• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ১১:১৯:০০ (11-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ১১:১৯:০০ (11-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

সারাবাংলা

এশিয়ান টিভিতে সংবাদ প্রচারের পর ঘর পেলেন সিরাজ মিয়া

৩১ আগস্ট ২০২৩ সন্ধ্যা ০৬:৪৬:৩৯

এশিয়ান টিভিতে সংবাদ প্রচারের পর ঘর পেলেন সিরাজ মিয়া

মোঃ ফজলুল হক, পাবনা: সব থেকেও যেনো কিছু নেই। আছে শুধু বুক ভরা কষ্টের দীর্ঘশ্বাস। সব ছেড়ে নদীতে একাকী ভাসমান ঘর বানিয়ে বসবাস। মাছ শিকার করে চলছে জীবন-জীবিকা। এমন মানবতার জীবন যাপন করছিলেন পাবনার বেড়া উপজেলার সিরাজ মিয়ার। ২৬ বছর ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে কৈটোলা পাম্পিং স্টেশনের পাশে কাগেশ্বরী নদীতে প্লাস্টিকের ড্রামের উপর ভাসমান ঝুপড়িতে তাদের বসবাস। কষ্টের জীবন ধারণ করে আসছিলেন দুই পুত্র ও চার কন্যা সন্তানের জনক সিরাজ মিয়া।

৭০ বছর বয়সী সিরাজ মিয়ার জীবনের গল্পটা সমাজের অন্য দু’চার জনের থেকে একেবারে আলাদা। জন্মের পর স্বাভাবিক ছিলো সব কিছু। ছিলো পরিবার সংসার, পায়ে হেটে চলাচলের ক্ষমতা। এক অজানা অসুখে হারাতে হয়েছে দুইটি পা। চলাচলের সক্ষমতা হারিয়ে অনেকটা বোঝা হয় পরিবারের কাছে। তবু থেমে নেই জীবন পরিবারের অবহেলায় অভিমানে ছাব্বিশ বছর পরিবার ছাড়াই নদীতে বসবাস। পানিতে হাত ব্যবহার করে নৌকা চালিয়ে খুবই সহজে এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া যায়। তাই তিনি নৌকার জীবন বেঁছে নিয়ে ছিলেন। নদীতে মাছ শিকার করে স্থানীয়দের নিকট বিক্রয়, আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীর সহায়তা টিকে ছিলো তার নৌকার জীবন। এলাকা বাসির সহায়তায় নদীতে প্লাস্টিকের ড্রামের উপর ভাসমান ঝুপড়িতে বসবাস করতো সে। সিরাজ মিয়া সকলে হতভম্ব করে দিয়ে দেখিয়ে দিলেন ইচ্ছাশক্তি থাকলে সকল প্রতিকূলতা জয় করা যায়।

এবার ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার বেড়া উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ভাসমান ঝুপড়িতে বসবাসের অবসান ঘটিয়ে মাথা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে। নতুন ঘর পেয়ে অনেক খুশি সিরাজ মিয়া। তার এ জীবনের গল্প জানতে চাইলে সিরাজ মিয়া বলেন, আমি চাই না কেউ আমার জন্য কষ্ট পাবে। আমি পায়ে হেঁটে কোথাও যেতে পাড়ি না। হাঁটা-চলা করতে অন্যর সহযোগিতা লাগতো। কে কত সময় পাশে থাকবে। সবার তো নিজেরও কাজ থাকে। নৌকায় খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া যায়। সবার সাহায্য-সহযোগিতায় প্লাস্টিকের ড্রামের উপর ঘর বানিয়ে বসবাস করেছি। ঝড়-বৃষ্টি সবকিছু মাথার উপর দিয়ে গিয়েছে। মাছ শিকার করে স্থানীয়দের কাছে বিক্রয় করতাম। কিছু টাকা-পয়সা পাওয়া যায়। সে টাকা বউয়ের কাছে দিলে বৌ বাজার করে রান্না করে দেয়। এ জীবন ভাল লাগে না, তবু মাঝে মাঝে মেনে নিতে হয়।

সিরাজ মিয়া বলেন, গত ২২ জুনে আমাকে নিয়ে এশিয়ান টেলিভিশনসহ কয়েকটি টিভিতে খবর প্রচারের পরে উপজেলা থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে আমাকে জমি সহ ঘর উপহার দিয়েছে। আমার পাশে থাকার জন্য পাবনার সাংবাদিকদের ধন্যবাদ। এ ঘর পেয়ে আমি অনেক খুশি। আমার জীবনের আশা ছিলো একদিন নতুন ঘর হবে আমার। আশা পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা।

তিনি জানান, আমার আর চাওয়ার কিছু নেই। তবে সমাজের বিত্তবানরা যদি আমাকে একটা মুদি দোকান করে দেয়, তাহলে এই বয়সে এতো কষ্ট করতে হতো না। বয়স হয়েছে, এখন আর পারি না।  

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহা সবুর আলী জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পাড়ি কৈটোলা ইউনিয়নে কাগেশ্বরী নদীতে প্লাস্টিকের ড্রামের উপর ভাসমান ঝুপড়িতে বসবাস করেন সিরাজ মিয়া। আমার তদন্ত করে তাকে নদী থেকে তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পে জমিসহ একটি ঘর উপহার দিয়েছি। এটি আমাদের দায়িত্ব। সেখান থেকেই কাজটা করেছি। এমন অসহায় মানুষের পাশে বেড়া উপজেলা প্রশাসন সব সময় থাকবে।

তিনি বলেন, সিরাজ মিয়ার জন্য আমরা আর্থিক সাহায্য বা মুদির দোকানের ব্যাবস্থা করবো ভাবছি।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ