নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: যৌন হয়রানির দায়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ও ব্যাবস্থাপনা বিভাগের ২ শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি করেছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষক দুইজন হলেন, সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা এবং ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র।
৫ মার্চ মঙ্গলবার যৌন হয়রানির শিকার চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দা সানজানা আহসান ছোয়াঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ জানিয়ে বিচার প্রার্থনা করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগে করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুর দিক অর্থাৎ ২০১৯ সাল থেকেই তার বিভাগের শিক্ষক সাজন সাহা তাকে বিভিন্ন অনৈতিক ম্যাসেজ দেয়ি মধ্য রাতে চা পানের নিমন্ত্রণ, অঙ্ক বোঝানোর নামে ব্যক্তিগত চেম্বারে ডাকত ও শাড়ি পরে দেখা করার জন্য বলতো। কিন্তু সেসব অনৈতিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ওই শিক্ষকের কোর্সে নম্বর কমিয়ে দেওয়া, থিসিস পেপার আটকে দেওয়ার মত নানানভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন তিনি।
অন্য এক অভিযুক্ত শিক্ষক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রর বিষয়ে অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষক সাজন সাহার এমন অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়ে বিভাগীয় প্রধানকে অবগত করলে তিনিও নানাভাবে আমাকে ঘুড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে আমাদের বিভাগের অন্য দুই শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক রিমন সরকার এবং সহকারী অধ্যাপক ফাহমিদা সুলতানার বিপক্ষে আমাকে উস্কে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে এমন অনৈতিক তথ্য সংগ্রহ করে দিতে বলেন।
উল্লেখ্য, উপাচার্য বরাবর লিখত অঅভিযোগ করার দুইদিন আগে ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সোস্যাল মিডিয়া ফেইসবুকে আট থেকে দশটি স্ক্রিনশট পোস্ট করেন। যেখানে দেখা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে মধ্য রাতে চা পানের দাওয়াতসহ একাধিক অনৈতিক প্রস্তাব দেন। এমনকি শেয়ার করেন অন্তরঙ্গ ভিডিও ক্লিপ লিংক। এরপর থেকেই সরব হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী। ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে অন্তত ত্রিশ জন শিক্ষার্থীকে দেয়া এমন অনৈতিক প্রস্তাবের ম্যাসেজ চেটিংয়ের স্ক্রিনশট। একপর্যায়ে আন্দোলন করে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। করেন গণ স্বাক্ষর কর্মসূচি। যেখানে ১৫০ জনের বেশি ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন।
প্রশাসনিক ভবন অবরোধের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, সাজন সাহা এবং বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান শুভ্র বিভাগের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করছে। একজন ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আর একজন তাকে আশ্রয় দিচ্ছে এবং অন্য শিক্ষকদের ফাঁসানোর জন্য উস্কে দিচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, যদি এঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়, তবে আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক চরম শাস্তি নিশ্চিত করবো। শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তানের মতো, তাদের শিক্ষার পরিবেশ আমরা নিশ্চিত করতে চাই।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available