মা দিবস নিয়ে তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের অন্যরকম ভাবনা!
তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি: পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রুতিমধুর শব্দ মা, প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালন করা হয় আন্তর্জাতিক মা দিবস। যদিও মাকে ভালোবাসা-শ্রদ্ধা জানাতে কোনো নির্দিষ্ট দিনের দরকার নেই তবুও মাকে বিশেষভাবে গভীর মমতায় ও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করার দিন আজ।পৃথিবীতে একজন সন্তানকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসে তার মা। পৃথিবীতে কতকিছুই পরিবর্তন হয়েছে, কতকিছুই পরিবর্তন হচ্ছে কিন্তু মায়ের যত্নের কোন পরিবর্তন নেই। ১০০ বছর আগেও একজন মা তার সন্তানকে আগলে রাখতো, আজও রাখে।ইসলামে মায়ের মর্যাদা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, “মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত”।শত ব্যস্ততার মাঝেও মায়ের জীবনের সংগ্রাম ও তার প্রতি কৃতজ্ঞতার বিষয়ে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের ভাবনা ও অজানা গল্পের কথা তুলে ধরেছেন তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি ওমর ফারুক।মা সম্পর্কে অনুভূতি ব্যাক্ত করতে গিয়ে সরকারি তিতুমীর কলেজের বাংলা বিভাগের ২৩-২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নিশান বলেন, মা শুধু একটা শব্দ নয়, মা মানে আমার পৃথিবী। আর আমার মা আমাকে এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। তাঁর ভালোবাসায় নেই কোনো শর্ত, নেই কোনো প্রত্যাশা। কোনকিছু চাওয়ার সাথে সাথেই সেটার ব্যাবস্থা করে দেওয়া কিংবা ছোটবেলায় জ্বর হলে সারারাত আমার জন্য জেগে থাকা এগুলো আমার মায়ের গুণ। সর্বদা সত্য কথা বলা এবং সাধ্য অনুযায়ী অন্যের উপকার করার চেষ্টা করার শিক্ষা দিয়েছেন আমার মা এছাড়াও তিনি চান ভালোমতো পড়াশোনা করে দেশ ও দশের জন্য আমি কাজ করি। আজ মা দিবসে শুধু বলতে চাই মা তোমাকে ভালোবাসি খুব। তুমি না থাকলে আমি কিছুই না।মায়ের ঋণ কোনদিন শোধ করা সম্ভব নই বলে রসায়ন বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী রাত্রি দেবনাথ বলেন, এই যে সকাল সকাল মিষ্টি একটা কন্ঠে রোজ নিয়ম করে একজন ঘুম ভাঙিয়ে দেয় সে হলো 'মা'। আজ বিশ্ব মা দিবস এই দিনটা আমাদের মাকে উৎসর্গ করা হয়েছে বলেই এইদিনের বিশেষত্ব একটু বেশিই বলা যায়। আমার মনে হয়,পৃথিবীর সবচেয়ে ধৈর্য্যশীল ত্যাগী মানুষ হলো মা।মাকে যদি কোনো ফুলের সাথে তুলনা করা যেতো তবে আমি আমার মাকে সূর্যমুখীর সাথে তুলনা করতাম। তিনি সূর্যমুখীর মতোই উঁচু করে বাঁচে এবং আমাকে বাঁচতে শিখিয়েছে। পড়াশোনার সুবাদে এখন রাজধানীতে থাকা হয়। কিন্তু যখনই বাড়ি যাই মায়ের খুশির সীমা থাকেনা। পছন্দের সব খাবারের আইটেম দিয়ে ডাইনিং টেবিল ভরিয়ে রাখে, নিজের হাতে জামা ডিজাইন করে বানিয়ে দেয়। আমাকে কোন রঙে ভালো মানাবে,সেটাও তিনি জানেন। একটা মানুষ এতকিছু কিভাবে করতে পারে আমার মাকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না। মায়ের কাছে আজীবনের কৃতজ্ঞ আমি। পৃথিবীর সব মায়েরা অনেকদিন বেঁচে থাকুক আর বটবৃক্ষের ন্যায় ছায়ার মতো তাদের সন্তানদের আগলে রাখুক।পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শব্দ ‘মা’ উল্লেখ করে বাংলা বিভাগের ২৩-২৪ সেশনের আরেক শিক্ষার্থী জুহাইর আনজুম নাফিস বলেন, এই পৃথিবীতে মা-ই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি সন্তানের সকল সুখ-দুঃখ আগেভাগেই বুঝে যান। 'মা' নামক এক অক্ষরের এই ছোট্টো একটি শব্দের বিশালতা অনেক, পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শব্দ এটি। এই পৃথিবীর আমাদের জীবনের সুখের আলোর মানে হচ্ছে আমাদের মা। সকল দুঃখ-কষ্ট, বিষাদ, ক্লান্তির অবসান আমাদের মায়ের কোল। পড়াশোনার সুবাদে রাজধানী ঢাকায় থাকা হলেও আধুনিক যুগের বাস্তবতায় মা এর সাথে প্রতিদিনই কথা বলা হয়। মনে পড়ে মায়ের হাতের রান্না করা সুস্বাদু খাবার, মনে পড়ে পরীক্ষার সময়গুলোতে মায়ের নেওয়া যত্নের কথা। আর তারপর যখন দেখি সেই বন্ধুটাকে যার মা ছোটবেলায় মারা গিয়েছে তখন খুবই খারাপ লাগে। কারণ পৃথিবীর কোনকিছু দিয়েই মায়ের ভালোবাসা ও যত্ন পূরণ করা সম্ভব না। তারা তো বঞ্চিত হয়েছে সেই যত্ন ও ভালোবাসা থেকে। আজ বিশ্ব মা দিবসে সকল মায়েরা যেনো ভালো থাকে এই কামনা করি।মা আমার অনুপ্রেরণা উল্লেখ করে একাউন্টিং ডিপার্টমেন্টের ২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী সিদরাতুল মুনতাহা খান তমা বলেন, ব্যস্ত জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে গেলে এক পলক স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে চোখ বন্ধ করলেই যার চেহারা ভেসে উঠে তিনিই মা। মা এক আশ্রয়ের স্থান। নিজের চেয়েও যিনি সন্তানের কথা সবার আগে চিন্তা করেন। হাজারো ত্যাগ স্বীকার করে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যান আমাদের জন্য। সন্তানের জন্য যে মা চাকরি ছেড়ে বেছে নিয়েছেন গৃহিণী হওয়ার পথ, সহ্য করেছেন বছর ধরে হাজারো কটু কথা, অপমান- লাঞ্চনা সে মায়ের আবদার কতটুকু? বড্ড সামান্য, মেয়ে যেনো স্বাবলম্বী হতে পারে দেশ ও সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করতে পারে। এ পথ পাড়ি দেওয়া এতো সহজ নয় তবে ভয় নাইকো কারণ সাথে আছে যে মা! মা সাথে থাকলে শত বাঁধার পথও অতিক্রম করা যেনো সহজ কারণ মা'ই তো আমার অনুপ্রেরণা। আজ বিশ্ব "মা দিবস" উপলক্ষে আমার মায়ের সাথে সাথে সেকল মা কে জানাই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা যাদের অবদানে সন্তানেরা এতোদূর আসতে পেরেছে।