কুবি প্রতিনিধি: ‘এই হল আমার, আমার কথাতেই হল চলবে। যাকে যেখানে খুশি সিট বরাদ্দ দিব। আপনাকে এই হলের দায়িত্ব কে দিয়েছে?’ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট সাহেদুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে এমন মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী ফাইজা মেহজাবিনের বিরুদ্ধে।
৪ মার্চ শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শেখ হাসিনা হলের এক শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রভোস্ট হল পরিদর্শনে আসলে ফাইজা এমন মন্তব্য করেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রমতে জানা যায়, হলের আবাসিক এক শিক্ষার্থী অন্য রুমে শিফট হওয়ার জন্য হল প্রভোস্ট বরাবর আবেদন করলে তাকে ২১৬ নম্বর রুমের একটি সিটে এলটমেন্ট দেওয়া হয়। কিন্তু রুম পরিবর্তন করতে গিয়ে তার নতুন সিটে অন্য এক শিক্ষার্থীকে অবস্থান করতে দেখেন। ঘটনা সমাধানের জন্য হল প্রভোস্টকে জানান তিনি। প্রভোস্ট সাহেদুর রহমান হলে এসে ওই শিক্ষার্থীকে অবস্থানের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি ফাইজা মেহজাবিনের নাম বলেন। সেই সূত্র ধরে লোক প্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তরের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফাইজাকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফাইজার এমন আচরণ নতুন কিছু না। তিনি একজন শিক্ষকে এমন কথা বলতে পারেন, তাহলে ভাবুন আমাদের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করেন। হলে অবস্থানরত সব শিক্ষার্থী তার প্রতি বিরক্ত। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারে না। হলে এখন আতঙ্কের নাম ফাইজা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা উক্ত হলের হাউজ টিউটর মো. আল আমিন বলেন, 'হল প্রভোস্টের সাথে ফাইজার আচরণ শিক্ষার্থী সুলভ নয়।'
এ ব্যাপারে কাজী ফাইজা মেহজাবিন বলেন, স্যারকে এই ধরণের কোনও কথা বলিনি। কথা প্রসঙ্গে বলেছিলাম এই হলতো আমারও।
এ ব্যাপারে হল প্রভোস্ট সাহেদুর রহমান বলেন, ‘হলে কোনও শিক্ষার্থী উঠবে আর কোন শিক্ষার্থী উঠবে না, এই এখতিয়ার সম্পূর্ণ হল প্রশাসনের। একজন শিক্ষার্থী তো এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যে হল সংস্কৃতি আমরা তৈরি করতে চাচ্ছি তা শুধু সম্ভব হচ্ছে না ফাইজার জন্য।’
হল শাখা ছাত্রলীগের এই নেত্রীর বিরুদ্ধে এর আগেও নানা অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘এখানে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য আছে। প্রভোস্ট স্যারও নাকি ছাত্রলীগ সম্পর্কে বাজে কথা বলেছেন। এখানে দুই জনের দুই রকমের বক্তব্য শুনছি। আমরা তদন্ত করে দেখবো। যদি ফাইজা এমন কিছু বলে থাকেন তাহলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। হল ছাত্রলীগের না, হল প্রশাসনের, তারা চালাবে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘হল চালাবে প্রশাসন। শিক্ষার্থীরা এখানে আসবে কেন? আমি বিষয়টি জেনেছি। এ ব্যাপারে আলোচনা করে দেখবো।’
হল ছাড়াও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে ফাইজার বিরুদ্ধে। বাসে থাপ্পড় মারার ঘটনাও রয়েছে এর মধ্যে। গত বছরের নভেম্বরে বাসে সিট রাখাকে কেন্দ্র করে এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় দিয়েছিলেন তিনি। পরে সেই শিক্ষার্থীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ছাড় পান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available