• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ০৬:৩১:১২ (12-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ০৬:৩১:১২ (12-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

কেরানীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ

১৪ জানুয়ারী ২০২৪ বিকাল ০৩:৩১:৩৪

কেরানীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: এক সময়ের সন্ত্রাসের জনপদ কেরানীগঞ্জে দীর্ঘদিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার পর হঠাৎ অশান্ত হয়ে উঠেছে। বিগত দিনে এ অঞ্চলে বেশ কিছু আলোচিত মামলা দ্রুত তদন্ত শেষ করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল ঢাকা জেলা পুলিশ। গত এক মাসের ব্যবধানে ফের খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, সুটকেসের ভেতরে অজ্ঞাত মরদেহসহ বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। সবগুলো ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। আসামিদের গ্রেফতারে তাদের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।

এরমধ্যে তিনদিনে পাঁচটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ১০ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সর্বশেষ গত ৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার দিবাগত ভোর রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার চরকালিগঞ্জ পারভিন টাওয়ারের নিচতলায় থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফতাব উদ্দিন রাব্বির অফিসে অমানুষিক নির্যাতন করে রাসেল (৩০) নামের এক যুবককে মেরে ফেলা হয়। এ ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে নিহতের বাবা তোফাজ্জল হাওলাদার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। 

জানা গেছে, তেলঘাট এলাকায় রাব্বির অফিসে গত মঙ্গলবার সারারাত রাসেলকে আটকে রেখে নির্যাতন করে। পরে বুধবার ভোরবেলা রাসেলের পরিবার রাব্বির অফিস থেকে রাসেলকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে রাসেলের পরিবারের লোকজন ঘাতক রাব্বি ও তার বাবা শুভাঢ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাসের উদ্দিন অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কোনো অভিযোগ ছাড়াই মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করে। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মারধরের ভিডিও ভাইরাল হলে জানাজা শেষে মরদেহ কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। পরে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে নিহতের বাবা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

এছাড়াও গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পের ৬ নম্বর সেক্টরে ম্যানহোলের ভেতর থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। ৬ জানুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর কাঠুরিয়া ঘাট এলাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে থেকে অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।

এদিকে ৩০ ডিসেম্বর শনিবার বিকেল ৫টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মালবাহী এক ট্রাকের হেলপার গাড়ি রাস্তার পাশে রেখে নাশতা আনার জন্য রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী সোহাগ পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ ঘটনায় সোহাগ পরিবহনে বাসটিকে এখনও জব্দ করা হয়নি।

এর আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ধলেশ্বরী টোল প্লাজার পার্শ্ববর্তী আব্দুল্লাহপুর ভাওয়ার ভিটি এলাকায় ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের সার্ভিস লেনের রাস্তার পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা সুটকেসের ভেতর থেকে অজ্ঞাত (১৪) এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করেছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।

এছাড়াও ১১ ডিসেম্বর সোমবার রাত আটটার দিকে উপজেলার শুভাঢ্যা পূর্বপাড়া কলেজ ভিটি এলাকার ফারুক মিয়ার বাড়ির সামনে সাগর (২৫) নামের যুবকে ছুরিকাঘাতে করা হয়। পরে সে মিটফোর্ড হাসপাতালে মারা যায়। এর আগের দিন ১০ ডিসেম্বর রাত দশটায় কেরানীগঞ্জে আব্দুল্লাহপুর মালিভিটা এলাকায় শাহিন (৪০) নামে এক যুবককে গুলি ও মারধর করে হত্যা করা হয়।

অপরদিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকায় ডাকাত সন্দেহে এক পথচারীকে পিটিয়ে হত্যা, ১০০ টাকার জন্য কাপড় কাটার কেচি দিয়ে যুবককে হত্যা ও মাদকাসক্ত ছেলের গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন দেয়ার ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মায়ের মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটেছে। এ সমস্ত ঘটনার এখনও পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।

রাব্বির হাতে নিহত রাসেলের বাবা তোফাজ্জল হাওলাদার বলেন, রাব্বি এবং তার বাবা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। তাই পুলিশ তাদেরকে কিছুই করবে না। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য মামলা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ করছি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর সুবিচার দাবি করছি।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলমের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাব্বিসহ অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের ব্যাপারে আমাদের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।

এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পেরেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনি, তবে তদন্তের স্বার্থে সব বলা যাবে না।

বিগত এক মাসের ঘটনার অগ্রগতি প্রসঙ্গে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি ঘটনাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সব ঘটনারই তদন্ত চলছে এবং আসামি গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। রাব্বির ব্যাপারে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। কোনো অগ্রগতি হলে তা প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে আপনাদের জানানো হবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ