• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১২ই শ্রাবণ ১৪৩১ বিকাল ০৩:৪৫:৩৫ (27-Jul-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১২ই শ্রাবণ ১৪৩১ বিকাল ০৩:৪৫:৩৫ (27-Jul-2024)
  • - ৩৩° সে:

মতামত

আত্মবিশ্বাসী আওয়ামী লীগ

২৩ অক্টোবর ২০২৩ দুপুর ১২:৪৩:২১

আত্মবিশ্বাসী আওয়ামী লীগ

রোমান কবির: টানা তিন মেয়াদে শাসনক্ষমতায় থেকে চতুর্থবারের মতো নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে তিন টার্মে আন্দোলনের ডাক দিয়ে বালুর ট্রাক, সরকার দলের নেতাকর্মী কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধায় মুখ থুবড়ে পড়া রাজপথের বিরোধী দল খ্যাত বিএনপি চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে মরণপণ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়, তরুণ-তরুণীদের কাছে করা অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়ন ঘটিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে যাত্রা করা আওয়ামী লীগ সরকারের বৃহস্পতি এখনও তুঙ্গেই বলা যায়।

শত বাধা ডিঙিয়ে তৃতীয় মেয়াদের শেষ দিকে আমেরিকার স্যাংশন, ভিসানীতি, কূটনীতি, কূটচাল আর বিরোধী পক্ষগুলোর অব্যাহত বিরোধিতা,গুজব মোকাবিলা করেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এখনও সরব ও ব্যাপক আত্মবিশ্বাসী। আর এই আত্মবিশ্বাসের বাতাসে ঈদের পরে আন্দোলন, পূজার পরে আন্দোলন, আগামী মাসে আন্দোলন, গণ-আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে দৃঢ় মনোভাবের প্রকাশ ঘটানোর পরও টিকতে পারছে না বিরোধীরা।  

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের উপরে ভিসানীতি ও স্যাংশন আরোপে সরকারবিরোধীরা যেনো কিছুটা হালে পানি পেয়েছিলো। তারা মনে করছিলো, এবার হয়তো সরকারের ভিত নড়ে উঠেছে। এবার বিদেশিদের আশির্বাদে সরকার হটিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে। বিএনপি ও তাদের মিত্রদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই সরকার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর তাই এই সরকার যাতে ক্ষমতায় থেকে আর নির্বাচন দিতে না পারে সে জন্যই যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি আরোপ করেছে।

বিএনপির দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সুহৃদরা প্রচার করতে শুরু করেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শেষ। তারা আর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় যেতে পারবে না। কিন্তু বস্তুত ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়ার লক্ষ্যে কোনো সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা এখনও দিতে পারেনি বিএনপি ও তথাকথিত কোনো বিরোধী শক্তি। সরকার হটানোর একদফা দাবি নিয়েও এলোমেলো হাওয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে তারা। কখনও শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ, কখনও মৃতপ্রায় অসম্ভব বস্তু ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’র দাবি আবার শেষমেষ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার দাবি নিয়ে মাঠ গরমের ব্যর্থ চেষ্টা দেখা যাচ্ছে।

২০০৮ সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতার মসনদে বসেই দুর্নীতিরোধ, কালো টাকা পাচাররোধ ও বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নেয় সরকার। ঘোষণা দেয় জনগণের স্বপ্নের পদ্মাসেতু নির্মাণের। আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা, দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি রোধে কাজ করাসহ প্রযুক্তির অবাধ উন্নয়নের কাজে হাত দেয়। আর সবচেয়ে যে দুই বিষয় বাঙালির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গর্বের বস্তুতে পরিণত হয়, সেটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করে স্বাধীনতার সময় মানবতার বিরুদ্ধে যেসব যুদ্ধাপরাধী অপরাধ সংগঠিত করেছিলো সেসব অপরাধীদের মূল হোতাদের বিচারের ব্যবস্থা করা।

কার্যত ২০০৮ সালের বিপুল বিজয়ের পর থেকেই আত্মবিশ্বাসে ভরপুর রয়েছে আওয়ামী লীগ। উপর্যপুরি আন্দোলনের ডাক, গণ-আন্দোলনের ডাক দিয়েও এই আত্মবিশ্বাসে ভাটা ফেলতে পারেনি বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি। বিশেষ করে ২০১২ সালে প্রথম দেশব্যাপী রোডমার্চের ঘোষণা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দেশব্যাপী সমাবেশ শুরু করে দলের নেতাকর্মীদের চাঙা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছু জ্বালাও পোড়াও আর মানুষ পুড়িয়ে মারার এজেন্ডা বাস্তবায়ন ছাড়া তেমন কোনো কিছুই করতে পারেনি তারা। বরং আন্তর্জাতিক মহলে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তিতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

সেই ২০১২-১৩ সালের দিকে অর্থাৎ ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগের বছর সরকার পতনের একদফা দাবি নিয়ে দেশব্যাপী আন্দোলনের ডাক দেয় বিএনপি। তবে ফের পূর্বের ন্যায় নানা ফাঁকফোকর বের করে অন্য উপায়ে ক্ষমতায় আসার অভিপ্রায়ে সংবিধান ও সার্বভৌমত্বকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অব্যাহত হরতাল-অবরোধ শুরু করে। কিন্তু সেটি শুধু রাজনৈতিক ব্যর্থতাই নয়, এ সব কার্যকলাপে চরম বিরক্ত নগরবাসী তথা দেশবাসী। ‘দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকার পতন ঘটানো হবে’, এমন ঘোষণা বারংবার দিলেও দেশের জনগণের বোধগম্য হয়নি ঠিক কী কারণে দেশের জনগণ তাদের সঙ্গে আন্দোলনে থাকবে।

এদিকে আস্তিক-নাস্তিক ফেরকায় শাহবাগ থেকে শাপলা ইস্যুতে হেফাজতের ঘাড়ে চেপে অভ্যুত্থানের দিবাস্বপ্নও দেখেছিলো বিএনপি। যে স্বপ্ন ভঙ্গ করে একরাতেই পরিস্থিতি শান্ত করে আওয়ামী লীগ সরকার। বরং হেফাজত আন্দোলনকারীদের দ্বারাই পরে কওমী জননী উপাধি পান শেখ হাসিনা। এক শেখ হাসিনার কৌশলেই বিএনপি ও তার সঙ্গে তাল মেলানো ডান-বাম দলগুলোও কুপোকাত। ২০১৪ সালের নির্বাচনী ট্রেন ফেল করে বিএনপি। অতঃপর আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়। আত্মবিশ্বাসের জোয়ারে ভাসে আওয়ামী লীগ। আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি হয় আরও উজ্জ্বল।

যদিও একসময় বিএনপি, নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, আমেরিকা ও বিশ্বব্যাংকের বিরোধী মনোভাবে ভাটা পড়ে স্বপ্নের পদ্মাসেতু নির্মাণে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, নিজেদের অর্থায়নে হবে পদ্মাসেতু। যে কথা সেই কাজ। পদ্মাসেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলো। বিএনপি নেতারা বলা শুরু করলো, পদ্মাসেতু কখনও হবে না। এদিকে একের পর এক সেতুর স্প্যান বসানোর খবর প্রচার হতে থাকে গণমাধ্যমে। দেখতে দেখতে নির্মাণ হয়ে যায় স্বপ্নের পদ্মাসেতু।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে বিদেশিদের তৎপরতা তত বাড়ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের বিভিন্ন শর্ত আরোপ শুরু করেছে। এখন তারা বলেছে সংলাপের কথা। তবে আওয়ামী লীগ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, সংলাপ হতে হবে শর্তমুক্ত। তবে এই ইস্যুতে বিএনপি পিটার হাসের দরবারে হাজিরা দিতে শুরু করেছে। সর্বশেষ তারা আগের মতো ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। সেদিন সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনের শুরু বলেও হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তারা। তাদের এই কর্মসূচি নিয়ে বিগত দিনের মতো জনমনে আতঙ্ক বাড়ছে ঠিকই। তবে ক্ষমতাসীনরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি প্রস্তুত আছে যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর অবস্থা ঠেকানোর জন্য।

অন্যদিকে ভিশন-২০৪১ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নিজেরা ভিশন সেট করতে পেরেছে আওয়ামী লীগ। এই তিন টার্মে দেশের জনগণকেও ভিশন দেখাতে পেরেছে বঙ্গবন্ধুর দলটি। তবে কিছু ভুলচুক যে হয়নি বা হচ্ছে না তেমনটি কিন্তু নয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার, সিন্ডিকেটবাজি, দুর্নীতি ও মাফিয়াতন্ত্রের লাগাম ধরা যাচ্ছে না। শেখ হাসিনা সরকারে বিষফোঁড়া হয়ে আছে দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারীদের দৌড়াত্ম্য, তাদের স্বজনপ্রীতি ও সিন্ডিকেটবাজদের দৌড়াত্ম্য। তবে এসবের বিরুদ্ধে তেমন কোনো জনমত ও ইস্যুভিত্তিক রাজনীতির দ্বার এখনও খুলতে পারেনি বিএনপি। কারণ, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, রাজনৈতিক ও সংস্কৃতিসেবী বিপুল মানুষ চেতনে-অবচেতনে আস্থার জায়গা হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দর্শনের কাছেই আশ্রয় নেয়। তাই আওয়ামী লীগ ছাড়া তাদের যাওয়ার জায়গাও নেই। তারা জানে, যত ভুলই থাকুক আওয়ামী লীগই তাদের শেষ আশ্রয়ের জায়গা। ভুল থাকলে সেসব ঠিক করেই এগিয়ে যেতে পারবে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এই দলটি, এটাই মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন তারা।

লেখক: সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ



নুরকে ৪ লাখ টাকা দেন এক নেতা: ডিবি হারুন
২৭ জুলাই ২০২৪ দুপুর ০২:৩৭:২৬




মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১
২৭ জুলাই ২০২৪ দুপুর ০১:৩৩:৪৩

নদীতে জোয়ার আইলেই আমগো কপাল পুড়ে
২৭ জুলাই ২০২৪ দুপুর ০১:১১:৫৪


এক সপ্তাহে গ্রেপ্তার সাড়ে ৫ হাজার
২৭ জুলাই ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪:২২