ইবি প্রতিনিধি : ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে অংশগ্রহণ করার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে শিক্ষকদের উপর। শিক্ষকদের ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়।’ ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি না গুচ্ছ নিয়ে ইউজিসি এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা। সাধারণ সভায় গুচ্ছে থাকার ব্যাপারে আমাদের আহ্বান জানানো হলেও ইউজিসি থেকে আমি এখনও কোনো চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে আমি টিচারদের সাথে আলাপ করবো। এই পর্যায়ে ইউজিসি একদিকে সরকার একদিকে আমরা একদিকে, তাই জিনিসটাকে একটি সেটেলমেন্টে আনতে হবে।’
সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সিন্ডিকেট সভা ডাকা হবে কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য বলেন, ‘সাধারণত একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেটের কাছে যায়, আবার সিন্ডিকেটের রিপোর্ট সাপেক্ষেও হতে পারে। আমি আজকে সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে ফিরবো। এসে টিচারদের সাথে আলাপ করে যা সিদ্ধান্ত হবে তাই জানাবো। শিক্ষকরা যেহেতু গুচ্ছে না যেতে অনঢ়, তাদের ছাড়াতো পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না৷ এখন ইউজিসি বা সরকার থেকে যে চিঠি আসবে, সেটাই শিক্ষকদের জানাবো আমি। ভবিষ্যতে কি হবে সেটা এখনি বলতে পারছি না। তবে একটা কথা আমি বিশ্বাস করি, শিক্ষকদের ছাড়া কোনো ধরণের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না, সেটা যেই হোক না কেনো।’
এর আগে, ২০ মার্চ (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সাধারণ সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম ইবির ১২৫তম একাডেমিক কাউন্সিলে শিক্ষকদের গুচ্ছে না যাওয়ার মতামতের বিষয়টি তুলে ধরেন।
তবে যারা ইতোপূর্বে গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিল সেসব বিশ্ববিদ্যালয় কোনোক্রমেই গুচ্ছের বাইরে গিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে পারবে না বলে জানায় ইউজিসি। এছাড়া সভায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির বিদ্যমান সংকট ও সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভর্তিতে বিগত বছরের জটিলতাগুলো কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় এবং ভর্তি কীভাবে আরও সহজ ও শিক্ষার্থীবান্ধব করে তোলা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়।
এদিন সভাশেষে ইউজিসি সদস্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ শতাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিয়েছে। আগামী বছর থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ইউনিক পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে বলে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ ২২ বিশ্ববিদ্যালয় এবারও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে।’
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘গুচ্ছে না যাওয়ার ব্যাপারে আমরা শিক্ষকরা একতাবদ্ধ। প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের এরকম ভোগান্তি আমরা মেনে নিতে পারি না। পরীক্ষার আগে প্রত্যেকবার আমাদের সংকট কাটিয়ে উঠার প্রতিশ্রুতি দিলেও তার বাস্তবায়ন দেখি না। প্রথমবার একটু এলোমেলো হয়েছিলো পরেরবার ঠিক হয়ে যাবে- এই কথা বুঝানোর কারণে আমরা ২য় বারো গুচ্ছে অংশ নিয়েছিলাম। তবে আমরা মনে করি এতোগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের একসাথে পরীক্ষা জিনিসগুলোকে আরো বিশৃঙ্খল করেছে।’
ইবিকে গুচ্ছে থাকতে হবে ইউজিসির এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর বলেন, 'আমরাও জিনিসটা গণমাধ্যমে দেখেছি। উপাচার্য স্যার বা ইউজিসি কেউই আমাদের এখনও কোনো চিঠি দেয়নি। উপাচার্য স্যার ক্যাম্পাসে ফিরে আমাদের বলুক, তারপরই আমরা শিক্ষকরা তার সঙ্গে বসব। তবে গুচ্ছে আমরা যাবো না- এটাই আমাদের এখন পর্যন্ত সর্বশেষ সিদ্ধান্ত।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available