলোর কথা ভীষণ মনে পড়ে। ক্লান্তি ভরা জীবনে যখন দীর্ঘ একটা ছুটি পাওয়া যায় তা একজন ছাত্রের জন্য কতটা প্রশান্তির তা বলে বোঝানো সম্ভব না। প্রতিদিনের রুটিনমাফিক কার্যক্রমে মানসিক বিকাশ একরকম চাপগ্রস্থ হয়। এমতাবস্থায় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণে সময় পাওয়া যায়, পরিবার কিংবা প্রিয়জনের পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ মেলে।

ঈদ আমাদের অন্যের প্রতি আন্তরিক করে তোলে। জীবনের নানান সীমাবদ্ধতার মাঝে নিজের অবস্থান ধরে রেখে প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার অনুপ্রেরণা জাগে। সবমিলিয়ে নতুনভাবে নিজেকে সাজিয়ে তোলার ইচ্ছাশক্তি জোগায় ঈদ উৎসব।’

ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মিমি আখতার বলেন, ‘শিক্ষার্থী হিসেবে ঈদুল আজহা আমার কাছে শুধু আনন্দের দিন নয়, বরং এটি এক মহান শিক্ষার উপলক্ষ। ছোটবেলা থেকেই ঈদুল আজহার দিনগুলো আমার কাছে ছিল খুবই বিশেষ। বাজার থেকে কোরবানির পশু কিনে আনা এবং তাকে ঘিরে পরিবারে উৎসবমুখর পরিবেশ, সব মিলিয়ে যেন এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। এই ঈদ আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে নিজের প্রিয় জিনিসও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করতে হয়। ঈদের দিন নামাজ শেষে  কোরবানির দৃশ্য দেখলে মনে হয়, হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সেই আত্মত্যাগের গল্প যেন চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠে।

কোরবানির মাংস গরিব ও প্রতিবেশীদের মাঝে ভাগ করে দেওয়ার সময় আমি অনুভব করি, ঈদের আনন্দ তখনই পূর্ণতা পায়, যখন সেটি সবাই মিলে ভাগ করে নেওয়া যায়। এই ত্যাগ, সহমর্মিতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা আমার ভেতর মানবিক গুণাবলি জাগিয়ে তোলে। তাই শিক্ষার্থী হিসেবে ঈদুল আজহা শুধু একটি উৎসব নয়, এটি আমার নৈতিক শিক্ষা, দায়িত্ববোধ ও আত্মউন্নয়নের পথপ্রদর্শক।’

হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সম্রাট জিসান মনে করেন, ‘কোরবানি ঈদ বা ঈদ-উল-আযহা মুসলিমদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এই ঈদকে ঘিরে অনেক কিছুই উপলব্ধি করি। ঈদ-উল-আযহার মূল শিক্ষা হলো ত্যাগ ও আত্মসমর্পণ। ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর আদেশ পালন করার জন্য নিজের প্রাণপ্রিয় পুত্রকে কোরবানি করতে প্রস্তুত হয়েছিলেন, এই ত্যাগ আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, আদর্শ অনুসরণ এবং দায়িত্ববোধ শিখতে অনুপ্রাণিত করে। মিথ্যা, অহংকার, হিংসা পরিহার করে ভালো মানুষ হওয়ার চর্চা শেখায় কোরবানি ঈদের মাধ্যমে। ২৪ স্বাধীনতার পর অহংকার, হিংসা,পরিহার করে ক্যাম্পাসে গড়ে উঠুক ভ্রাতৃত্ব বন্ধন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। সবাইকে ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা।’

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ফারিহা মেহজাবীন মনে করেন, ‘ঈদ মানেই আনন্দ। আর সেই আনন্দ পরিবারের সদস্য ছাড়া অসম্পূর্ণ। ঈদের ছুটিতে বাসায় যাওয়ার সময়টা থেকে শুরু হয়ে যায় অন্যরকম আনন্দ এবং অনুভূতি। শেষ সময়ে ছুটির প্রহর আর শেষ হয় না। অপেক্ষায় থাকি কত দ্রুত ঘনিয়ে আসবে ক্যাম্পাস ছুটির তারিখ। বাসায় গিয়ে আব্বু-আম্মু, ভাই-বোনের সাথে সময় কাটাতে পেরে অনেক ভালো লাগে। পরিবারের সাথে ঈদের কেনাকাটা, ঈদের পরিকল্পনা, ছোট ভাইবোনদের হইচইয়ে ঈদের আনন্দে মেতে উঠে বাড়ি।’

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মো. নাঈম হুসাইন বলেন, ‘ঈদ উল আজহা আমার কাছে আত্মত্যাগের এক বড় প্রতীক। আমরা শুধু পশু কোরবানি করি না, বরং নিজের ভেতরের স্বার্থপরতা ও অহংকারকেও উৎসর্গ করার মানসিকতা গড়ে তোলার শিক্ষা পাই। আমাদের উচিত এই উৎসবের বাহ্যিক দিকের পাশাপাশি এর আত্মিক ও মানবিক দিক কেউ গুরুত্ব দেওয়া এবং কোরবানির মধ্য দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা।’

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ


ভুটানকে সহজেই হারালো বাংলাদেশ
৪ জুন ২০২৫ রাত ০৯:০৮:২৩





১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রকাশ
৪ জুন ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:১৭:১১