নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল আজহার বাকি মাত্র দুদিন। শেষ সময়ে এসে জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাটগুলো। তবে সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিতে বিক্রিতে ভাটা পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। একই সঙ্গে বড় গরুতে ক্রেতাদের চাহিদা কম থাকায় এবং সব প্রকার গরুতে চাহিদা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করছেন বিক্রেতারা। ফলে বাধ্য হয়ে সীমিত লাভেই গরু বিক্রি করছেন তারা।
৫ জুন বৃহস্পতিবার রাজধানী কমলাপুরের রেলওয়ে কলোনিতে অবস্থিত শাহজাহানপুর পশু হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় দিয়েই হাটে আনাগোনা করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। কেউ কেউ পছন্দের গরুটি কিনে রওয়ানা দিয়েছেন নিজ গন্তব্যে। কেউবা ঘুরে ঘুরে খুঁজছেন পছন্দের গরুটি। এরপর পছন্দ মতো গরুর সন্ধান পেলেই শুরু হচ্ছে দরদাম।
জামালপুর থেকে ১০টি গরু নিয়ে বাজারে এসেছেন মো. দিদার। তিনি বলেন, ১০টি গরু নিয়ে বাজারে এসেছি। এখন পর্যন্ত ৫টি বিক্রি হয়েছে। আরও ৫টা বাকি আছে।
অবিক্রীত একটি গরু দেখিয়ে চাহিদা মতো দাম পাচ্ছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, এই গরুটা আমার ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা দিয়ে কেনা। এর পেছনে খরচ আছে ২ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আর এখন এই গরুর দাম হচ্ছে ১ লাখ ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। মানুষ আসে একটা দাম বলেই চলে যায় আর কিছু বলেও না শোনেও না।
বিক্রি কম হওয়া এবং দাম না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষ মাঝারি গরু কিনছেন। ৮০-৮৫ হাজার টাকার মধ্যে যেসব গরু আছে সেগুলো বিক্রি বেশি হচ্ছে। তাছাড়া বৃষ্টির কারণেও ক্রেতারা ঠিকঠাকভাবে হাটে আসতে পারছেন না।
সিরাজগঞ্জ থেকে ১৬টি গরু নিয়ে শাহজাহানপুর হাটে এসেছেন সোহেল রানা। তিনি বলেন, বেচা-কেনা মোটামুটি। খুব একটা ভালোও না একদম খারাপও না। ১৪টা গরু বিক্রি করে দিয়েছি। বৃষ্টি বৃষ্টি ভাব আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে হাটে বিক্রি কম।
বিক্রি করা গরুর দামে খুশি কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুশি বলবো না। বিক্রি করতে পেরেছি এতেই আলহামদুলিল্লাহ। বিক্রি করে বাড়ি যেতে পারলেই হবে।
জামালপুর থেকে ১২টি গরু নিয়ে বাজারে এসেছেন মোখলেস। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৭টা গরু বিক্রি করতে পেরেছি। আশা করি ঈদের আগেই বাকিগুলো বিক্রি করতে পারবো।
তিনি বলেন, দিনের আবহাওয়া ভালো না। এজন্য ক্রেতারাও ঠিকমতো বাজারে আসতে পারছেন না। আসলেও এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ঠিকমতো গরুও দেখতে পারছেন না। তাছাড়া মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। বড় গরু খুবই কম বিক্রি হচ্ছে। মানুষ এসে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকার মধ্যে গরু খুঁজছেন। যেগুলো বিক্রি করেছি তাতেও সীমিত লাভ। এখন কি করার বিক্রি তো করতে হবে। ফেরত নিয়ে যাওয়া যাবে না।
নাটোর থেকে ৮টি গরু নিয়ে শাহজাহানপুর পশু হাটে এসেছেন আশরাফ আলী। তিনি বলেন, গত দুই দিনে ৬টা গরু বিক্রি করতে পেরেছি। আর ২টা আছে। মোটামুটি বিক্রি খারাপ না।
চাহিদা মতো দাম পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী দাম পাইনি। তবে লোকসান হয়নি এখন পর্যন্ত। বৃষ্টির কারণে ঝামেলা হয়েছে। বেঁচাকেনা কম হচ্ছে। তা না হলে এই দুইটাও বিক্রি হয়ে যেতো।
এদিকে সামর্থ্যের মধ্যে গরু কিনতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।
ক্রেতা মো. বজলু মিয়া বলেন, গরুর দাম চেয়েছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আমি ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। সবাই দেখে বলছে ভালো কেনা হয়েছে। এখন মালিকও (আমার বাড়িওয়ালা) খুশি আমিও খুশি।
তিনি বলেন, মোটামুটি বাজেটের মধ্যেই পছন্দসই গরু কিনতে পেরেছি। এই বাজারে মোটামুটি ১ লাখ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা হলে ভালো গরু পাওয়া যায়।
মিলন শেখ নামের অন্য এক ক্রেতা বলেন, বাজারে দাম মোটামুটি কমের মধ্যেই আছে। একটা গরুর দাম চেয়েছিল ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু শেষে দরদাম করে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। খারাপ না মোটামুটি বাজেটের মধ্যেই আছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available