‘আমেরিকা পার্টি’ নামে নতুন দল গঠনের ঘোষণা ইলন মাস্কের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। তার এই ঘোষণায় রিপাবলিকান শিবিরে ইতোমধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।৫ জুলাই শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে এই ঘোষণা দেন তিনি। খবর রয়টার্সের।মাস্ক বলেন, ‘আজ আমেরিকা পার্টির জন্ম হলো—আপনার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে।’তার এই ঘোষণার পরপরই মার্কিন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন উঠলেও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন কিংবা হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।কয়েকদিন আগে ইলন মাস্ক এক্সে একটি জরিপ চালান, যেখানে প্রায় ১২ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের দুই-তৃতীয়াংশই নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন বলে দাবি মাস্কের। এই সমর্থনের প্রেক্ষিতেই তিনি নিজের উদ্যোগের ঘোষণা দেন।তবে শুধু জরিপ নয়, ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক নীতির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাস্ক। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার আলোচিত ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নামে পরিচিত করছাড় ও ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব আইনে পরিণত করেন। এই বিলের কঠোর সমালোচনা করে মাস্ক বলেন, 'এই বিল যুক্তরাষ্ট্রকে দেউলিয়ার পথে ঠেলে দেবে।'উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন ইলন মাস্ক। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে সরকারি দক্ষতা বিভাগের প্রধান হিসেবে মাস্ককে দায়িত্ব দেন। কিন্তু সাম্প্রতিক নীতিগত মতবিরোধের কারণে সম্পর্ক চরমে পৌঁছে গেলে ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন মাস্ক।এরপর মাস্ক হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, তিনি এমন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করবেন, যারা করছাড় ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বৃদ্ধির পক্ষে থাকা আইনপ্রণেতাদের নির্বাচনে হারানোর জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে প্রস্তুত। তার এই ঘোষণার কিছুদিনের মধ্যেই ট্রাম্প পাল্টা হুমকি দেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে মাস্কের কোম্পানিগুলো যেসব ভর্তুকি পায়, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।মাস্কের নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখনো অনিশ্চিত হলেও যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান শিবিরে ইতোমধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দলটির অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ২০২৬ সালের কংগ্রেস নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে এই দল ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।এই দ্বন্দ্বের প্রতিক্রিয়া পড়েছে অর্থনীতিতেও। মাস্ক ও ট্রাম্পের বিরোধের জেরে টেসলার শেয়ারের দাম বড় ধরনের পতনের মুখে পড়েছে। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর টেসলার শেয়ারের মূল্য ৪৮৮ ডলারে পৌঁছালেও এপ্রিলের মধ্যে তা অর্ধেকে নেমে আসে। সর্বশেষ গত সপ্তাহে শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৩১৫ ডলারে।বিশ্লেষকেরা বলছেন, মাস্ক যত প্রভাবশালী ও ধনীই হোন না কেন, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের ১৬০ বছরের দুই দলীয় আধিপত্য ভাঙা সহজ হবে না। তবে তার এই উদ্যোগ মার্কিন রাজনীতিতে একটি নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিতে পারে।