নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার নবাবগঞ্জে বাড়ির পাশের খেত থেকে আমজাদ হোসেন (৫০) নামের যুবদলের এক নেতার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নবাবগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
৬ জুলাই রোববার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের মাঝিরকান্দা মৃধাকান্দা এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার ১ ঘণ্টা আগে তাকে গ্রেফতার করতে বাড়িতে এসেছিল পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোর ৪টার দিকে চেক জালিয়াতির মামলায় এক বছরের সাজাসংক্রান্ত পরোয়ানা নিয়ে আমজাদ হোসেনকে গ্রেফতারে তার বাড়িতে যায় নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ। তাকে না পেয়ে পুলিশ ফিরে যায়। পুলিশের গাড়ি চলে গেছে জানতে পেরে আমজাদ ঘর থেকে বের হন। পরিবার সদস্যদের ধারণা, তিনি ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলেন। তবে ভোর ৫টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন ধনচে খেতের পাশে আমজাদকে পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যদের খবর দেন।
পরে আমজাদকে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর স্বজনেরা মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যান। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হত্যা’র অভিযোগ তুলে বিভিন্ন পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে যুবদলের নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা আমজাদের বাড়িতে যান।
ঘটনার খবর পেয়ে থানা পুলিশ আমজাদের বাড়িতে গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে। আমজাদের নামে রাজনৈতিকসহ অন্তত ২০টির বেশি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। একটি চেক জালিয়াতির মামলায় তার বিরুদ্ধে এক বছরের সাজা পরোয়ানাও ছিল। মরদেহের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য তা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহতের স্ত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, ‘আমি জানি না আমার স্বামী কীভাবে মারা গেল। আল্লাহর কাছে বিচার চাই।’
আমজাদের ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই রাজনীতি করে। তার অনেক প্রতিপক্ষ আছে। পুলিশ তাকে ধরতে আসলেও সে কেন ওখানে গিয়ে পড়ে মারা গেল? এটা আমরা বুঝতে পারছি না।’
নিহতের বড় মেয়ে আশা আক্তার বলেন, ‘বাবার মুখে ও চোখের কোণে জখমের চিহ্ন আছে। বাবাকে কেউ হত্যা করেছে কি না, তা এখনো বলতে পারব না।’
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমজাদ হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত করাটা জরুরি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
ভোররাতে গ্রেফতারের অভিযানের বিষয়ে ওসি বলেন, আমজাদের নামে সাজার পরোয়ানা ছিল। পুলিশ ভোর ৪টার দিকে তাকে ধরতে যায়। বাসার দরজা না খোলায় পুলিশ ফিরে আসে। পরে স্থানীয় লোকজন মুঠোফোনে আমজাদের মৃত্যুর খবর জানান।
অভিযানে অংশ নেওয়া উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিবুল ইসলাম ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, তারা আমজাদের বাড়িতে ঢোকেননি।
এদিকে আমজাদের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিএনপি নেত্রী মেহনাজ মান্নান তার বাড়িতে যান। তিনি নিহতের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, আমজাদ দলের একজন ত্যাগী নেতা। অনেক মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। তার এভাবে রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ আমরা খুঁজে বের করতে চাই।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available