নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকায় এবার পশু কোরবানির সংখ্যায় কমতি দেখা গেছে। গত বছরের তুলনায় এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) প্রায় অর্ধেক সংখ্যক পশু কোরবানি হয়েছে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে এবার পশু কোরবানি হয়েছে ৬ লাখ ৩২ হাজার ৮৩৪টি। এর মধ্যে উত্তর সিটিতে ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৮০টি এবং দক্ষিণ সিটিতে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭৫৪টি পশু কোরবানি হয়েছে। গত বছর দুই সিটি করপোরেশনে পশু কোরবানি হয় ১২ লাখ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় অর্ধেক পশু কোরবানি হয়েছে ঢাকায়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া জানান, সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে এবার মোট ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭৫৪টি পশু কোরবানি করা হয়েছে। এর মধ্যে ঈদের দিন শনিবার (৭ জুন) ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩১৭টি, রোববার (৮ জুন) ৩১ হাজার ৭৪৫টি এবং সোমবার (৯ জুন) ১ হাজার ৬৯২টি পশু কোরবানি হয়েছে।
তবে সিটি করপোরেশনটির ৭৫টি ওয়ার্ডে কী কী পশু কোরবানি হয়েছে এবং কোন পশু কতটি করে কোরবানি হয়েছে সেই তথ্য তিনি দিতে পারেননি।
কোরবানি হওয়া পশুর সংখ্যার বিষয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, উত্তর সিটিতে গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া কোরবানি হয়েছে। কোনো উট কোরবানি হয়নি। সব মিলিয়ে ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৮০টি পশু কোরবানি হয়েছে। এর মধ্যে গরু ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৭টি, ছাগল ১ লাখ ৫৪৬টি, মহিষ ১ হাজার ৭৬২টি এবং ভেড়া ৪ হাজার ৫৭টি কোরবানি হয়েছে।
গত বছরের তুলনায় এবার পশু কোরবানির সংখ্যা বেড়েছে, নাকি কমেছে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার ঢাকায় পশু কোরবানির সংখ্যা কমেছে। গত বছর উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় কত পশু কোরবানি হয়, তার আলাদা তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে দুই সিটি করপোরেশনে গত বছর ১২ লাখ পশু কোরবানি হয়।
এজাজ বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার পশু কোরবানি কম হলেও বর্জ্য উৎপন্ন হওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। আমরা প্রথম দিন অনুমান করেছিলাম এবার প্রায় ২০ হাজার টন ময়লা উৎপন্ন হবে। আজ (সোমবার) দুপুর ২টা পর্যন্ত আমরা ২০ হাজার ৮৮৯ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে ল্যান্ডফিলে ডাম্পিং করেছি।
তিনি বলেন, অফিসিয়ালি আমরা ভেবেছিলাম আজকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের সমাপ্তি ঘোষণা করব। কিন্তু আমরা সমাপ্তি ঘোষণা না করে এটা চলমান রাখব। কারণ, আমরা জনগণের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, যে পার্টিগুলোর মধ্যে মাংস বানানো হয়, সেগুলো অনেকেই রেখে দেন। এক-দুইদিন পর ডাস্টবিনে ফেলেন। সেক্ষত্রে আগামীকাল ও পরশুদিনও আমরা কোরবানির বর্জ্য বাড়ির সামনে পাবো বলে ধারণা করছি। সেক্ষেত্রে আমদের পরিচ্ছন্নতা কর্যক্রম চলমান থাকবে।
এদিকে ডিএসসিসি প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ড থেকে শতভাগ কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত মোট ৩১ হাজার ২২৬ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০ হাজার মেট্টিক টন। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বর্জ্য নির্ধারিত সময়ের আগেই অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী ইজরা দেওয়া ৮টি পশুর হাটের মধ্যে ৮টি হাটেরই বাঁশের খুটি, ভাসমান ও উড়ন্ত ময়লা অপসারণ করা হয়েছে। হাটের সামগ্রিক বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে, আশা করা যায় দ্রততম সময়ের মধ্যে শেষ হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে ১২ হাজার ৮৫৩ জন সম্পৃক্ত ছিলেন। বর্জ্য অপসারণে ছোট-বড় ২ হাজার ৭৯টি যানবাহন এবং ৩৪৪টি যান যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে।
ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, নগর ভবনে স্থাপিত কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে কোরবানির পশুর হাট ও কোরবানি করা পশুর বর্জ্য অপসারণ সরেজমিনে সচিত্র তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রতিটি হাটে আলাদা আলাদা নিয়ন্ত্রন কক্ষ স্থাপন করা হয়েছিল। এছাড়া ছাড়া প্রতিটি হাটে আলাদা আলাদা তদারকি কমিটি, অঞ্চলভিত্তিক তদারকি কমিটি এবং কেন্দ্রীয়ভাবে সার্বিক তদারকি কমিটির মাধ্যমে সরেজমিনে মনিটরিং করা হয়। হাটে আইনশৃঙ্খলা তদারকির জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় এবং ৮টি হাটে ৪০০ জন আনসার ভিডিপির সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available