সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও)’র ঘুস দুর্নীতি-লুটপাটের তদন্তের দাবিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকে) অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযুক্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম (ইউএনও) মফিজুর রহমান। বিসিএস ৩৫তম ব্যাচের এ কর্মকর্তা ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ইউএনও হিসাবে উপজেলাটিতে যোগদান করেন।
দুদক চেয়ারম্যান বরাবর ওই উপজেলার সাধারণ নাগরিক হিসাবে ৪ মে রোববার অভিযোগ করেন শফিকুল ইসলাম, শাহীন আহমেদ, ওয়াদুদ, আতাউর রহমান টিপু, মো. জুবায়ের আহমেদ।
অভিযোগকারীরা দুদকের চেয়ারম্যানের নিকট ইউএনওর নানা ঘুস, দুর্নীতি অনিয়মের তথ্য সংযুক্ত করে লিখিত আবেদন পাঠিয়েছেন। তাদের আবেদনের অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার বরাবর পাঠানো হয়েছে।
৪ মে রোববার রাতে সংক্ষুদ্ধ উপজেলাবাসীর পক্ষে ওই ইউএনওকে দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করে তাকে দ্রুত প্রত্যাহার দাবি করে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সাধারণ জনগণের পক্ষে দেওয়া অভিযোগে ইউএনওর ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব বিবরণী যুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিগত সময়ে বিশ্বম্ভরপুরে ইউএনও মফিজুর রহমান নানা ঘুস, দুনীতি, সীমান্ত চোরাচালান, রাষ্ট্রীয় সম্পদ খনিজ বালি পাথর চুরির কাণ্ডে গোপন সহযোগিতা ছাড়াও নানামুখী অনিয়মের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগে দাবি করা হয়েছে।
দুদক এর চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ, বিশ্বম্ভরপুরের ইউএনও মফিজুর রহমানের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে ডাচ বাংলা ব্যাংক, ব্রাঞ্চ কোড, ৬৭ লাখ ৩০ হাজার ৩৯১ টাকা গেল ১১ এপ্রিল পর্যন্ত জমা ছিল। যা একজন সরকারি কর্মকর্তার বৈধ আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়। ৫ আগস্টের পর তিনদিনের মধ্যে ইউএনওর হিসাবে লাখ লাখ টাকা জমা হওয়া অর্থের উৎস সন্দেহজনক দাবি করা হয়েছে অভিযোগে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গেল ৫ আগস্টের পূর্বে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সীমান্ত চোরাচালান প্রবণ এলাকা আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে গোপন সমঝোতায় চোরাকারবারিদের মাধ্যমে ভারত থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে নিয়ে আসা চিনি, কসমেটিকস, মসলা, খাদ্য সামগ্রী, কাপড়, গবাদিপশু (গরু, মহিষ, উট) চোরাচালানের সঙ্গে ইউএনও মফিজুরের গোপন সম্পৃক্ততা ছিল।
উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা মাল্টিপারপাস সেন্টারে একটি পাঠাগার থাকার পরও বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ লুটপাটের জন্য কৌশলে উপজেলা নির্বাচন অফিসের পাশে আরও একটি পাঠাগার স্থাপন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইউএনওর ঘুস ও দুর্নীতির তদন্ত এবং তাকে অপসারণের দাবিতে ৪ মে রোববার বেলা ১১টায় উপজেলার কারেন্ট বাজারে উপজেলাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো ঘুস, দুর্নীতি, অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নই, আমাকে অহেতুক বিব্রত করতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, দুদকে অভিযোগ করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available